পালিয়েছে হাজার হাজার মানুষ, ১০ সেনা সদস্য নিহত

সেনা ও প্রতিরোধ গোষ্ঠীর তুমুল লড়াই মিয়ানমারে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ বেড়েছে : জাতিসংঘ

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

০৯ আগস্ট ২০২৩, ০৮:৩৩ পিএম | আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২৩, ১২:০১ এএম

মিয়ানমারের সাগাইং-এ জান্তা ও সশস্ত্র ড্রাগন আর্মির মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে হাজার হাজার মানুষ। দুইপক্ষের লড়াইয়ে মিয়ানমারের ১০ সেনা সদস্য নিহত হয়েছে। এদিকে দেশটিকে নিয়ে জাতিসংঘের এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেখানকার সেনাবাহিনীর যুদ্ধাপরাধ আরো তীব্র হয়ে উঠেছে। মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতী মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, প্রতিরোধ বাহিনীটি সেনাসদস্যদের ওপর হামলা চালানোর পর সাগাইং অঞ্চলে পাল্টা আক্রমণ শুরু হয়। মিয়ানমার রয়্যাল ড্রাগন আর্মি (এমআরডিএ) হচ্ছে জান্তা প্রতিরোধ গোষ্ঠী। প্রতিবেদনে জানা গেছে, সোমবার সকালে কেয়া নিন গি ও কিয়াং থান গ্রামে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় দুই পক্ষ। এমআরডিএর দাবি, প্রায় আড়াই ঘণ্টার সংঘর্ষের অন্তত ১০ জন সেনা নিহত হয়েছে। যদিও ইরাবতী এই হতাহতের সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি। প্রতিরোধ বাহিনীটির মুখপাত্র কো নাউং ইয়ো ইরাবতীকে বলেছেন, লড়াই তীব্র হওয়ায় একটি যুদ্ধবিমান পাঠায় তারা। ঐ এলাকায় তিন দফা বোমাবর্ষণ হয়েছে। এতে বেসামরিক সদস্য বা বাহিনীর কেউ হতাহত হননি। বিমান হামলার আতঙ্কে সাতটি গ্রামের ৩ হাজার বাসিন্দা পালিয়েছে। সামরিক বাহিনী ২০২১ সালে অং সান সু চির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে। এরপর জরুরি অবস্থা জারি করে মিয়ানমার। এখনও তা চলমান। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ও সু চির মুক্তির দাবিতে জান্তা প্রতিরোধ গোষ্ঠী গড়ে উঠেছে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে। অপরদিকে, জাতিসংঘের তদন্তকারীরা বলেছেন, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী আরো ঘন ঘন এবং আরো নির্লজ্জভাবে সে দেশে যুদ্ধাপরাধ ঘটাচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে গণহত্যা এবং বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নির্বিচারে বোমাবর্ষণ। এক বার্ষিক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ তদন্তকারীরা মিয়ানমারের সামরিক জান্তার এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন যে তারা শুধুমাত্র সশস্ত্র বিরোধী দলগুলোকে লক্ষ্য করে অভিযান চালাচ্ছে। মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য বিচারে ব্যবহারের জন্য যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের প্রমাণ সংগ্রহ করতে জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কাউন্সিল ২০১৮ সালে আইআইএমএম নামের ওই স্বাধীন তদন্ত কমিটি তৈরি করেছিল। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুরো গ্রাম পুড়িয়ে ফেলা, বেসামরিক বাড়িঘরের ওপর ইচ্ছাকৃতভাবে বোমা হামলা এবং বেসামরিক ও আটক যোদ্ধাদের গণহত্যা চালানো হচ্ছে। জেনেভা থেকে বিবিসি সংবাদদাতা ইমোজেন ফুকস জানিয়েছেন, দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করতে সরকারের ব্যর্থতা প্রমাণ করছে যে মিয়ানমারের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ যুদ্ধাপরাধ চালিয়ে যেতে যায় বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এই পটভূমিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ চলছে এবং আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত ও আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলার জন্য ফাইল তৈরি হচ্ছে বলেও তদন্তকারীরা জানিয়েছেন। জাতিসংঘের দ্বারা ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও আইআইএমএমের তদন্তকারীরা কখনোই মিয়ানমার সফরের জন্য সে দেশের সরকারের অনুমতি পাননি। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এরপরও তারা ৭০০টি সূত্রের বক্তব্য জোগাড় করেছেন এবং সাক্ষীর বিবৃতি, নথি, ছবি, ভিডিও, ফরেনসিক প্রমাণ এবং স্যাটেলাইট ছবি ইত্যাদি মিলিয়ে ২ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন। তারা বিশেষভাবে উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের দায়দায়িত্ব প্রমাণ করে এমন সব ‘সংযোগ’ খুঁজছেন। বিবিসি।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

এশিয়ান যুব চ্যাম্পিয়নশিপে ইরানি ভারোত্তোলকের স্বর্ণ জয়
যুদ্ধের দামামা, তালেবানের পাল্টা হামলায় ১৯ পাকিস্তানি সেনা নিহত
ট্রাম্প-মাস্কের বন্ধুত্বে চিড়! অভিবাসন নীতি নিয়ে দ্বন্দ্ব তুঙ্গে
ভারতে বড়দিন উদযাপন করায় ২ নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে যৌন নিপীড়ন-মারধর
জুতার জন্য চাকরি হারিয়ে পেলেন ৪৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ!
আরও

আরও পড়ুন

টোল প্লাজার দুর্ঘটনা সন্তান বেঁচে নেই, এখনও জানেন না বাবা-মা

টোল প্লাজার দুর্ঘটনা সন্তান বেঁচে নেই, এখনও জানেন না বাবা-মা

নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতি স্থগিত

নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতি স্থগিত

শিল্পাচার্য জয়নাল আবদিনের ১১০ তম জন্মবার্ষিকী পালন

শিল্পাচার্য জয়নাল আবদিনের ১১০ তম জন্মবার্ষিকী পালন

এশিয়ান যুব চ্যাম্পিয়নশিপে ইরানি ভারোত্তোলকের স্বর্ণ জয়

এশিয়ান যুব চ্যাম্পিয়নশিপে ইরানি ভারোত্তোলকের স্বর্ণ জয়

রহমত ২৩১*, শাহিদি ১৪১*, বুলাওয়েতে ঐতিহাসিক দিন

রহমত ২৩১*, শাহিদি ১৪১*, বুলাওয়েতে ঐতিহাসিক দিন

এইচ এম কামরুজ্জামান খান সারা জীবন আধিপত্যবিরোধী রাজনীতি করে গেছেন

এইচ এম কামরুজ্জামান খান সারা জীবন আধিপত্যবিরোধী রাজনীতি করে গেছেন

বন্দরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া ধ্বংসের পায়তারা করছে আ.লীগের দোসররা

বন্দরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া ধ্বংসের পায়তারা করছে আ.লীগের দোসররা

ময়মনসিংহে আলোচিত ‘বালু খেকো’ আওয়ামী লীগ নেতা জামাল গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহে আলোচিত ‘বালু খেকো’ আওয়ামী লীগ নেতা জামাল গ্রেপ্তার

বিজয় দিবস রাগবিতে চ্যাম্পিয়ন সেনাবাহিনী

বিজয় দিবস রাগবিতে চ্যাম্পিয়ন সেনাবাহিনী

কোরআন শিক্ষার মাধ্যমেই সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন করা সম্ভব- মামুনুল হক

কোরআন শিক্ষার মাধ্যমেই সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন করা সম্ভব- মামুনুল হক

বাংলাদেশে বেড়েই চলেছে খাদ্যপণ্যের দাম : বিশ্বব্যাংক

বাংলাদেশে বেড়েই চলেছে খাদ্যপণ্যের দাম : বিশ্বব্যাংক

সংস্কার না করলে শহীদদের রক্তের সঙ্গে অন্যায় করা হবে : উপদেষ্টা সাখাওয়াত

সংস্কার না করলে শহীদদের রক্তের সঙ্গে অন্যায় করা হবে : উপদেষ্টা সাখাওয়াত

একইসময়ে রহস্যময় স্ট্যাটাস দিয়ে কী বুঝাতে চাইলেন আসিফ-হাসনাত!

একইসময়ে রহস্যময় স্ট্যাটাস দিয়ে কী বুঝাতে চাইলেন আসিফ-হাসনাত!

দূতাবাসগুলোতে যাদের আচরণ খারাপ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিন: আসিফ নজরুল

দূতাবাসগুলোতে যাদের আচরণ খারাপ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিন: আসিফ নজরুল

দেশের পরিস্থিতি ঠিক না হলে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

দেশের পরিস্থিতি ঠিক না হলে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

কিশোরগঞ্জে দুই নারীর রহস্যজনক মৃত্যু, গ্রেফতার-১

কিশোরগঞ্জে দুই নারীর রহস্যজনক মৃত্যু, গ্রেফতার-১

বড় চমক অ্যাপলের, জ্বর ও হার্ট অ্যাটাকের আগেই সতর্ক করবে ইয়ারবাডস

বড় চমক অ্যাপলের, জ্বর ও হার্ট অ্যাটাকের আগেই সতর্ক করবে ইয়ারবাডস

ফিরে দেখা ২০২৪: ফুটবলে ঘটনাবহুল বছর

ফিরে দেখা ২০২৪: ফুটবলে ঘটনাবহুল বছর

যুদ্ধের দামামা, তালেবানের পাল্টা হামলায় ১৯ পাকিস্তানি সেনা নিহত

যুদ্ধের দামামা, তালেবানের পাল্টা হামলায় ১৯ পাকিস্তানি সেনা নিহত

সচিবালয়ে অস্থায়ী প্রবেশ পাসের জন্য বিশেষ সেল গঠন

সচিবালয়ে অস্থায়ী প্রবেশ পাসের জন্য বিশেষ সেল গঠন