কিমের চারপাশে তিন স্তরের নিরাপত্তা দুর্গ

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক :

০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৫ এএম

কিম জং ইল ১৯৯৪ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৭ বছর উত্তর কোরিয়া শাসন করেন। তার মৃত্যুর পর ছেলে কিম জং উন উত্তরাধিকার সূত্রে দেশের শাসন ক্ষমতা হাতে পান। এরপর গত এক যুগ ধরে কঠোর হাতে দেশ শাসন করছেন তিনি। মূলত জনগণের মানবাধিকার লংঘন, বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ, সীমাহীন নির্যাতন ও নিপীড়নের কারণে সারাবিশ্বে স্বৈরশাসক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন কিম জং উন। কিম জং উন সবসময় তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে থাকেন। প্রথমটি হলো বাইরের স্তর। এই নিরাপত্তা সৈন্যদের নিয়ে গড়ে তোলা হয়। এই সেনারা প্রায়শই যুদ্ধের পোশাকে থাকেন। কারও কথা শোনেন না, না আছে কারও পরোয়া; নিজের যা খুশি বলতে গেলে তাই করেন কিম। এভাবে বেপরোয়াভাবে দেশ শাসন করতে গিয়ে বিশ্বজুড়ে শত্রু তৈরি করেছেন তিনি। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এখন তার ‘জানের শত্রু’। এসব শত্রুর হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতেই নিজের চারপাশে নিরাপত্তা দুর্গ তৈরি করেছেন উত্তর কোরিয়ার এই সর্বোচ্চ নেতা। গত জুলাই মাসের শেষদিকে কিম জং উন তার দেশে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং চীনা পলিটব্যুরোর সদস্য লি হংঝংকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। পিয়ংইংয়ে তখন বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়েছিল। এই কুচকাওয়াজে উত্তর কোরিয়ার শক্তিশালী মিসাইলগুলো প্রদর্শন করা হয়। এ ধরনের অনুষ্ঠানে সাধারণত আন্তর্জাতিক মনোযোগ থাকে কুচকাওয়াজের দিকে। কী ধরনের কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়েছে, সেখানে কী ধরনের সমরাস্ত্রের প্রদর্শনী হচ্ছে এবং কারা সেখানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সেসবেই নজর থাকে সবার। এই বিষয়গুলো মূলত আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। তবে এসব এড়িয়ে একজন ফটোগ্রাফার বিশেষভাবে অন্য জায়গাতে নজর দিয়েছেন। কিম জং উনের দেহরক্ষী কারা এবং কীভাবে তারা কিমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন- সেটাই ছিল তার ফটোগ্রাফির বিষয়। কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের একটি ছবিতে উত্তর কোরিয়ার এক জেনারেলকে দেখা যায়। আমেরিকান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার যেসব বিশেষজ্ঞ উত্তর কোরিয়ার বিষয়ে খবর রাখেন তারা জানিয়েছেন, এই ব্যক্তি সম্ভবত জেনারেল কিম চোল গিউ। উত্তর কোরিয়ার গোয়েন্দা বিভাগের সাবেক এই জেনারেলকে মার্কিন এক বিশ্লেষক ‘গ্র্যান্পা’ বা ‘দাদা’ নাম দিয়েছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি ‘গার্ড ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট অ্যাফেয়ার্স কমিশনের’ কমান্ডার। উত্তর কোরিয়ার নেতাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব সাধারণত তার হাতেই থাকে। কিম জং উনের বাবা কিম জং ইলের সময় থেকেই তিনি এই দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কিম জং ইলের শাসনের শেষ সময় থেকে শুরু করে কিম জং উনের ক্ষমতাগ্রহণ; এখন পর্যন্ত উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়ায় প্রচারিত বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় দেশটির গোয়েন্দা বিভাগ আসলে কীভাবে কাজ করে। যেভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা তারা পেয়ে থাকেন তা থেকে এটা বোঝা যায় যে, দেশটির নেতারা নিজেদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক নিরাপত্তা নিয়ে কী ভাবেন। সবশেষে রয়েছে প্রথম স্তরের নিরাপত্তা। ব্যক্তিগত দেহরক্ষীদের দিয়ে এই স্তরের নিরাপত্তা গড়ে তোলা হয়েছে। এই দলটি তুলনামূলক ছোট। তারাও বেসামরিক পোশাক, ক্যাপ পরে থাকে, সঙ্গে থাকে পিস্তল। এই দেহরক্ষীরা সবসময় কিম জং উনের কাছাকাছি থাকেন। এশিয়া টাইমস।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

কুমিল্লায় ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড

কুমিল্লায় ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড

বন্ধুদের মিলনমেলায় আনন্দ উচ্ছ্বাসে মেতেছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল

বন্ধুদের মিলনমেলায় আনন্দ উচ্ছ্বাসে মেতেছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল

সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই

সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই

কালীগঞ্জে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রশাসনের কম্বল  বিতরণ

কালীগঞ্জে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রশাসনের কম্বল বিতরণ

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে কোন সংস্কার কাজে আসবে না :  বাম গণতান্ত্রিক জোট

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে কোন সংস্কার কাজে আসবে না : বাম গণতান্ত্রিক জোট

সিংগাইরে "তারুণ্যের ভাবনা,আগামীর বাংলাদেশ"শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

সিংগাইরে "তারুণ্যের ভাবনা,আগামীর বাংলাদেশ"শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

ফুলপুরে অবৈধ ইট ভাটায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, ৯ লাখ টাকা জরিমানা

ফুলপুরে অবৈধ ইট ভাটায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, ৯ লাখ টাকা জরিমানা

লস অ্যাঞ্জেলেসের মতো ‘পাপের নগরী’ ধ্বংসে যে সতর্কবার্তা রয়েছে ইসলামে

লস অ্যাঞ্জেলেসের মতো ‘পাপের নগরী’ ধ্বংসে যে সতর্কবার্তা রয়েছে ইসলামে

তরুণদের মাঝে সাড়া জাগিয়েছে এবারের বিপিএল

তরুণদের মাঝে সাড়া জাগিয়েছে এবারের বিপিএল

বাংলাদেশের সঙ্গে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা জোট গড়তে চায় পাকিস্তান

বাংলাদেশের সঙ্গে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা জোট গড়তে চায় পাকিস্তান

মির্জাপুরে ৭ দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের লিফলেট বিতরণ

মির্জাপুরে ৭ দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের লিফলেট বিতরণ

সংস্কার কমিশনগুলোর প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জনআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন হবে: আসিফ মাহমুদ

সংস্কার কমিশনগুলোর প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জনআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন হবে: আসিফ মাহমুদ

জাকারবার্গের ‘অনিচ্ছাকৃত’ মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইলো মেটা ইন্ডিয়া

জাকারবার্গের ‘অনিচ্ছাকৃত’ মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইলো মেটা ইন্ডিয়া

শেরপুরে ফুটপাত কাম ড্রেন, ইউনিক সোল্ডার ও সড়কবাতি কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

শেরপুরে ফুটপাত কাম ড্রেন, ইউনিক সোল্ডার ও সড়কবাতি কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

মানববন্ধন থেকে অতিরিক্ত ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি খেলাফত আন্দোলনের

মানববন্ধন থেকে অতিরিক্ত ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি খেলাফত আন্দোলনের

মাদারীপুরে আইনজীবীদের শীতকালীন  ক্রিকেট খেলা

মাদারীপুরে আইনজীবীদের শীতকালীন ক্রিকেট খেলা

কমলনগরে হার্ভেস্টার মেশিনের ধাক্কায় শিশু নিহত

কমলনগরে হার্ভেস্টার মেশিনের ধাক্কায় শিশু নিহত

পদ ফিরে পেলেন মির্জাপুর উপজেলা কৃষক দল আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর মৃধা

পদ ফিরে পেলেন মির্জাপুর উপজেলা কৃষক দল আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর মৃধা

রেস্তোরাঁর নামেও এস আলম ঋণ নেয় ২৩৪ কোটি টাকা

রেস্তোরাঁর নামেও এস আলম ঋণ নেয় ২৩৪ কোটি টাকা

ঝিনাইদহে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুই এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত

ঝিনাইদহে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুই এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত