যুক্তরাষ্ট্রে আগস্টে বিপুল পরিমাণে নতুন চাকরির সুযোগ (জব ওপেনিং) তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন খাতের কোম্পানিগুলোয় কর্মতৎপরতা গতিশীল হওয়ায় কর্মী চাহিদা বেড়েছে লক্ষণীয় মাত্রায়। এমন বাস্তবতায় ওই মাসে দেশটিতে নতুন চাকরির সুযোগ ছিল দুই বছরের সর্বোচ্চে। মার্কিন শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত জব ওপেনিং অ্যান্ড লেবার টার্নওভারের (জেওএলটিএস) প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। শ্রম মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অনুসারে, আগস্টে জব ওপেনিং ছিল ৯৬ লাখ ১০ হাজার। জুলাইয়ের তুলনায় সুযোগ বেড়েছে ৬ লাখ ৯০ হাজার। এর মধ্যে পেশাগত ও ব্যবসায় পরিষেবা খাতে ৫ লাখ ৯ হাজার, ফাইন্যান্স ও ইন্সুরেন্স খাতে ৯৬ হাজার, সরকারি শিক্ষা খাতে ৭৬ হাজার ও ফেডারেল সরকারে ৩১ হাজার বেড়েছে জব ওপেনিং। তবে আগস্টের জন্য রয়টার্সের ঘোষিত পূর্বাভাস ছিল ৮৮ লাখ। আগস্টে গড়ে একজন বেকারের বিপরীতে ১ দশমিক ৫১টি নতুন চাকরির সুযোগ ছিল। এ হার জুলাইয়ের তুলনায় সামান্য কম। সে মাসে গড়ে একজন বেকারের বিপরীতে চাকরির সুযোগ ছিল ১ দশমিক ৫৩টি। তবে আগস্টে বেকারত্বের হারও বেড়েছে। সার্বিকভাবে চলতি বছরের আগস্টে নিয়োগ ছিল ৫৯ লাখ। বিপরীতে পদ শূন্য হওয়ার পরিমাণ ছিল ৫৭ লাখ। পদ শূন্য হওয়া বলতে প্রতিষ্ঠানের করা ছাঁটাই ও কর্মীর কর্মসংস্থান ত্যাগের সিদ্ধান্ত উভয়কেই বিবেচনা করা হয়েছে। মাসজুড়ে খাদ্য ও আবাসন খাতে পদ শূন্য হওয়ার পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৫ হাজার। তবে তথ্য খাতে পদ শূন্য হওয়ার পরিমাণ কমেছে। আগস্টে ৩৬ লাখ মানুষ চাকরি ত্যাগ করেছে। খাদ্য ও আবাসন খাতে ত্যাগের পরিমাণ বেড়েছে উল্লেখযোগ্য মাত্রায়। নতুন চাকরির সুযোগ বৃদ্ধির পেছনে অন্যতম অনুঘটক ছিল ছোট ব্যবসার সম্প্রসারণ। পাশাপাশি মাঝারি মানের ব্যবসাও বেড়েছে। তবে বড় করপোরেশনের কার্যক্রম আগের মাসগুলোর তুলনায় খুব একটা বাড়েনি। যুক্তরাষ্ট্রে মোট জব ওপেনিংয়ের ১০ শতাংশের অবদান ব্যবসায়িক পরিষেবা খাতের। খাতটিতে আগস্টে জব ওপেনিং ছিল ৫ লাখ ৯ হাজার। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য অঞ্চলে জব ওপেনিং ছিল তুলনামূলক কম। বিপরীতে উত্তর ও পশ্চিম দিকের অঙ্গরাজ্যে বেশি। আগস্টে নতুন চাকরির সুযোগ ছিল তার আগের মাসের চেয়েও বেশি। জুলাইয়ে নতুন চাকরির সুযোগ বাড়ার হার ছিল ৫ দশমিক ৪ শতাংশ, আগস্টে তা বেড়ে ৫ দশমিক ৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। জেওএলটিএসের প্রতিবেদন অনুসারে, আগস্টে ছাঁটাইয়ের পরিমাণ কমেছে ১ দশমিক ১ শতাংশ। শিক্ষা বাদে অন্যান্য খাতে ছাঁটাইয়ের হার কমলেও শিক্ষা খাতে আগের তুলনায় বেড়েছে ছাঁটাই। সার্বিকভাবে ছাঁটাইয়ের সংখ্যা এক হাজার কমেছে। যেহেতু শ্রমবাজারে কর্মসংস্থান সৃষ্টির ঊর্ধ্বমুখী গতি মূল্যস্ফীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ফলে বিদ্যমান পরিস্থিতি ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক সুদহার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ফেডের পরবর্তী অধিবেশন ৩১ অক্টোবর-১ নভেম্বর। শ্রমবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পরবর্তী সভায় সুদহার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে। সেপ্টেম্বরের সভায় ফেড সুদহার স্থির রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যদিও বছরের শেষ দিকে আরেক দফা বাড়ানো ইঙ্গিত করা হয়েছে। জেওএলটিএস।