ফিলিস্তিনের প্রতি ইসলামী সরকার ও জাতিসমূহের যুগপৎ সমর্থন

স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নের আহ্বান জিসিসি ও আসিয়ানের

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

২২ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৬ এএম

গাজায় যুদ্ধরত সব পক্ষকে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোর সংগঠন জিসিসি এবং আসিয়ান। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনের গাজায় বেসামরিক জনতার বিরুদ্ধে ভয়াবহ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এ সংগঠন দুটির নেতারা। সউদী আরবে এক সামিটে অংশ নেন নেতারা। এতে তারা অধিক পরিমাণ মানবিক ত্রাণ পৌঁছে দেয়া, রিলিফ সরবরাহ ও অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় সেবা ও সার্ভিস পৌঁছে দেয়ার আহ্বান জানান। বিবৃতিতে তারা সব পক্ষের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান বেসামরিক লোকজনকে রক্ষা করার। তাদেরকে যেন টার্গেট করা থেকে বিরত থাকা হয়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক আইন মেনে চলার অনুরোধ করা হয়। বিশেষ করে যুদ্ধকালীন সময়ে বেসামরিক লোকজনকে রক্ষা বিষয়ক জেনেভা কনভেনশনের নীতি ও বিধিগুলো মেনে চলার আহ্বান জানান। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আরব নিউজ। নেতারা এক বিবৃতিতে অবিলম্বে সব জিম্মি ও বেসামরিক বন্দি, বিশেষ করে নারী, শিশু, অসুস্থ এবং প্রবীণদের নিঃশর্ত ও অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানান। যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য কাজ করতে সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা। মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া পুনরুজ্জীবিত করার প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেন আঞ্চলিক এই দুই সংগঠনের নেতারা। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ইসরাইল ও তার প্রতিবেশীদের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি সমাধানের আহ্বান জানান তারা। উভয় পক্ষের মধ্যে আরও অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করা এবং সহযোগিতাকে বৃদ্ধির জন্য সামিটে অংশগ্রহণকারী নেতারা ‘ফ্রেমওয়ার্ক অব কো-অপারেশন ২০২৪-২০২৮’-এর বিষয়ে একমত হন। সামিটের উদ্বোধনী ভাষণ দেন সউদী আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। এ সময় তিনি ফিলিস্তিনি সমস্যার সমাধানে পৌঁছার জন্য সউদী আরবের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। সব ক্ষেত্রে আসিয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করতে চায় বলে জানান ক্রাউন প্রিন্স। তিনি আরও বলেন, গাজায় সহিংসতা বৃদ্ধিতে তিনি বেদনাহত। সেখানে এই সহিংসতার জন্য মূল্য দিতে হচ্ছে নিরীহ মানুষকে। সামিটে বক্তব্য রাখেন ১০টি দেশের সংগঠন আসিয়ানের বর্তমান নেতৃত্ব পাওয়া ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো। উদ্বোধনী বিবৃতিতে তিনি আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে গাজায় যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানান। অপর এক খবরে বলা হয়, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরাইলের জঘন্য অপরাধের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাপ্তি হলো ফিলিস্তিনের সমর্থনে মুসলিম বিশ্বের সরকার ও দেশগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গড়ে ওঠা। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার জনগণের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞ শুরু হওয়ার পর দুই সপ্তাহ অতিবাহিত হয়েছে। গাজার বিরুদ্ধে ইসরাইলি ভয়াবহ হামলায় এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৮শ’রও বেশি ফিলিস্তিনী শহীদ হয়েছে এবং প্রায় ১২ হাজার মানুষ আহত হয়েছে। কেবল গাজার আল-আহলি আরব হাসপাতালেই তাদের হামলায় কমপক্ষে ৫শ জন শহীদ হয়েছে। হাসপাতালে হামলা যুদ্ধাপরাধের সুস্পষ্ট উদাহরণ। ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞের এখন পর্যন্ত বিভিন্ন রকমের পরিণতি হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিণতিগুলির একটি হলো ফিলিস্তিনের সমর্থনে এবং দখলদার ইসরাইলি অপরাধের নিন্দায় মুসলিম জাতি ও সরকারগুলির মধ্যে ঐকমত্য গঠিত হয়েছে। মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে সেদেশের জনগণ বিশেষ করে গাজার জনগণের প্রতি তাদের সমর্থন ঘোষণা করেছে। জর্ডানের রাজধানী আম্মানে সেদেশের জনগণ ইহুদিবাদী দূতাবাসে আক্রমণ করেছে। ইরাক ও লেবাননসহ বহু মুসলিম দেশের মানুষ আমেরিকার দূতাবাসের সামনে জড়ো হয়ে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এবং আমেরিকাকে ইসরাইলি অপরাধের অংশীদার করে তাদের নিন্দা জানিয়েছে। সরকারী পর্যায়েও অধিকাংশ মুসলিম দেশের নেতারা ইহুদিবাদী ইসরাইলের অপরাধযজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা ওআইসি সউদী আরবের জেদ্দায় জরুরি বৈঠকে বসেছে। ওই বৈঠকের চূড়ান্ত বিবৃতিতে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। রয়টার্স, বিবিসি, ইরনা।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

কমলনগরে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ আহত ৩

কমলনগরে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ আহত ৩

কুড়িগ্রামে জেলা বিএনপির ১২টি ইউনিট বিলুপ্ত ঘোষণা

কুড়িগ্রামে জেলা বিএনপির ১২টি ইউনিট বিলুপ্ত ঘোষণা

তারাকান্দায় বাসের ধাক্কায় আহত-৪

তারাকান্দায় বাসের ধাক্কায় আহত-৪

কুয়েটে অনুষ্ঠিত হলো ন্যাশনাল আইডিয়া কেস কম্পিটিশন ‘বিজব্যাটেল’

কুয়েটে অনুষ্ঠিত হলো ন্যাশনাল আইডিয়া কেস কম্পিটিশন ‘বিজব্যাটেল’

ভারতের ড্রেসিংরুম চ্যাপেল যুগের মতো বিধ্বস্ত: হরভজন

ভারতের ড্রেসিংরুম চ্যাপেল যুগের মতো বিধ্বস্ত: হরভজন

জুনে জাফর-২ ও পায়া উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করবে ইরান

জুনে জাফর-২ ও পায়া উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করবে ইরান

আন্দোলনের ইমেজ বিশ্বকে জানাতে হবে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

আন্দোলনের ইমেজ বিশ্বকে জানাতে হবে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

সাতক্ষীরা কালিগঞ্জে বাঁশ ও বেত শিল্প প্রায় বিলুপ্ত

সাতক্ষীরা কালিগঞ্জে বাঁশ ও বেত শিল্প প্রায় বিলুপ্ত

দুই যাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ৪ সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে- গ্রেপ্তার- ১

দুই যাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ৪ সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে- গ্রেপ্তার- ১

হবিগঞ্জে সাড়ে ৭ কোটি টাকার মাদকদ্রব্য ধ্বংস করেছে বিজিবি

হবিগঞ্জে সাড়ে ৭ কোটি টাকার মাদকদ্রব্য ধ্বংস করেছে বিজিবি

ছাত্রদলের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি শুরু

ছাত্রদলের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি শুরু

শুরু হয়েছে 'শার্ক ট্যাঙ্ক বাংলাদেশ সিজন–২ এর রেজিষ্ট্রেশন; কি থাকবে এবারের পর্বে?

শুরু হয়েছে 'শার্ক ট্যাঙ্ক বাংলাদেশ সিজন–২ এর রেজিষ্ট্রেশন; কি থাকবে এবারের পর্বে?

২০বছরের অধিক সাজাখাটা বন্দিদের অবিলম্বে মুক্তি দিন প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ

২০বছরের অধিক সাজাখাটা বন্দিদের অবিলম্বে মুক্তি দিন প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ

বাংলাদেশে ঢুকে গাছের ডাল কাটল বিএসএফ, সীমান্তে উত্তেজনা

বাংলাদেশে ঢুকে গাছের ডাল কাটল বিএসএফ, সীমান্তে উত্তেজনা

নদীতে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করায় ৬ জন গ্রেফতার, ড্রেজার জব্দ

নদীতে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করায় ৬ জন গ্রেফতার, ড্রেজার জব্দ

ইরানের সুপ্রিম কোর্টের সামনে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত দুই বিচারক

ইরানের সুপ্রিম কোর্টের সামনে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত দুই বিচারক

কলাপাড়ায় প্রধান উপদেস্টার কায্যালয়ের সচিব, প্রকল্প পরিচালকের গাড়ী বহর আটকে দিল বিক্ষোভকারীরা

কলাপাড়ায় প্রধান উপদেস্টার কায্যালয়ের সচিব, প্রকল্প পরিচালকের গাড়ী বহর আটকে দিল বিক্ষোভকারীরা

সাজিদ-নোমানের ঘূর্ণিতে ১৩৭ রানেই শেষ উইন্ডিজ

সাজিদ-নোমানের ঘূর্ণিতে ১৩৭ রানেই শেষ উইন্ডিজ

কেন মেলোনির সামনে হাঁটু গেড়ে বসলেন আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী?

কেন মেলোনির সামনে হাঁটু গেড়ে বসলেন আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী?

ট্রাম্পের অভিষেকে যোগ দিচ্ছেন মুকেশ ও নীতা আম্বানি

ট্রাম্পের অভিষেকে যোগ দিচ্ছেন মুকেশ ও নীতা আম্বানি