সোনা-দানা টাকা-পয়সা লুট করছে ইসরাইলি বাহিনী
০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম
গাজাবাসীর সোনাদানা, টাকা পয়সা লুট করছে ইসরাইলের সেনারা। গাজায় ফিলিস্তিনিদের দেওয়া সাক্ষ্য অনুযায়ী, গত ৯২ দিনে ইসরাইলি সেনাবাহিনী আনুমানিক ৯০ মিলিয়ন শেকেল (২ কোটি ৪৫ লাখ ডলার) টাকা, স্বর্ণ ও শিল্পসামগ্রী চুরি করেছে। গাজা মিডিয়া অফিসের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি। ‘ইসরাইল সেনারা বিভিন্ন উপায়ে এই চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে’ বলে জানিয়েছে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস। এরমধ্যে একটি কৌশল হলো উত্তর থেকে দক্ষিণ গাজা যাওয়ার সময় সালাহ আল-দিন স্ট্রিটের মতো চেকপয়েন্টগুলোতে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের কাছে থাকা টাকা, স্বর্ণ ও অন্যান্য মূল্যবান শিল্পসামগ্রীসহ ব্যাগ চুরি। আরেকটি হলো যেসব অঞ্চল থেকে ফিলিস্তিনিরা পালিয়েছেন তাদের বাড়িঘর লুট। সম্প্রতি ইসরাইলের সেনাবাহিনী এমন লুটপাটের কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছিল। ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম ইয়েদিওথ আহরোনোথ সেনাবাহিনীর এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে ‘গাজাবাসীদের অর্থের পদ্ধতিগত চুরি’ হিসাবে বর্ণনা করেছে। গাজায় রোববারও হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যুগান্তরকে জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ফিলিস্তিনিদের নিহতের সংখ্যা ২২ হাজার ৮৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে। আর আহত হয়েছেন ৫৮ হাজার ৪১৬ জন। এরমধ্যে শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি হামলায় ১১৩ জন নিহত ও ২৫০ জন আহত হয়েছেন। গাজা উত্তরাঞ্চলে হামাসের প্রধান কমান্ড সেন্টার ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি জানিয়েছে ইসরাইল। বিবিসির রোববারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবার তেল আবিবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি। সংবাদ সম্মেলনে হাগারি আরও বলেন, ‘ইসরাইলি স্থল ও বিমান বাহিনীর গত তিন মাসের অভিযানে উত্তর গাজায় হামাসের মূল কমান্ড সেন্টার ধ্বংসের পাশাপাশি নিহত হয়েছেন এই সংগঠনের প্রায় ৮ হাজার যোদ্ধা।’ আর নিহতদের মধ্যে কমান্ডার ও সাধারণ যোদ্ধা উভয়ই রয়েছেন বলেও জানান তিনি। তবে হাগারির উল্লিখিত এই সংখ্যা স্বাধীনভাবে যাচাই করার সুযোগ পায়নি বিবিসি। গাজাবাসীকে শাস্তি দিতে ‘মৃত্যুর চেয়ে যন্ত্রণাদায়ক উপায়’ খুঁজে বের করতে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির ঐতিহ্য মন্ত্রী অ্যামিচাই এলিয়াহু। শুক্রবার ইসরাইলের ১০৩ এফএম রেডিওকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ আহ্বান জানান তিনি। অপর এক খবরে বলা হয়, গাজার বিরুদ্ধে ইসরাইলি যুদ্ধ চতুর্থ মাসে প্রবেশ করেছে। এরই মধ্যে ইসরাইলের অর্থনৈতিক ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৯ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলারে। ইসরাইলি দৈনিক ইয়েদিয়ুৎ অহরোনুৎ এক প্রতিবেদনে এই সত্য স্বীকার করে বলেছে: এতো বিশাল ব্যয়ের পরও ইসরাইল গাজা যুদ্ধে তার কোনো লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। চলমান গাজা যুদ্ধে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইহুদিবাদীদের নৃশংস অপরাধ তীব্রতর হয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের প্রায় সকল দেশে ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ ব্যাপক বেড়েছে। অপরদিকে ইসরাইলি পণ্য বর্জন করার আন্দোলনও তীব্রতর হয়েছে। ইসরাইলের সহযোগী সংস্থাগুলোর পাশাপাশি ইহুদিবাদী ইসরাইলকে যারা সমর্থন করে সেইসব কোম্পানির পণ্যও বর্জন করার হিড়িক পড়ে গেছে। ইসরাইলি অবৈধ সরকারের বিরোধী দলীয় প্রধান ইয়ায়ির লাপিদ সম্প্রতি বর্তমান যুদ্ধ মন্ত্রিসভার মধ্যকার দ্বন্দ্ব সম্পর্কে কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দ্বন্দ্বপূর্ণ মন্ত্রিসভা ইসরাইলি স্বার্থের অনুকূলে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাখে না। অবৈধ সরকারের ক্যাবিনেট বৈঠকে উত্তেজনা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা মন্ত্রী বিন গাভির এবং ইসরাইলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি এবং বর্তমান যুদ্ধ মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গান্তজের মধ্যে প্রচণ্ড রকমের বাকযুদ্ধের ঘটনাও ঘটেছে। ওই ঘটনা তুলে ধরে ইসরাইলি পত্রিকাটির দীর্ঘ এক প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে : ব্যয়বহুল গাজা যুদ্ধে ইসরাইল এখনও কোনো লক্ষ্যই অর্জন করতে পারে নি। তিন মাস পরের যুদ্ধচিত্র তুলে ধরেছে অহরোনুৎ আরও লিখেছে: গাজায় স্থল অভিযান অক্টোবর মাসের শেষ দিকে শুরু হয়েছে। আজও সেখানে ইসরাইলের কোনো লক্ষ্য অর্জনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। না সেখানে হামাসের সামরিক শক্তি খর্ব করতে পেরেছে, না পেরেছে ইসরাইলি বন্দিদের ফিরিয়ে আনতে। হামাসের পদস্থ নেতাদেরও হত্যা করার লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছিল ইসরাইলি সেনাবাহিনী। কিন্তু মোহাম্মাদ দায়িফ, মারওয়ান ঈসা, মুহাম্মাদ এবং ইয়াহিয়া সানওয়ারের মতো হামাসের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা এখনও জীবিত। এমনকি তারা ইসরাইল বিরোধী যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। ইয়েদিয়ুৎ অহরোনুৎ স্বীকার করেছে যে পশ্চিমাদের সহায়তায় গাজায় নির্বিচার গণহত্যা শুরু করেছে ইসরাইল। তবে যুদ্ধে ব্যর্থতার কারণে ইসরাইলের প্রতি এখন পশ্চিমা সমর্থন কমছে। আনাদোলু, বিবিসি, ইরনা।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
পার্বত্য এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করা হয়নি: নাহিদ
যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তার রহস্যজনক মৃত্যু
সুনামগঞ্জে ২২ লাখ টাকার ইলিশ জব্দ
ছাত্রজনতা হত্যার নির্দেশদাতা বিতর্কিত পুলিশ সদস্যরা এখনো লাপাত্তা
রোগীদের সুস্থ করে তুলতে ‘রোবটের মতো’ কাজ করেছে লেবাননের যে চিকিৎসক
মোদীর সফরের আগে ভারত সরকারের নামে যুক্তরাষ্ট্রে মামলা পান্নুনের
মিয়ানমার থেকে মণিপুরে অনুপ্রবেশ ৯০০ জঙ্গির, দাবি ভারতের
৪৩ দিন পর কাজে ফিরলেন আর জি করের জুনিয়র চিকিৎসকরা
গিল-পান্তের ব্যাটে পিষ্ট বাংলাদেশ
ফের মৃত্যুর খেলা! ‘স্কুইড গেম সিজন ২’র টিজারে বিপদের বার্তা
অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি কচুয়ায় যুবলীগ নেতার ৪টি দোকান পুড়েছে দুর্বৃত্তরা
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বিএনপির দু’পক্ষে সংঘর্ষে আহত অর্ধশতাধিক
লেবাননের বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪
রাঙামাটিতে সেনা, বিজিবি ও পুলিশের টহল, পরিস্থিতি শান্ত
পরমাণু দূষিত পানি নিয়ে চীন ও জাপানের কিছু ঐকমত্য
ঝিকরগাছায় বিএনপি নেতা খায়রুজ্জামান মিনুসহ ২১ নেতাকর্মী বহিষ্কার
হিজবুল্লাহর ভয়ে ইসরাইলিদের আশ্রয়কেন্দ্রের কাছে থাকার নির্দেশ
ভারতের ঘুম হারাম করে পাকিস্তানকে ভয়ঙ্কর হেলিকপ্টার দিচ্ছে চীন
পাকিস্তানে সেনানিবাসে আত্মঘাতি হামলা, সেনাসহ নিহত ১৮
জুলাই বিপ্লবে শহিদের সংখ্যা ১৪২৩, আহত ২২ হাজার