ঢাকা   শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৬ আশ্বিন ১৪৩১

সরকারি ঋণের ঊর্ধ্বমুখিতায় ঝুঁকিতে বৈশ্বিক আর্থিক খাত

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

১১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৬ এএম

: বিভিন্ন দেশে নির্বাচনের আগে সরকারগুলো যেভাবে অতিরিক্ত মাত্রায় ঋণ গ্রহণ করছে তা বৈশ্বিক আর্থিক খাতকে মারাত্মক ঝুঁকিতে ফেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সের প্রতিবেদন অনুসারে, উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোয় এখন সরকারি বন্ডের বিক্রি বেড়েছে। গত বছর সরকারগুলোর ঋণ জিডিপির ৬৮ দশমিক ২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা সর্বকালের সর্বোচ্চ। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সরকারের ঋণ নেয়ার পরিমাণ আগামী বছর সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছতে যাচ্ছে। কভিড-১৯ মহামারীর আগ মুহূর্তটি বাদ দিলে এ ঋণ গ্রহণ নতুন রেকর্ড করতে যাচ্ছে। ব্রিটিশ-আমেরিকান গ্লোবাল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ জেনাস হেন্ডারসনের ফিক্সড ইনকাম বিভাগের গ্লোবাল হেড জিম সিলিনস্কি জানিয়েছেন, দেশে দেশে সরকারের আয়-ব্যয়ের ঘাটতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার অন্য কোনো বিকল্প কৌশল নেই। বিষয়টি আগামী ৬-১২ মাসে বাজারে মারাত্মক উদ্বেগ তৈরি করবে। তখনই বোঝা যাবে বিষয়টি কতটা গুরুত্বের দাবি রাখে। মার্কিন বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান অ্যাপোলো গ্লোবাল ম্যানেজমেন্টের তথ্যানুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট চলতি বছর ২-৩০ বছর মেয়াদি ৪ লাখ কোটি ডলার মূল্যের বন্ড ইস্যু করবে, যা গত বছর ছিল ৩ লাখ কোটি ডলার এবং ২০১৮ সালে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি ডলার। নিট ইস্যু চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ১২ মাস পর ১ লাখ ৬ হাজার কোটি ডলার হবে, যা বার্ষিক হিসাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড। কানাডিয়ান ব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৪-২৫ সালে নিট ইস্যু মহামারী সময়ের পরিসংখ্যান ছাড়িয়ে যাবে। বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞরা জানান, ঋণগ্রহণের এ প্রবণতা সম্ভবত সুদহারের ভবিষ্যৎ গতিপথের ওপর আরো মনোযোগ দিতে বাধ্য করবে, যা বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করতে পারে। পিজিআইএম ফিক্সড ইনকামের গ্লোবাল বন্ড প্রধান রবার্ট টিপ বলেছেন, ‘গত শতাব্দীর সঙ্গে তুলনা করলে আমরা বর্তমানে সরকারি ঋণের অথই সমুদ্রে ভাসছি। ঠিক এ মুহূর্তে বিদ্যমান পরিস্থিতি থেকে প্রত্যেকের বের হয়ে আসা উচিত। যুক্তরাষ্ট্র অথবা ইতালি সর্বত্র বিনিয়োগকারী এবং রেটিং সংস্থাগুলো বিষয়টি নিয়ে আবার চিন্তাভাবনা শুরু করেছে।’ যুক্তরাজ্যে চলতি বছর নির্বাচন হওয়ার কথা। একই সঙ্গে দেশটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঋণ বিক্রয়ের পথে রয়েছে। ঋণ বিক্রয় করার যে পরিস্থিতিতে আমরা বাস করছি তা নিয়ে সতর্ক করেছেন যুক্তরাজ্যের ঋণ ব্যবস্থাপনা অফিসের প্রধান স্যার রবার্ট স্টিম্যান। তিনি বলেছেন, ‘নীতিনির্ধারকদের মার্কেটের বাস্তবতা মেনে চলা উচিত।’ যুক্তরাজ্যের বাণিজ্যিক ব্যাংক ন্যাটওয়েস্টের প্রক্ষেপণ অনুসারে, ইউরোজোনের বৃহৎ দেশগুলো চলতি বছর ১ লাখ ২ হাজার কোটি ইউরো মূল্যের ঋণপত্র ইস্যু করবে। গত বছরও কাছাকাছি পর্যায়ের ঋণপত্র ইস্যু করেছিল। বৈশ্বিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ফ্রাংকলিন টেম্পলটনের ইউরোপিয়ান ফিক্সড ইনকাম বিভাগের প্রধান ডেভিড জান জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে সম্ভাব্য দুজন (জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প) প্রতিযোগী রয়েছেন। নির্বাচন শেষে যিনিই ক্ষমতা গ্রহণ করুন, পরিস্থিতির খুব বেশি পরিবর্তন দেখা যাবে না। বিজয়ী প্রেসিডেন্ট উচ্চ ব্যয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক খাতের সমস্যা আরো বাড়িয়ে তুলবে। ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

মাগুরায় গৃহবধূকে বিষপানে হত্যার অভিযোগ

মাগুরায় গৃহবধূকে বিষপানে হত্যার অভিযোগ

কেপিএম আবাসিক থেকে অজগর উদ্ধার কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্কে অবমুক্ত

কেপিএম আবাসিক থেকে অজগর উদ্ধার কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্কে অবমুক্ত

চার্টার্ড নয়, বাণিজ্যিক ফ্লাইটে নিউইয়র্ক যাবেন প্রধান উপদেষ্টা

চার্টার্ড নয়, বাণিজ্যিক ফ্লাইটে নিউইয়র্ক যাবেন প্রধান উপদেষ্টা

শাল্লায় কালনী নদীতে যুবক নিখোঁজ

শাল্লায় কালনী নদীতে যুবক নিখোঁজ

ভিসি নিয়োগের দাবিতে ইবিতে মহাসড়ক অবরোধ

ভিসি নিয়োগের দাবিতে ইবিতে মহাসড়ক অবরোধ

রেকর্ড রান তাড়ায় বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসী শুরু

রেকর্ড রান তাড়ায় বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসী শুরু

সালথায় সেতুর রেলিং-পাটাতন ভেঙে বেহাল দশা : জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে ১০ গ্রামের মানুষ

সালথায় সেতুর রেলিং-পাটাতন ভেঙে বেহাল দশা : জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে ১০ গ্রামের মানুষ

তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা, ঢাবির ৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা, ঢাবির ৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেও সুস্থ নন খালেদা জিয়া : মির্জা ফখরুল

হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেও সুস্থ নন খালেদা জিয়া : মির্জা ফখরুল

আত্মহত্যা না কি খুন? ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু

আত্মহত্যা না কি খুন? ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু

বিচার বিভাগে পৃথক সচিবালয় ছাড়া আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় : প্রধান বিচারপতি

বিচার বিভাগে পৃথক সচিবালয় ছাড়া আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় : প্রধান বিচারপতি

বিভিন্ন সময়ে যেসব বিতর্কিত অভিযান চালিয়েছে মোসাদ

বিভিন্ন সময়ে যেসব বিতর্কিত অভিযান চালিয়েছে মোসাদ

শেরপুর বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে চা দোকানীর মৃত্যু

শেরপুর বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে চা দোকানীর মৃত্যু

শরীয়তপুর পৌরসভার বেশীর ভাগ সড়কেরই বেহাল দশা, ভোগান্তি চরমে

শরীয়তপুর পৌরসভার বেশীর ভাগ সড়কেরই বেহাল দশা, ভোগান্তি চরমে

এবার বম্বে হাইকোর্টে জোর ধাক্কা মোদি সরকারের, বাতিল ফ্যাক্ট চেক ইউনিট

এবার বম্বে হাইকোর্টে জোর ধাক্কা মোদি সরকারের, বাতিল ফ্যাক্ট চেক ইউনিট

যুবদল নেতাকে কুপিয়ে জখম

যুবদল নেতাকে কুপিয়ে জখম

কাশ্মীরে ভোটের ডিউটিতে যাওয়ার পথে বাস উল্টে নিহত ৪ সীমান্তরক্ষী নিহত

কাশ্মীরে ভোটের ডিউটিতে যাওয়ার পথে বাস উল্টে নিহত ৪ সীমান্তরক্ষী নিহত

লেবাননে পেজার বিস্ফোরণে ভারত যোগ, ঘটনার পরেই উধাও ভারতীয় যুবক

লেবাননে পেজার বিস্ফোরণে ভারত যোগ, ঘটনার পরেই উধাও ভারতীয় যুবক

ঈশ্বরগঞ্জে জামিয়াতুল মোদার্রেছীনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

ঈশ্বরগঞ্জে জামিয়াতুল মোদার্রেছীনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশকে বিশাল লক্ষ্য ছুড়ে দিল ভারত

বাংলাদেশকে বিশাল লক্ষ্য ছুড়ে দিল ভারত