ভয়াবহতার তুলনায় যুদ্ধ কম মাত্রায় ছড়িয়েছে
১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম
গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি নিয়ে আলোচনা করার সময় শেষ হয়ে গেছে। এরই মধ্যে এই যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। বিবিসির ইন্টারন্যাশনাল এডিটর জেরেমি বোয়েন এ কথা লিখেছেন। তিনি বলেছেন, তবে এখন পর্যন্ত এই যুদ্ধ তুলনামূলক কম মাত্রায় আছে। আঞ্চলিক যুদ্ধগুলোর ভয়াবহতার তুলনায় এই যুদ্ধ কম মাত্রায় ছড়িয়েছে। লন্ডনে মন্ত্রীরা বলেছেন, ইয়েমেনে হুতিদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের হামলা শুধুমাত্র সামুদ্রিক চলাচল ও বিশ্ব বাণিজ্যের স্বাধীনতার জন্য নয়। এর সঙ্গে গাজা যুদ্ধের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। সেখান থেকেই এই উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এ অঞ্চলকে গ্রাস করেছে এই সংকট। হামলার পর হুতিরা অবিলম্বে ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এমনিতেই এ অঞ্চলে বিশেষ করে ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানপন্থি উগ্রবাদীরা যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীর বিরুদ্ধ অবস্থানে। ফলে দ্রুত ইয়েমেনের এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে এবং মার্কিন বাহিনী প্রতিশোধ নেয় তাহলে ইসরাইল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ এড়ানোর মার্কিন কূটনীতি কঠিন অবস্থায় পড়বে। উল্লেখ্য, ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ বড় রকম রাজনৈতিক শক্তিও হয়ে উঠেছে। মিত্র এবং প্রক্সি প্রতিরোধের কথিত চক্রের নেটওয়ার্কের অংশ হুতিরা। নিজেদের শত্রুদের বিরুদ্ধে তাদেরকে লাগিয়ে দিয়েছে ইরান। তারা ইরান থেকে স্পর্শকাতর বা অত্যাধুনিক অস্ত্র পাচ্ছে। হুতিকে তেহরানের প্রক্সি হিসেবে দেখার চেয়ে মিত্র হিসেবে দেখাই উত্তম। জেরেমি বোয়েন লিখেছেন, ইয়েমেনে হুতিদের সঙ্গে কিছুটা সময় একান্তে কাটিয়েছি। তারা মানসিকভাবে উচ্চ মাত্রায় স্বাধীন বলে মনে করে নিজেদের। তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে চায়। এই যুদ্ধের অংশ হতে চায় তারা। তাদের সক্ষমতাকে বৃদ্ধি করেছে ইরান। তাদেরকে অস্ত্র দিয়েছে। এর মধ্যে আছে জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। ড্রোন হামলার পাশাপাশি এসব ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলের দিকে ছুড়েছে তারা। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য একই রকম অস্ত্র রাশিয়াকে দিয়েছে ইরান। ফলে ইউক্রেন অস্ত্রের দিক দিয়ে সমৃদ্ধ হয়েছে। অপর এক খবরে বলা হয়, জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার বিচার চাওয়া হলেও ইসরাইল অব্যাহতভাবে গাজায় মানুষ হত্যা করে চলেছে। সর্বশেষ দখল করে রাখা পশ্চিমতীরে একটি অবৈধ বসতির কাছে তিন ফিলিস্তিনি টিনেজারকে গুলি করে হত্যা করেছে তারা। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস নিরাপত্তা পরিষদে ইসরাইলি নেতাদের বিবৃতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীকে অন্য দেশে জোর করে পাঠিয়ে দেয়া নিয়ে এই উদ্বেগ। গাজা মিডিয়া অফিস থেকে বলা হয়েছে গাজায় আল আকসা মার্টিরস হাসপাতালে জ্বালানির অভাবে জেনারেটর চালানো যাচ্ছে না। এর ফলে আইসিইউ এবং নার্সারি রোগীদের মৃত্যুর ঝুঁকি চরম মাত্রায় বেড়ে গেছে। ৭ই অক্টোবরের পর থেকে গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৩ হাজার ৭০৮ জন ফিলিস্তিনি। কমপক্ষে ৬০ হাজার ৫ জন আহত হয়েছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। শুক্রবার হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইসিজেতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগের শুনানি হয়। গাজায় ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এ অভিযোগকে মানহানিকর বলে তা প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরাইল। অভিযোগে দক্ষিণ আফ্রিকা বলেছে, গাজায় গণহারে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে ইসরাইলি বাহিনী। যেসব স্থানকে সাধারণ মানুষের জন্য নিরাপদ ঘোষণা করা হয়েছিল, সেখানেও তারা বোমা হামলা করেছে। এসব হামলার মাধ্যমে গাজার মানুষদের মধ্যে মারাত্মক মানসিক এবং শারীরিক ক্ষতি করছে ইসরাইল। এরই মধ্যে সেখানে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৬০ হাজার মানুষ। ফিলিস্তিনিদের তাদের বাসভূমিতে বাস্তুচ্যুত হওয়ার মতো পরিবেশ আরোপ করেছে। গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপরও ইসরাইলের সেনাবাহিনী ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে।
এসব অভিযোগের জবাবে ইসরাইল বলেছে ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষের ক্ষতি না করে তাদেরকে রক্ষার জন্য সর্বোত্তম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। গাজায় বিপুল পরিমাণ মানুষ হত্যার জন্য বার বার হামাসকে দায়ী করছে ইসরাইল। এই সংখ্যা এরই মধ্যে প্রায় ২৪ হাজার। আরও বলেছে, আন্তর্জাতিক সাহায্যদাতা গ্রুপগুলোর সঙ্গে ব্যাপকভাবে গাজাবাসীকে সাহায্য করছে ইসরাইল। এই মামলার বিচার করার কোনো এক্তিয়ার নেই আইসিজের। কারণ, ইসরাইলের সঙ্গে বৈধ কোনো বিরোধ নেই দক্ষিণ আফ্রিকার। ওদিকে ইরান সমর্থিত প্রতিরোধ চক্রের অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন গ্রুপ ইরাক ও সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কমপক্ষে ১৩০টি হামলা করেছে। লেবানন ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল মায়াদিনে প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, গাজা যুদ্ধ শুরুর পর এসব চক্রের প্রতি সমর্থন আছে ইরানের। একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, ইরাকে ৫৩টি এবং সিরিয়ায় ৭৭টি হামলা চালানো হয়েছে। এই দুটি দেশেই ঘাঁটি আছে যুক্তরাষ্ট্রের। তারা সেখানে অবস্থান করছে আইসিল বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য। বিবিসি, আল-জাজিরা।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
কুমিল্লার আদালতে মামলা স্থগিতেও সাবেক আইনমন্ত্রীর প্রভাব
আ'লীগের মতো বিএনপিও যদি জুলুম করে জনগণ যাবে কোথায়? - সোনারগাঁয়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম
এম আবদুল্লাহ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি হওয়ায় সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের অভিনন্দন
পবিত্র সিরাতুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে পাবনায় বর্ণাঢ্য র্্যালী সমাবেশ অনুষ্ঠিত
বিজয় ছিনিয়ে নিতে নানামুখি ষড়যন্ত্র চলছে, মন্তব্য নজরুল ইসলাম খানের
তারেক জিয়ার বার্তা দেশবাসী অনুধাবন করতে পারবে - ডা. মাজহার
যত্রতত্র দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠা-নামা বন্ধ করতে হবে: ডিএমপি কমিশনার
বিচার বিভাগে হয়রানির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা হবে: আইন উপদেষ্টা
পর্তুগালের নতুন রাষ্ট্রদূত হচ্ছেন মাহফুজুল হক
অস্ট্রেলিয়া কোচের পদ ছাড়লেন অর্নল্ড
ঈশ্বরগঞ্জে জামিয়াতুল মোদার্রেছীনের কমিটি গঠন
পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে বাইরে থেকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে: স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা
বাংলাদেশের স্মৃতি ফিরলো শ্রীলংকা-নিউজিল্যান্ড টেস্ট
‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে এ রকম ইতিহাস আর হবে না’: জয়নুল আবেদীন ফারুক
হঠাৎ ঝড়ে লণ্ডভণ্ড পটুয়াখালীর বাউফল
বড় পরাজয়ের মুখে বাংলাদেশ
বেগমগঞ্জে নামাজ পড়ে ফেরার পথে প্রাণ গেল বৃদ্ধের
কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামানগ্লোবাল ইসলামিক ফাইন্যান্স অ্যাওর্য়াডস পেল ইসলামী ব্যংক
কোন শ্রমিক তার কারখানার ক্ষতি করবে না: শ্রম সচিব
নাঙ্গলকোটে প্রাথমিক শিক্ষা পদকে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন যারা