ঢাকা   রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে চিন্তিত প্রতি দশজনে চার মার্কিন

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:০৩ এএম

কোভিড-১৯-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় পুরোপুরি সফল হয়নি যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি এখনো লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী না আসায় প্রভাবিত হচ্ছে সব ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকা-। এর মাঝে সিএনএনের সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেল, প্রতি ১০জন প্রাপ্তবয়স্ক মার্কিন নাগরিকের চারজনই আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য নিয়ে চিন্তিত। তারা জানান, প্রয়োজনীয় খরচের তুলনায় আয় যথেষ্ট না হওয়ায় বেশির ভাগ সময় তাদের দুশ্চিন্তা নিয়ে কাটাতে হয়।

জরিপ অনুসারে, প্রায় ৩৯ শতাংশ আমেরিকান প্রয়োজনীয় বিল মেটানো নিয়ে সংকটে রয়েছেন। ২০২১ সালে সংকটগ্রস্তের হার ছিল ২৮ শতাংশ এবং কভিড-১৯ মহামারীর সময়ে এমনটা ভাবতেন ৩৭ শতাংশ মার্কিন। অর্থাৎ মহামারীর সময়ের তুলনায় সাধারণ মার্কিনদের অর্থনৈতিক সংকট আরো ঘনীভূত হয়েছে।

বেশির ভাগ আমেরিকান জানান, ব্যয়ের হার মোকাবেলায় তারা মূল পেশার পাশাপাশি অন্য কোনো পার্টটাইম কাজের সঙ্গে যুক্ত। গাড়ি চালানোর মতো খরচ কমিয়েছেন। সেই সঙ্গে ক্রেডিট কার্ডের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে।

জরিপ অনুযায়ী, প্রায় ৫২ শতাংশ লাতিন ও ৪৬ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান আয়-ব্যয়ের ভারসাম্যহীনতায় ভুগছেন। যাদের মধ্যে প্রায় ৫৫ শতাংশেরই বার্ষিক আয় ৫০ হাজার ডলারের কম।

যুক্তরাষ্ট্রের পরিসংখ্যান অফিসের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে দেশটিতে বেকারত্বের হার নিম্নমুখী ও মুদ্রাস্ফীতি কমে আসছে। কিন্তু জরিপে সে চিত্র খুব একটা প্রতিফলিত হচ্ছে না বলে মন্তব্য বিশ্লেষকদের। জরিপ বলছে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে লাখ লাখ মার্কিন নাগরিক কয়েক বছর ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

জরিপের দেয়া প্রশ্নের উত্তরে দুই-তৃতীয়াংশ বা ৬৫ শতাংশ আমেরিকান জানান, পণ্যের ঊর্ধ্বমূল্য ও জীবনযাত্রার ব্যয় বর্তমানে তাদের পরিবারে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সমস্যা। ২০২২ সালের গ্রীষ্মে পণ্যের ঊর্ধ্বমূল্য ও জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে ৭৫ শতাংশ মানুষ অভিযোগ করে। সাম্প্রতিক জরিপে ২০২২ সালের তুলনায় অভিযোগের হার কিছুটা কমেছে। কিন্তু ২০২১ সালের গ্রীষ্মে খরচ সম্পর্কিত অন্য আরেকটি জরিপের তুলনায় অভিযোগের হার বেশি। ওই ৪৩ শতাংশ মার্কিন জানান, প্রয়োজনীয় খরচ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।

এদিকে বিশ্লেষক সংস্থা মুডি’স অ্যানালিটিকসের তথ্যানুসারে, সাধারণ মার্কিন পরিবারগুলো তিন বছর আগে যে দামে গৃহস্থালি পণ্য কিনত, সে একই পণ্য ও পরিষেবা কিনতে এখন মাসে ৯২৫ ডলার বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চলিত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও ভোক্তামূল্য গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ শতাংশ বেড়েছে। তবে ২০২২ সালের জুনের সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ থেকে এটি উল্লেখযোগ্য হ্রাস। অবশ্য অনেক আমেরিকানই একে খুব একটা উন্নতি হিসেবে বিবেচনা করছেন না। তারা মনে করছেন, এ উন্নতির গতি অনেকটাই শ্লথ।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যাংকরেটের প্রধান আর্থিক বিশ্লেষক গ্রেগ ম্যাকব্রাইড বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের অর্থ এই নয় যে দাম কমছে, বরং এর অর্থ হলো পণ্যের দাম আগের মতো ততটা দ্রুত বাড়ছে না।’

মুডি’স অ্যানালিটিকসের তথ্যানুসারে, মধ্যবিত্ত পরিবারের আয় তিন বছর আগের তুলনায় ১ হাজার ১১০ ডলার বেড়েছে।

অবশ্য সবারই আয় যে বেড়েছে এমনটাও নয়। অনেক আমেরিকান তাদের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাসের কারণে আর্থিকভাবে লড়াই করছেন। প্রাপ্তবয়স্কদের ৩৫ শতাংশই মনে করছেন, জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে তাদের আয় যথেষ্ট না হওয়ায় অতিরিক্ত কাজ করে অর্থের জোগান বাড়াতে হচ্ছে। বেশির ভাগ লাতিন, কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান ও ৪৫ বছরের কম বয়সীরাও অতিরিক্ত কাজ নিয়েছেন।

মার্কিনদের বড় একটি অংশ বিলাস ও বিনোদন বাবদ ব্যয় আগের তুলনায় কমিয়েছেন। অনেকেই তাদের নিত্যপণ্য কেনার অভ্যাস পরিবর্তন করেছেন এবং প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো কিনতে ক্রেডিট কার্ডের ঋণ গ্রহণ করেছেন। সূত্র : সিএনএন।

 


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা