তাড়া খাওয়া গাজাবাসীর আশ্রয় হয়েছে পরিত্যক্ত কারাগারে
২৮ জুলাই ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৪, ১২:০৪ এএম
ইসরাইলি বাহিনীর গোলার আঘাতে গাজার দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান শহর খান ইউনিসের ইয়াসমিন আল-দারদাসি নামের এক নারী হারিয়েছেন তার মাথার ওপরের ছাদ। অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে পুরো একটি দিন ও রাত রাস্তার পাশে গাছের নিচে কাটানোর পর তিনি আশ্রয় নিয়েছেন শহরের একটি পরিত্যক্ত কারাগারে, তবে তার জানা নেই সেখানেও কতদিন নিরাপদে থাকা যাবে। রয়টার্স লিখেছে, দারদাসির মত বোমা হামলায় ঘরবাড়ি হারানো শতাধিক মানুষ এখন আশ্রয় নিয়েছেন একসময় চোর, খুনিসহ কুখ্যাত অপরাধীদের জন্য তৈরি করা ওই কেন্দ্রীয় সংশোধন ও পুনর্বাসনকেন্দ্র। শহরের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতেও আর তিল ধারণের জায়গা নেই। তাই কয়েদিদের থাকার এই জায়গাই এখন শেষ আশ্রয় হয়ে উঠেছে ঘরবাড়ি হারানো মানুষদের। গাজার উত্তরাঞ্চলে অভিযান চালানোর সময় সেখানকার বাসিন্দাদের দক্ষিণে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ইসরাইলি বাহিনী। প্রাণে বাঁচতে তাদের অনেকেই আশ্রয় নিয়েছিলেন খান ইউনিসে। গত সপ্তাহের মাঝামাঝিতে গাজার দ্বিতীয় বৃহত্তম এই শহরটি ঘিরে ফেলার কথা জানায় ইসরাইলি সেনারা। এরপর সেখানকার পাঁচ লাখ বাসিন্দাকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় বোমাবর্ষণ, বোমার আঘাত থেকে রেহাই মেলেনি কিছু শরণার্থী তাঁবুরও। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে আসা ভিডিওতে দেখা গেছে, বাস্তুচ্যুত বহু মানুষ পরিবারের আহত সদস্যদের নিয়ে বসে আছেন রাস্তার পাশে। গাড়ি, ট্রাক বা পিকআপে করে যে যেভাবে পেরেছেন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে দূরে সরে যাচ্ছেন। এছাড়া লোকজনকে হেঁটেও এলাকা ছাড়তে দেখা গেছে। এই পরিস্থিতিতে কোথাও মাথা গোঁজার ঠাঁই না মেলায় শহরের এক পাশের ওই কারাগারে আশ্রয় নিয়েছেন শরণার্থীরা। যা নির্মাণ করা হয়েছিল চোর-ডাকাত-খুনিদের আটকে রাখার জন্য। কিন্তু গাজায় ইসরাইলের হামলার পর অনেক আগেই কারাগার থেকে বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়। কারাগার ভবনের দেওয়ালও বুলেটের আঘাতে হয়েছে ক্ষতবিক্ষত। ওই পরিত্যক্ত কারাগারেই এখন ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় ঈঁদুরের মতো তাড়া খেয়ে বেড়ানোর শরণার্থীরা ঢুকছেন দলে দলে। বাড়ি হারানো দারদাসি কাঁদতে কাঁদতে রয়টার্সকে বলেছেন, তার স্বামী ফুসফুস ও কিডনি জটিলতায় ভুগছেন অনেকদিন ধরে। “কোথাও জায়গা পাইনি অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে থাকার জন্য। বাড়িতে বোমা পড়ায় আমার সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে, কিছুই সঙ্গে নিয়ে বের হতে পারিনি। কারাগারে নামাজ পড়ার ঘরে আশ্রয় নিয়েছি। অন্তত সূর্যের প্রখরতা থেকে তো বাঁচতে পেরেছি। কিন্তু এতটুকুই পেয়েছি। অনেকের এই আশ্রয়টুকুও জোটেনি।” নতুন করে থাকার জন্য কোনো ঘর তৈরিতে রাজি নন এই নারী। তার মত শহরের আরো অনেক বাস্তুচ্যুতই ফের হামলার আশঙ্কায় বাড়িঘর তৈরি করতে চান না বলে জানিয়েছেন দারদাসি। কারাগারে আশ্রয় নেওয়া খান ইউনিসের আরেক বাসিন্দা সারিয়া আবু মুস্তাফা জানান, ইসরাইলি বাহিনী তাদেরকে দ্রুত এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেয়। “বৃহস্পতিবার ট্যাংক দ্রুত আমাদের বাড়ির কাছে চলে আসে। আমাদের পোশাক পাল্টানোর মত সময়ও ছিল না। বাড়িতে নামাজ পরার পোশাকে ছিলাম আমরা। ওই অবস্থাতেই বাড়ি ছাড়ি। সঙ্গে কিছুই আনতে পারিনি।” মুস্তাফা জানান, বাড়ি ছাড়ার পর পরিবারের নারী-শিশুদের নিয়ে প্রথম রাতটি তার কাটে খোলা আকাশের নিচে মাটিতে। যেখানে খাবার তো দূরের কথা খাবার পানিও পাওয়া যায়নি। গাজায় এক মাসের যুদ্ধবিরতি নিয়ে অগ্রগতি হয়েছে বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। লড়াইয়ে বিরতি এবং আরও মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর শর্ত নিয়ে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে সমঝোতায় কয়েক সপ্তাহ ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিসর। আর জাতিসংঘ বলছে, গাজায় প্রতি দশজনের মধ্যে নয় জন এখন বাস্তুচ্যুত। রয়টার্স।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
তাবলীগ জামায়াতের উভয়পক্ষের বৈষম্য সংকট সমাধানের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন
ন্যায়ের উপর অবিচল থেকে শ্যামল-সুন্দর জন্মভূমির মানুষকে ভালোবাসি : আল্লামা ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী
বিয়াই বাড়ি থেকে ফেরার পথে ট্রাক চাপায় প্রাণ গেল গৃহবধুর
ফেনীতে আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন
ন্যায়ের উপর অবিচল থেকে শ্যামল-সুন্দর জন্মভূমির মানুষকে ভালোবাসি: আল্লামা ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী
গৌরনদীতে সড়ক দূর্ঘটনায় মটরসাইকেল চালকসহ নিহত - ২
বরিশাল সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক কারাগারে
পীরগঞ্জে আইএফআইসি ব্যাংকের কম্বল বিতরণ
‘তারেক রহমানের রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘরে ঘরে যেতে হবে’
ছাত্রীদের আবাসনের জন্য মাসে ৩ হাজার টাকা দেবে ঢাবি
নারী ও শিশুর অধিকার সুরক্ষায় কাজ করার আহ্বান ইউজিসি’র
তাবলীগ জামাতে বৈষম্য নিরসনের দাবি
অস্ট্রেলিয়ার শ্রীলঙ্কা সফরে যোগ হলো একটি ওয়ানডে
কোট চাঁদপুরে জামায়াত নেতা হত্যা মামলার আসামীকে কুপিয়ে হত্যা
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে গবেষণায় সহায়তার নিশ্চয়তা প্রদান করা প্রয়োজন- সিকৃবি ভিসি
বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নের জন্য শেরপুর বিএনপির মিছিল
সৈয়দপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিফলেট বিতরণ
তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে পটুয়াখালীতে মেয়েদের হকি ম্যাচ অনুষ্ঠিত
কুকুর পরিচালনা শিখতে ইতালি যাচ্ছেন পুলিশ কর্তারা
ফেদেরারের যে রেকর্ড এখন জোকোভিচের