বিজেপিকে রুখতে হাত মেলাতে পারেন মেহবুবা-আবদুল্লারা
১৮ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ১৮ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৬ এএম
ভারতের জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে দেশটির জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর সেখানে নির্বাচন হবে। নয়াদিল্লিতে আয়োজিত জাতীয় নির্বাচন কমিশনের এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) রাজীব কুমার। রাজীব কুমার জানান, জম্মু-কাশ্মীরে মোট তিনটি পর্বে হবে ভোট। আগামী ৪ অক্টোবর নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হবে। নির্বাচন কমিশনের হালনাগাদ তথ্য অনুসারে, জম্মু-কাশ্মীরের মোট ভোটারসংখ্যা ৯০ লাখ। ভারতের একমাত্র মুসলিম প্রধান রাজ্য জম্মু-কাশ্মীর। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানের পর থেকে এই রাজ্যটি নিজেদের বলে দাবি করে আসছে পাকিস্তান। দেশভাগের পর রাজ্যটির এক তৃতীয়াংশ অঞ্চল দখলও করেছে পাকিস্তান। ওই অঞ্চলটি ‘আজাদ কাশ্মীর’ নামে পরিচিত। পাকিস্তানের সাথে ভারতের বৈরিতার প্রধান কারণ এই রাজ্যটি। ’৪৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত জম্মু-কাশ্মীর ইস্যুতে মোট তিন বার যুদ্ধে জড়িয়েছে ভারত-পাকিস্তান। তিনবারই পাকিস্তানের পরাজয় হয়েছে। খবরে বলা হয়, এখন প্রশ্ন আসন্ন বিধানসভা ভোটে কী বিজেপিকে রুখতে জোট বাঁধবে এনসি, পিডিপি-র মতো বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো? মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার ঘোষণা করেন, এবার কাশ্মীরে ভোট হবে ৩ দফায়। ভোটগ্রহণ ১৮ সেপ্টেম্বর, ২৫ সেপ্টেম্বর এবং ১ অক্টোবর। ফলাফল জানা যাবে ৪ অক্টোবর। এই নির্ঘণ্ট জানার পরই খুশির হাওয়া বইতে শুরু করে ভূস্বর্গে। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করতে কতটা তৈরি দলগুলো? কয়েকদিন আগেই ন্যাশনাল কনফারেন্স সহ-সভাপতি তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, বিধানসভা নির্বাচনে অংশ নেবেন না। যতদিন না পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা ফেরত পাচ্ছে জম্মু-কাশ্মীর, ততদিন প্রতিবাদ স্বরূপ নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে নিজেকে দূরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। ফলে বাধ্য হয়েই ফারুক আবদুল্লাকে ঘোষণা করতে হয় যে তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন। এতদিন কিছু না বললেও নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই তার উপর চাপ বাড়াতে শুরু করেছেন এনসি কর্মী-সমর্থকরা। ফলে বাধ্য হয়েই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হচ্ছেন ওমর। তিনি জানিয়েছেন, “আমি এখনও নিজের সিদ্ধান্তে অনড়। কিন্তু দলের ভিতরে চাপ বাড়ছে। আমি নির্বাচনে অংশ না নিলে বাবাকে লড়তে হবে। তার শরীরটা ভালো নেই। তাই কর্মী-সমর্থকরা চাইছেন আমি নির্বাচনে লড়ি। দেখা যাক, এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিইনি।” ওমরের মতোই ৩৭০ পুনর্বহাল না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা করেছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের আরেক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। পিডিপি সভানেত্রী সেই সিদ্ধান্তে অনড় থাকবেন, নাকি ওমরের মতো সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবেন, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে তার দলের মুখপাত্র সুহেল বুখারি বললেন, “তাকে বোঝানোর চেষ্টা চলছে। তবে উনি যদি নির্বাচনে অংশ নাও নেন, প্রার্থীদের হয়ে প্রচার তো করবেনই। আমরা তৈরি।” এদিকে, সদ্য-সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে বারামুল্লা কেন্দ্রে ওমর আবদুল্লাকে হারিয়ে চমক দিয়েছিলেন রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে জেলবন্দী সতন্ত্র প্রার্থী আবদুল রশিদ ওরফে ইঞ্জিনিয়ার রশিদ। পরবর্তী সময়ে নিজেদের দল গঠনের কাজ শুরু করে দিয়েছেন তার দুই পুত্র আবরার ও আসরার রশিদ। তৈরি হয়েছে আওয়ামী ইত্তিহাদি পার্টি। ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক দলের স্বীকৃতি পেতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনে ফাইল জমা করা হয়েছে। যে প্রেশার কুকার চিহ্নে জিতে সংসদে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন রশিদ, সেই চিহ্নকেই নিজেদের সরকারি প্রতীক করার আবেদন করা হয়েছে। দলের মুখপাত্র ফেরদৌস বাবা জানালেন, “নতুন দল, জম্মুতে প্রার্থী দিতে পারব কিনা জানিনা, তবে কাশ্মীরের বেশিরভাগ কেন্দ্রেই আমরা প্রার্থী দেব।” আরেক নতুন দল ডেমোক্র্যাটিক প্রোগ্রেসিভ আজাদ পার্টি সুপ্রিমো গুলাম নবি আজাদ নির্বাচন ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, “আশা করব ভোটার, প্রার্থী, বিভিন্ন দলের নেতার পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে সরকার।” ১৯৯৬ থেকে লাগাতার কুলগাম কেন্দ্রের সিপিআই (এম) বিধায়ক তথা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মহম্মদ ইউসুফ তারিগামি বলছিলেন, “গোটা দেশে একটাই অঞ্চলের গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছিল। প্রায় ১০ বছর মানুষ নিজেদের বিধায়ক বেছে নেয়া থেকে বঞ্চিত ছিল। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশের জন্যই এটা সম্ভব হল। সরকার তো দাবি করে আসছে যে, ৩৭০ রদ করে ভূস্বর্গে শান্তি ফিরেছে। কিন্তু কাশ্মীরিদের থেকে তাদের আত্মা কেড়ে নেওয়ার জবাব এবার বিজেপিকে দিয়ে দেবে উপত্যকার মানুষ।” শুধু বিরোধীরাই নয়। নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত বিজেপিও। তাদের কথায়, “লিখে নিন, ৫০টির বেশি আসন জিতে এককভাবে জম্মু-কাশ্মীরে সরকার বানাব আমরা।” প্রায় এক দশক বাদে নিজেদের সরকার গঠন, ৩৭০ ধারা রদ, উপত্যকায় সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বেড়ে যাওয়ার মতো ঘটনাগুলো যে এই নির্বাচনের প্রধান ইস্যু হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন দেখার গেরুয়া শিবিরকে রুখতে কী একজোট হবে ‘গুপকার’? কাকেই বা বেছে নেবেন কাশ্মীরের জনগণ। রয়টার্স, এনডিটিভি।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার ফোন
রানার অটোমোবাইলস পিএলসির এজিএম সম্পন্ন
আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ কাজের আহ্বান: এমরান আহমদ চৌধুরী
নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির উপর শুল্ক কমানোর দাবি বাজারের ২০ শতাংশ খাদ্য মানহীন
লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, নাকে খত
বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ
বিশ্বে বছরজুড়ে আলোচনায় যুদ্ধ, নির্বাচন ও মূল্যস্ফীতি
যুক্তরাষ্ট্র আগুন নিয়ে খেলছে : চীন
আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে: ডা. জাহিদ হোসেন
মেক্সিকোতে প্লেন বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ৭
মাথাপিছু ১৪০০ ডলারের চেক পাচ্ছেন ১০ লাখ মার্কিনি
৯১ শিশু খেলোয়াড়সহ ৬৪৪ ক্রীড়াবিদকে হত্যা করেছে ইসরাইল
মোজাম্বিকে ঘূর্ণিঝড় চিডোরে নিহত ৯৪
মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী
রাফালের আগমনে ভারত সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি
উত্তর প্রদেশে নিহত ৩ খলিস্তানি নেতা
ভারতে বাল্যবিবাহবিরোধী অভিযানে আটক ৫০০০
মুজিবল্যান্ড বানিয়ে হিন্দুস্তানে থাকুক আ.লীগ : রাশেদ প্রধান
গ্রেফতার ভয়ে পোল্যান্ড সফর বাতিল করলেন নেতানিয়াহু
পানামা খাল দখলের হুমকিকে ভর্ৎসনা পানামা প্রেসিডেন্টের