যুদ্ধবিরতিতে সবচেয়ে বড় বাধা নেতানিয়াহু : হামাস
১৯ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৪ এএম
গাজায় ইসরাইলি যুদ্ধ পেরিয়েছে প্রায় ১০ মাস। বিশ্বজুড়ে যুদ্ধবিরতির দাবিতে তীব্র সমালোচনার পরও বর্বরতা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরাইল। গত কয়েক মাসে একাধিকবার মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো যুদ্ধবিরতির বৈঠক করেও কোনো ফল আসেনি। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস বলছে, সবাই যুদ্ধবিরতির গুরুত্ব বুঝলেও ইসরাইল এতে কর্ণপাত করছে না। এজন্য ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে যুদ্ধবিরতির পথে সবচেয়ে বড় বাধা বলছে গোষ্ঠীটি। যুদ্ধবিরতির চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আল-জাজিরার সঙ্গে কথা বলেছেন হামাসের কর্মকর্তা ওসামা হামদান। তিনি দাবি করেন, নেতানিয়াহু এবং তার সরকার যুদ্ধবিরতি চুক্তি অর্জন করতে ইচ্ছুক নয়। কাতারে যুদ্ধবিরতি নিয়ে দুইদিনের আলোচনা কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে। ওসামা হামদান বলেন, ‘দুই দিনের আলোচনায় বাইডেন প্রশাসনের প্রস্তাবিত দিকগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরাইল। আমাদের মনে রাখতে হবে, ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, চুক্তি অর্জনের প্রধান বাধা হলেন নেতানিয়াহু। তিনি এখনো বাধা।’ গাজায় ইসরাইলি হামলায় বিধ্বস্ত এই ভূখ-ের নিহতের মোট সংখ্যা পেরিয়ে গেছে ৪০ হাজারেরও বেশি। এ ছাড়া গত ১০ মাসে আহত হয়েছেন সাড়ে ৯১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। গত ৭ অক্টোবর আকস্মিক হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরাইলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরাইলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরাইল। অপর এক খবরে বলা হয়, একটি নিবন্ধে আতওয়ান গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনার প্রতি আরব দেশগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্লেষণ করেছেন। মিসর ও কাতারের মতো আরব মধ্যস্থতাকারীদের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, ইহুদিবাদী ইসরাইলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইচ্ছাকৃতভাবে গাজার আল-দারজ এলাকায় একটি গণহত্যা চালানোর পরও এসব আরব দেশ কোনো শর্ত ছাড়াই ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধ বিরতির আলোনায় অংশ নিয়েছে। আরব বিশ্বের বিশিষ্ট লেখক ও বিশ্লেষক আব্দ আল-বারী আতওয়ান রে-ই-ইয়ুম পত্রিকায় একটি নিবন্ধে ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের নতুন নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের সাহসী সিদ্ধান্তের বিশ্লেষণ করেছেন। সিনওয়ার দোহায় অনুষ্ঠানরত যুদ্ধবিরতির আলোচনা বয়কট করেছেন। পার্সটুডের মতে এই নিবন্ধে তিনি বাইরের চাপের বিরুদ্ধে হামাসের মর্যাদা এবং শক্তি বলবৎ রাখার জন্য সিনওয়ারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি হামাস আন্দোলনের এই সিদ্ধান্তকে গাজা উপত্যকারর বিরুদ্ধে যুদ্ধের শেষ ১০ মাসে আমেরিকার হুমকি এবং আরব মধ্যস্থতাকারীদের তীব্র চাপের ব্যর্থতার প্রতিনিধিত্ব হিসেবে বিবেচনা করেছেন। তিনি আরও বলেন যে এই গাজা যুদ্ধ ভিত্তিক সর্বশেষ পরিস্থিতি সিআইএ নামে পরিচিত আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান উইলিয়াম বার্নসের তত্ত্বাবধানে সাজানো হয়েছিল এবং এর উদ্দেশ্য ছিল শহীদ ইসমাইল হানিয়াহকে হত্যা করে প্রতিরোধ অক্ষের সংগ্রাম স্থগিত করা। তেহরানে হামাস আন্দোলনের রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান ইসমাইল হানিয়া এবং বৈরুতের দক্ষিণে দাহিয়াতে হিজবুল্লাহর সিনিয়র কমান্ডার ফাওয়াদ শুকুরকে হত্যা করা সিদ্ধান্ত নেতানিয়াহু ইচ্ছাকৃতভাবে নিয়েছিল যাতে এই অঞ্চলে যুদ্ধ অব্যাহত থাকে। এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও যুদ্ধ থামানোর চেষ্টা করছেন এবং যুদ্ধ বন্ধে নেতানিয়াহু ও তার মন্ত্রিসভার ওপর চাপ দেওয়ারও সাহস পান না। উল্টো গাজায় যুদ্ধ অব্যাহত রাখার জন্য বাইডেন সরকার ইসরাইলকে আরো বিশ বিলিয়ন ডলার মূল্যের উন্নত সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে। এসব অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে এফ-৩৫ যুদ্ধ বিমান, উচ্চ ধ্বংসাত্মক শক্তি সম্পন্ন রক-ব্রেকার বোমা যা পাহাড়ের নীচে অবস্থিত দুর্গ ভেদ করার ক্ষমতা রাখে। এই বিশ্লেষক হামাস আন্দোলনের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার যিনি গাজার একটি টানেলের নীচে থেকে সামরিক ও রাজনৈতিক যুদ্ধ পরিচালনা করেন তার বিষয়ে বলেন যে সিনওয়ার প্রমাণ করেছেন যে তিনি আমেরিকা এবং দখলদার শাসক গোষ্ঠীকে ভয় পান না এবং তিনি আরব নেতাদের পরোয়া করেন না যাদের ভয় পেয়ে আত্মসমর্পণ করার ইতিহাস রয়েছে। আতাওয়ান লিখেছেন, নেতানিয়াহু মনে করেছেন যে গাজার আল-দরজ আশেপাশের স্কুলে গণহত্যা এবং হানিয়াহকে হত্যা করে তিনি প্রতিরোধ শক্তিকে ভয় দেখাতে পারবেন কিংবা তিনি তার শর্ত চাপিয়ে দিতে পারবেন যেখানে রয়েছে তার আগ্রাসী বাহিনীকে মিশরের সীমান্তে সালাদিন অক্ষে বা ফিলাডেলফিয়ায় ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে রাখা যাতে যখনই চাইবেন গাজা উপত্যকায় যেনো আবার হামলা করতে পারেন এবং একইসঙ্গে গাজা উপত্যকার নেটসারিম অক্ষে একটি চেকপয়েন্ট স্থাপন করবেন যাতে প্রতিরোধ যোদ্ধারা গাজার উত্তরে ফিরে যেতে না পারে। কিন্তু ফলাফল হয়েছে সম্পূর্ণ উল্টো। গাজায় গত ১০ মাস ধরে বর্বরোচিত এবং পাশবিক হামলা চালিয়েও হামাস নেতাদের কাবু করতে সক্ষম হয় নি ইসরাইল। নিজেদের শর্ত না মানা হলে দোহায় নতুন দফার আলোচনায় অংশ নিতে হামাস অস্বীকৃতি জানিয়েছে। অথচ অতীতে ‘ক্যাম্প ডেভিড’ এবং ‘অসলো’ এর সমঝোতা চুক্তি কয়েক দিন এবং কয়েক ঘন্টার মধ্যে পৌঁছেছিল। আল-জাজিরা, ইরনা।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪
মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫
সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই
ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের
গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি
রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের
শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা
বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা
এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা
দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম
বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের
ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?
আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু
বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ
রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী
ধূমপানকে না বলুন
জালিমের পরিণতি ভালো হয় না
অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি
মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়
১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত