ঢাকা   শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইহুদীবাদী ইসলারাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিন যোদ্ধাদের নতুন সংগঠন লায়ন্স ডেন

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

১২ মার্চ ২০২৩, ১১:১৩ এএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৪৩ পিএম

স্বাধীনতার জন্য লড়াই করতে করতে ক্লান্ত ফিলিস্তিনের জনগণ। তবে তারা মনোবল হারায়নি। যত দিন যাচ্ছে ততই ইহুদীদের আক্রমনে তাদের ভূমি হারাচ্ছে ও জনগণ মারা যাচ্ছে। তবে এর শেষ দেখতে চান সে দেশের জনগণের একাংশ। এবার তারা নতুন সংগঠন গঠন করেছেন।

এ বছরের শুরু থেকে অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ইহুদীবাদী ইসরাইলি বাহিনীর সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের উত্তেজনা ও সহিংসতা বেড়ে গেছে। এ উত্তেজনায় নতুন করে নাম এসেছে লায়ন্স ডেন নামের একটি ফিলিস্তিনি গ্রুপের। আরবিতে এই যাদের নাম আরীন আল উসুদ।

সশস্ত্র আন্দোলনকারী নতুন এই গ্রুপটির উত্থান হয়েছে পশ্চিম তীরের উত্তরাঞ্চলীয় নাবলুস শহরের পুরনো অংশ থেকে।

ইসরাইলি সৈন্য ও বসতি স্থাপনকারীদের ওপর সম্প্রতি যেসব হামলা পরিচালিত হয়েছে, এই গ্রুপটিই তার পেছনে রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

এই গ্রুপের সদস্য ও সমর্থকরা মূলত তরুণ ফিলিস্তিনি এবং তারা দাবি করে যে গত কয়েক দশক ধরে যেসব দল বা গোষ্ঠী ফিলিস্তিনি রাজনীতিকে পরিচালনা করছে সেগুলোর সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।

পশ্চিম তীরের রামাল্লাহ শহর-ভিত্তিক হরাইজন সেন্টার ফর পলিটিক্যাল স্টাডিজ নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক ইব্রাহিম জিবরিল দালালশা বলেন, লায়ন্স ডেন হচ্ছে একদল ক্রুদ্ধ ফিলিস্তিনি তরুণের একটি গ্রুপ। এদের বেশিরভাগেরই বয়স কুড়ির ঘরে। পশ্চিম তীর অথবা গাজায় যেসব রাজনৈতিক দল আছে তারা এগুলোর কোনোটির সাথে জড়িত নয়। তারা হচ্ছে এমন একটি গ্রুপ যারা মূলত ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে লড়াই করার ওপর জোর দিচ্ছে।

সশস্ত্র এই গ্রুপটি প্রধানত নাবলুস শহরে সক্রিয়, বিশেষ করে আল-ইয়াসমিনা এলাকায়।গত কয়েক মাসে এই গ্রুপের সঙ্গে যোগ দিয়েছে বহু ফিলিস্তিনি তরুণ।

যদিও বর্তমান কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এই গ্রুপের আনুষ্ঠানিক কোনো সম্পর্ক নেই, তবে এর কিছু কিছু সদস্যের আগে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছিল বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথমে এই গ্রুপটির নাম ছিল নাবলুস ব্যাটালিয়ন। সেসময় এই গ্রুপে দশজনের বেশি সদস্য ছিল না।

জেনিন শরণার্থী শিবিরে গড়ে ওঠা একটি সামরিক গ্রুপ জেনিন ব্যাটালিয়ন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে গঠিত হয় এই নাবলুস ব্যাটালিয়ন।

ওই বছরের অগাস্ট মাসে নাবলুসের একটি বাড়িতে ইসরাইলি সৈন্যদের অভিযানের সময় এই গ্রুপের শীর্ষস্থানীয় একজন যোদ্ধা ইব্রাহিম আল-নাবলুসিহ তিনজন যোদ্ধা নিহত হন।

আল-নাবলুসিকে হত্যার পর এই গ্রুপের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে।

ধারণা করা হয় যে গত বছরের গ্রীষ্মকালে লায়ন্স ডেন গ্রুপটি প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে। ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত যোদ্ধাদের স্মরণে নাবলুস শহরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই নামে গ্রুপটির আবির্ভাব ঘটে।

২০২৩ সালের শুরুর দিকে ইসরাইলি সেনাবাহিনী এই গ্রুপের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতার করে এবং হত্যা করে। ইসরাইলের পক্ষ থেকে এসব ফিলিস্তিনি যোদ্ধার বিরুদ্ধে ইসরায়েলি টার্গেটে হামলা পরিচালনার অভিযোগ আনা হয়।

এর পরেই এসব যোদ্ধার ছবি ও ভিডিও সোশাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে টিকটকে।

এর কয়েক মাস পরে মুখোশ পরিহিত কয়েকজন বন্দুকধারী নাবলুসের ওল্ড সিটির অলিগলিতে সশস্ত্র মিছিল বের করে।

এই ঘটনায় ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনী ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে।

ফিলিস্তিনিদের পক্ষ থেকে এই গ্রুপটির প্রতি যে উল্লেখযোগ্য সমর্থন রয়েছে তার কিছু প্রমাণও রয়েছে।

প্যালেস্টিনিয়ান সেন্টার ফর পলিসি এন্ড সার্ভে রিসার্চ নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান গত ডিসেম্বর মাসে পশ্চিম তীর ও গাজা ভূখণ্ডের বাসিন্দাদের ওপর যে জরিপ পরিচালনা করে তাতে দেখা যায় যে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৭০% লায়ন্স ডেনের মতো একটি স্বাধীন সশস্ত্র গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করাকে সমর্থন করে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বয়স্ক ফিলিস্তিনি নেতৃত্বও এর পেছনে একটি কারণ যার ফলে ফিলিস্তিনি তরুণরা সশস্ত্র এই প্রতিরোধ গ্রুপটির দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে। এই গ্রুপের অনেক সদস্য ঘোষণা করেছে যে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

শেখ রাসেলকে হারালো আবাহনী

শেখ রাসেলকে হারালো আবাহনী

নারী প্রিমিয়ার ফুটবল লিগ শুরু শনিবার

নারী প্রিমিয়ার ফুটবল লিগ শুরু শনিবার

চীনে ছয় পদক জিতে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের উশু

চীনে ছয় পদক জিতে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের উশু

এসটিপি ছাড়া নতুন বিল্ডিং করার অনুমোদন কেউ পাবে না: গণপূর্তমন্ত্রী

এসটিপি ছাড়া নতুন বিল্ডিং করার অনুমোদন কেউ পাবে না: গণপূর্তমন্ত্রী

ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধে জাতিসংঘকে কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে -বিক্ষোভ সমাবেশে খেলাফত মজলিস

ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধে জাতিসংঘকে কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে -বিক্ষোভ সমাবেশে খেলাফত মজলিস

বকেয়া বেতন চাওয়ার কারনে গৃহকর্মীকে নির্যাতন

বকেয়া বেতন চাওয়ার কারনে গৃহকর্মীকে নির্যাতন

মায়ের দূর সম্পর্কের বোনকে বিয়ে করা প্রসঙ্গে।

মায়ের দূর সম্পর্কের বোনকে বিয়ে করা প্রসঙ্গে।

উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের কর ফাঁকি দেয়ার সুযোগ দিচ্ছেন অসাধু কর কর্মকর্তারা : সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে

উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের কর ফাঁকি দেয়ার সুযোগ দিচ্ছেন অসাধু কর কর্মকর্তারা : সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে

দু’সহোদর হাফেজ শ্রমিক হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে -মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ

দু’সহোদর হাফেজ শ্রমিক হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে -মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে প্রশ্নবিদ্ধ তথ্য প্রচারের নিন্দা ডিআরইউর

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে প্রশ্নবিদ্ধ তথ্য প্রচারের নিন্দা ডিআরইউর

মির্জাপুরে রাজশাহী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন ১০ যাত্রী আহত

মির্জাপুরে রাজশাহী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন ১০ যাত্রী আহত

ফরিদগঞ্জে বিয়ে না দেওয়ায় মাকে গলা কেটে হত্যা

ফরিদগঞ্জে বিয়ে না দেওয়ায় মাকে গলা কেটে হত্যা

মোদির গোলামির জিঞ্জিরে দেশকে আবদ্ধ করেছে সরকার -মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম

মোদির গোলামির জিঞ্জিরে দেশকে আবদ্ধ করেছে সরকার -মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম

গাজায় ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারে লাগতে পারে ১৪ বছর : জাতিসংঘ

গাজায় ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারে লাগতে পারে ১৪ বছর : জাতিসংঘ

তীব্র তাপদহে বৈরী আবহাওয়া, ভোরে কুয়াশা, মসজিদে মসজিদে বিশেষ দোওয়া অনুষ্ঠিত

তীব্র তাপদহে বৈরী আবহাওয়া, ভোরে কুয়াশা, মসজিদে মসজিদে বিশেষ দোওয়া অনুষ্ঠিত

ফতুল্লায় ৫ যুবক আটক, ‘ডাকাতির প্রস্তুতি’র অভিযোগ

ফতুল্লায় ৫ যুবক আটক, ‘ডাকাতির প্রস্তুতি’র অভিযোগ

কুষ্টিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় সাংবাদিকের মৃত্যু

কুষ্টিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় সাংবাদিকের মৃত্যু

মন্দিরে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে তদন্তভিত্তিক বিচারের দাবি

মন্দিরে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে তদন্তভিত্তিক বিচারের দাবি

কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান

কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান

ইরানের কৃষি-খাদ্য রপ্তানি বেড়েছে ২২ শতাংশ

ইরানের কৃষি-খাদ্য রপ্তানি বেড়েছে ২২ শতাংশ