Header Ad

ইরানের প্রেসিডেন্টকে সফরের আমন্ত্রণ জানালেন সউদী বাদশাহ

Daily Inqilab ইনকিলাব

২০ মার্চ ২০২৩, ১০:৩৮ এএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১০:২৩ পিএম

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে সউদী আরবে সরকারি সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে রিয়াদ। সউদী বাদশাহ সালমান চিঠি পাঠিয়ে নিজেই আনুষ্ঠানিভাবে এই আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে জানা গেছে।
মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিদ্বন্দ্বী এই দু’টি দেশ নিজেদের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে সম্মত হওয়ার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে ইরানের প্রেসিডেন্টকে সউদী সফরের আমন্ত্রণ জানানো হলো। সোমবার (২০ মার্চ) এক প্রদিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সউদী আরবের বাদশাহ সালমানের পাঠানো চিঠিতে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে রিয়াদে সরকারি সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে সউদী আরব এখনও এ বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
বিবিসি বলছে, মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক ইতিহাস সউদী আরব ও ইরানের মধ্যে বৈরিতার কথাই বলে। তবে চীনের মধ্যস্ততায় সম্প্রতি ইরান এবং সউদী আরব সাত বছর পর আবার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে রাজি হয়েছে। এর ফলে প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশের মধ্যে আবার বাণিজ্য এবং নিরাপত্তা সহযোগিতাও শুরু হবে।
সেই সাথে দুই মাসের মধ্যে দু’দেশ পরস্পরের রাজধানীতে তাদের দূতাবাসও খুলবে। যা পশ্চিম এশিয়ার এই অঞ্চলের ভূ-রাজনীতিকে নতুন আকার দিতে পারে।
মোহাম্মদ জামশিদি নামে ইরানের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সউদী রাজধানী রিয়াদ সফরের আমন্ত্রণ সম্পর্কে টুইট করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট রাইসি সউদীর আমন্ত্রণকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং ‘সহযোগিতা প্রসারিত করতে ইরানের প্রস্তুতির ওপর জোর দিয়েছেন’।
পৃথকভাবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান সাংবাদিকদের বলেছেন, দুই দেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে একটি বৈঠক করতে সম্মত হয়েছে এবং বৈঠকের তিনটি সম্ভাব্য স্থানের নামও প্রস্তাব করা হয়েছে। অবশ্য তিনি স্থানগুলোর নাম বলেননি এবং ঠিক কবে এই বৈঠক হতে পারে তাও বলেননি।
বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য সম্পাদক সেবাস্টিয়ান উশার বলেছেন, চীনের মধ্যস্থতায় কয়েকদিনের আলোচনার পর অপ্রত্যাশিতভাবে আসা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সাম্প্রতিক উন্নতি ব্যাপক গতি তৈরি করছে বলে মনে হচ্ছে। উভয় দেশই ঘোষণা করেছে, তারা দুই মাসের মধ্যে একে অপরের দেশে আবারও দূতাবাস খুলবে এবং বাণিজ্য ও নিরাপত্তা সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে।
অতীতে এই দুই দেশের মধ্যে সমঝোতার বহু প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর সাম্প্রতিক এই অগ্রগতিকে যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘসহ অনেকেই সতর্কভাবে স্বাগত জানিয়েছে।
সউদী আরব যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং ইরান ও চীন- দুই দেশের সঙ্গেই তাদের সম্পর্কে টানাপোড়েন আছে। আবার ইয়েমেনে যে গৃহযুদ্ধ চলছে, সেখানে ইরান এবং সউদী আরব দুই পরস্পরবিরোধী পক্ষকে সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়ে থাকে।
২০১৬ সাল থেকে হতে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই বড় দেশের মধ্যে কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। সেবছর সউদী আরব এক শিয়া নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর তেহরানের সউদী দূতাবাসে হামলা হয়েছিল। আর তারপর দুই দেশের সম্পর্কে নাটকীয় অবনতি ঘটে।
মূলত ইরানি বিক্ষোভকারীরা তেহরানে সউদী দূতাবাসে হামলার পর ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে সউদী আরব ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। তারপর থেকে সুন্নি এবং শিয়া-নেতৃত্বাধীন এই প্রতিবেশীদের মধ্যে উত্তেজনা প্রায়ই জারি ছিল। এই দুই দেশ একে অপরকে নিজের আঞ্চলিক আধিপত্যের জন্য হুমকি হিসাবে বিবেচনা করে থাকে।
এছাড়া সিরিয়া এবং ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধসহ বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক সংঘাতে ইরান ও সউদী একে অপরের বিরোধী পক্ষ হয়ে কার্যত পরোক্ষ লড়াইয়ে নিয়োজিত রয়েছে।
ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান আরও বলেছেন, ইরান বাহরাইনের সাথেও সম্পর্ক উন্নত করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে আশাবাদী। সউদীর ঘনিষ্ঠ মিত্র এই দেশটি ২০১৬ সালে রিয়াদকে অনুসরণ করে তেহরানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা আশা করি, ইরান ও বাহরাইনের মধ্যে বিদ্যমান কিছু বাধা দূর হবে এবং আমরা দূতাবাসগুলো পুনরায় চালু করার জন্য প্রাথমিক পদক্ষেপ নেব।’
বাহরাইন অবশ্য ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্যের এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে গত সপ্তাহে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনপ্রতিষ্ঠার জন্য ইরান-সৌদি চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে বাহরাইন।
এছাড়া জর্ডান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অন্যান্য আঞ্চলিক আরব প্রতিদ্বন্দ্বীদের সাথে সম্পর্ক পুনরায় শুরু করতে বা উন্নত করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছে ইরান।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

নীলফামারী জাল সনদে নিয়োগ, ৭ শিক্ষকের চাকরি বাতিল

নীলফামারী জাল সনদে নিয়োগ, ৭ শিক্ষকের চাকরি বাতিল

পদ্মার এক বাঘাইড় মাছের দাম ৪১ হাজার২৫০ টাকা

পদ্মার এক বাঘাইড় মাছের দাম ৪১ হাজার২৫০ টাকা

বিদ্রোহ ছড়ানোদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর

বিদ্রোহ ছড়ানোদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর

চীনে হুই মুসলিমদের ওপর দমনপীড়ন চলছেই

চীনে হুই মুসলিমদের ওপর দমনপীড়ন চলছেই

বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা

বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা

স্বস্তির বৃষ্টি রাজধানীতে

স্বস্তির বৃষ্টি রাজধানীতে

চার্জার ফ্যান বিস্ফোরণে এক পরিবারের ৫ জন দগ্ধ

চার্জার ফ্যান বিস্ফোরণে এক পরিবারের ৫ জন দগ্ধ

ইউক্রেনীয় বাহিনী প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে: মার্কিন কর্মকর্তা

ইউক্রেনীয় বাহিনী প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে: মার্কিন কর্মকর্তা

Header Ad
ভাত বিক্রেতার সঙ্গে মারামারি, প্রাণ গেল পান বিক্রেতার

ভাত বিক্রেতার সঙ্গে মারামারি, প্রাণ গেল পান বিক্রেতার

চীনকে ‘গোপন তথ্য’ দিচ্ছেন সাবেক জার্মান পাইলটরা!

চীনকে ‘গোপন তথ্য’ দিচ্ছেন সাবেক জার্মান পাইলটরা!

বাইডেন-সুনাক বৈঠক, অ্যাটলান্টিক ঘোষণাপত্র জারি

বাইডেন-সুনাক বৈঠক, অ্যাটলান্টিক ঘোষণাপত্র জারি

‘রাস্তায় পড়ে থাকা লাশ কুকুরে খাচ্ছে’

‘রাস্তায় পড়ে থাকা লাশ কুকুরে খাচ্ছে’

চুয়াডাঙ্গায় আওয়ামী লীগ নেত্রী রাঙ্গা ভাবী গ্রেফতার

চুয়াডাঙ্গায় আওয়ামী লীগ নেত্রী রাঙ্গা ভাবী গ্রেফতার

যুক্তরাষ্ট্রে ভেঙে পড়লো এলিভেটেড ওয়াকওয়ে, আহত ২১

যুক্তরাষ্ট্রে ভেঙে পড়লো এলিভেটেড ওয়াকওয়ে, আহত ২১

‘ট্রেন দুর্ঘটনা’ শিরোনামে এবার কবিতা লিখলেন মমতা

‘ট্রেন দুর্ঘটনা’ শিরোনামে এবার কবিতা লিখলেন মমতা

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চায় না জাতিসংঘ

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চায় না জাতিসংঘ

সউদী পৌঁছেছেন ৬৪ হাজার ২৭৭ হজযাত্রী, মৃত্যু বেড়ে ৮

সউদী পৌঁছেছেন ৬৪ হাজার ২৭৭ হজযাত্রী, মৃত্যু বেড়ে ৮

ইউক্রেনে আরও ২০০ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

ইউক্রেনে আরও ২০০ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

ইমরানের দলত্যাগীদের নতুন দল ঘোষণা

ইমরানের দলত্যাগীদের নতুন দল ঘোষণা

আ.লীগের সংসদীয় ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভা সন্ধ্যায়

আ.লীগের সংসদীয় ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভা সন্ধ্যায়