বাংলা সনের প্রবর্তক আকবর নাকি শশাঙ্ক? কলকাতায় নতুন বিতর্ক
১৩ এপ্রিল ২০২৩, ০৫:৫০ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:০৬ পিএম
পয়লা বৈশাখের শোভাযাত্রা নিয়ে বিতর্ক বেঁধেছে কলকাতাতেও। নতুন একটি শোভাযাত্রায় বঙ্গাব্দের প্রবর্তক হিসাবে গৌড়ের রাজা শশাঙ্ককে তুলে ধরা হবে বলে আয়োজকরা জানানোর পরেই বিতর্কের জন্ম।
শশাঙ্ক না মুঘল সম্রাট আকবর- কে বঙ্গাব্দ চালু করেছিলেন, সেই বিতর্ক কয়েক বছর ধরে চললেও তা ছিল মূলত অ্যাকাডেমিক আলোচনা। তবে এবারে শোভাযাত্রা থেকে শশাঙ্ককে বঙ্গাব্দের প্রবর্তক বলে প্রচার করা এবং শশাঙ্কের মূর্তি সামনে নিয়ে শোভাযাত্রা করায় আপত্তি তুলছেন দীর্ঘদিন ধরে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান করে, এমন সংগঠনগুলি। শশাঙ্ককে সামনে রেখে যে সংগঠনটি মঙ্গল শোভাযাত্রা করবে ১৫ এপ্রিল, সেই বঙ্গীয় সনাতনী সংস্কৃতি পরিষদের সঙ্গে আরএসএসের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। যদিও তারা দাবী করছেন যে, তাদের সংগঠনে সবাই আরএসএসের ঘনিষ্ঠ নয়।
আরএসএস দীর্ঘদিন ধরেই মুঘল সাম্রাজ্য এবং মুসলমান শাসনকালকে ইতিহাস থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে বলে ঐতিহাসিকরা বলে থাকেন। সম্প্রতি জাতীয় পর্যায়ের স্কুল পাঠ্য ইতিহাস বই থেকেও মুঘল শাসনামলের অধ্যায়টি বাদ দিয়ে দেয়া হয়েছে, যার পিছনেও আরএসএসের চিন্তাধারাই কাজ করেছে বলে ইতিহাসবিদরা মনে করছেন। হিন্দুত্ববাদীরা শশাঙ্ককে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন দীর্ঘদিন ধরেই। বঙ্গাব্দের প্রবর্তক হিসাবে তার নাম প্রচারে নিয়ে আসাও সেই প্রচেষ্টারই অঙ্গ বলে মনে করা হয়।
ষষ্ঠ শতাব্দীর শেষ দিকে শশাঙ্ক ছিলেন গুপ্ত সাম্রাজ্যের অধীনে একজন সামন্ত রাজা। তবে পরে তিনি স্বাধীন ও সার্বভৌম গৌড়ভূমির শাসক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। রাজা শশাঙ্ক মারা গিয়েছিলেন ৬৩৭ বা ৬৩৮ খ্রিষ্টাব্দ নাগাদ। প্রায় ৪৫ বছর তিনি রাজত্ব করেছিলেন এবং তার রাজত্বকাল শুরুর সময় থেকেই, ৫৯৩ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গাব্দ চালু করা হয়। বঙ্গাব্দর সঙ্গে খ্রিস্টাব্দের ব্যবধানও ঠিক ৫৯৩ বছরের।
তবে শশাঙ্ক না আকবর কে বঙ্গাব্দ প্রচলন করেছিলেন, এ বিতর্কে সনাতনী সংস্কৃতি পরিষদের ব্যাখ্যার বিরোধিতা করছে ভাষা ও চেতনা সমিতি। তারাই সিকি শতক ধরে কলকাতায় রাতভর নববর্ষ বরণের অনুষ্ঠান এবং সকালে শোভাযাত্রা হয়ে আসছে শহরের সাংস্কৃতিক প্রাণকেন্দ্র বলে পরিচিত অ্যাকাডেমি চত্বরে। আবার ঢাকার আদলে দক্ষিণ কলকাতাতেও একটি মঙ্গল শোভাযাত্রা হচ্ছে বছর কয়েক ধরে।
সবথেকে পুরণো বর্ষবরণের অনুষ্ঠান আর শোভাযাত্রার আয়োজনকারী ভাষা ও চেতনা সমিতির প্রধান ইমানুল হক বলছেন, “বাঙালী হিসাবে গৌড়ের রাজা শশাঙ্কের জন্য আমরা গর্বিত ঠিকই, কিন্তু তিনি যে বঙ্গাব্দের প্রবর্তন করেছিলেন, এমন কোনও তথ্য কিন্তু ইতিহাসে পাওয়া যায় না। আর ইতিহাস তো ইতিহাসই, একটা তত্ত্ব জোর করে চাপানো হচ্ছে। ‘যদি শশাঙ্কই বঙ্গাব্দ প্রবর্তন করে থাকবেন, তাহলে তার যেসব ফলক বা শিলালিপি পাওয়া যায়, সেখানে তো তিনি বঙ্গাব্দের উল্লেখ করতেন! আবার সাহিত্যে যদি দেখেন, শ্রীকৃষ্ণবিজয় কাব্যের রচনাকার মালাধর বসু লিখছেন, তেরোশো পঁচানব্বই শকে হইল গ্রন্থ আরম্ভন, চতুর্দশ দুই শকে হইল সমাপন। এখানে শক মানে শকাব্দ। তখন যদি বঙ্গাব্দই চালু থাকবে, তাহলে তো তিনি শক না লিখে বঙ্গাব্দই লিখতেন,’ বলছিলেন ইমানুল হক। সূত্র: বিবিসি।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
জনপ্রিয় শো "ফ্যামিলি ফিউড বাংলাদেশ" এর বেভারেজ পার্টনার হিসেবে সানকুইকের আত্মপ্রকাশ
কিশোরগঞ্জে ওয়াজ মাহফিলে গুলি, আহত ২
সউদী আরবে চালু হল বিশ্বের দীর্ঘতম চালকবিহীন ট্রেন
মিয়ানমার সীমান্তে গোলার শব্দ, ফের রোহিঙ্গা ঢলের শঙ্কা
বাংলাদেশ সফরে কাতার নৌবাহিনী প্রধান
ছাগলকাণ্ডে আলোচিত সেই মতিউরের আরো ১২৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ
টাঙ্গাইলে ছাত্রলীগের কেক কাটার অভিযোগে পরিবহন শ্রমিক গ্রেপ্তার
কমলনগরের রেমিট্যান্স যোদ্ধার আবুধাবিতে মৃত্যু
ফুলপুরে ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য নগদ অর্থ ও উপকরণ বিতরণ
চবিতে পরীক্ষা দিতে এসে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের এক কর্মী আটক
আনসার ভিডিপি দেশপ্রেম, মানবিকতা ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রতীক
দেশে বেকার সংখ্যা ২৬ লাখ ৬০ হাজার
সোহাগ পরিবহনের হেলপার হত্যার দায়ে যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
তবে কি গোপনেই বিয়ে সেরে ফেললেন অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলা
সোনারগাঁওয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রাচীর নির্মাণ করে জমি দখল
কুমিল্লার মুরাদনগরে কৃষি জমি রক্ষায় প্রশাসনের মতবিনিময়
থাইল্যান্ডে হাতির আক্রমণে মর্মান্তিক মৃত্যু স্প্যানিশ পর্যটকের
মাদারীপুরে ইউপি সচিবকে ঘুষি মারলেন চেয়ারম্যান
৫০ বছরে পদার্পণ করল মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ
ভয়াবহ তুষার ঝড়ের কবলে যুক্তরাষ্ট্র