সিরিয়ার আসাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
০৬ মে ২০২৩, ০৮:৫৬ এএম | আপডেট: ০৬ মে ২০২৩, ০৮:৫৬ এএম
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যদিও ওয়াশিংটনের অনেক আরব মিত্র দামেস্কের সাথে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছে। -আল জাজিরা
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বরাত দিয়ে শনিবার (৫ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে না বলে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদির সঙ্গে ফোনকলে কথা বলেছেন।
এসময় সিরিয়া এবং তার আরব প্রতিবেশীদের মধ্যে আম্মানে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক বৈঠক নিয়ে আয়মান সাফাদির সঙ্গে আলোচনা করেন শীর্ষ এই মার্কিন কূটনীতিক।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন স্পষ্ট করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র আসাদ সরকারের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে না এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ২২৫৪ রেজোলিউশনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ, জাতিসংঘ-পরিচালিত রাজনৈতিক অগ্রগতি না হওয়া পর্যন্ত অন্যদের ক্ষেত্রেও সম্পর্ক স্বাভাবিককরণকে সমর্থন করবে না ওয়াশিংটন।’ নিরাপত্তা পরিষদের ২০১৫ সালের সেই প্রস্তাবে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সিরিয়ায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান জানানো হয়েছে। আল জাজিরা বলছে, সিরিয়া, মিশর, ইরাক, সৌদি আরব এবং জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা গত সোমবার জর্ডানের রাজধানী আম্মানে বাশার আল-আসাদের সরকারকে আবারও আরব ব্লকে ফিরিয়ে আনতে আলোচনার জন্য বৈঠক করেছেন।
২০১১ সালের সহিংসতার সময় বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর দমন-পীড়নের পর আরব লীগে সিরিয়ার সদস্যপদ স্থগিত করা হয়। সৌদি আরব-সহ বেশ কয়েকটি উপসাগরীয় রাষ্ট্র বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে লড়াইরত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দিতে শুরু করে। সেই সময় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ তার প্রধান মিত্র ইরান ও রাশিয়ার সহায়তায় সিরিয়ার অনেক অংশের ওপর নিয়ন্ত্রণ ফিরে পান। গত কয়েক মাস ধরে সৌদি আরব বলেছে, বাশারকে বিচ্ছিন্ন করে কোনও কাজ হচ্ছে না।
পরে উভয় পক্ষই কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় স্থাপনে রাজি হয়। এছাড়া সৌদি-সিরীয় সম্পর্ক পুনঃপ্রবর্তনকে আসাদের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য আরব রাষ্ট্রগুলোর পদক্ষেপের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। মূলত টানা ১১ বছর ধরে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছে। ২০১১ সালে সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদবিরোধী এক বিক্ষোভের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী ব্যবস্থার নেওয়ার মধ্য দিয়ে দেশটিতে যে সংঘাতের সূচনা হয়; সেটিই পরে গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়, যা এখনও চলছে।
এক দশকের এই সংঘাতে কমপক্ষে তিন লাখ ৮০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং দেশটির অর্ধেক জনগোষ্ঠীই বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। বিভিন্ন দেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে সিরিয়ার অন্তত ৬০ লাখ মানুষ।
সংবাদমাধ্যম বলছে, ইরান এবং রাশিয়ার সহায়তায় সিরিয়ার সরকার দেশের বড় অংশের ওপর নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার সাথে সাথে কিছু আরব দেশ দামেস্কের প্রতি তাদের অবস্থান নরম করতে শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য বলেছে, তারা সংঘাতের একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক নিষ্পত্তি ছাড়া বাশার আল-আসাদের বিষয়ে নিজেদের নীতি পরিবর্তন করবে না। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সিরিয়া ও বেশ কয়েকটি আরব দেশের মধ্যে সম্পর্ক বেশ উষ্ণ হয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ২০১১ সালের পর প্রথমবারের মতো দামেস্ক সফর করেন মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এছাড়া গত মাসে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও সিরিয়ার রাজধানী সফর করেন এবং বাশার আল-আসাদের সাথে দেখা করেন।
অবশ্য সিরীয় সরকার ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞার অধীনে রয়েছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা সিরিয়ার সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে মিত্রদের নিরুৎসাহিত করছে, তারপরও দেশটি বাশার আল-আসাদের সরকারের কাছাকাছি যাওয়া দেশগুলোকে কোনও শাস্তি দেয়নি। সংযুক্ত আরব আমিরাত উপসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হলেও দামেস্কে তার দূতাবাস পুনরায় চালু করেছে এবং এক দশকেরও বেশি আগে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে রাষ্ট্রীয় আতিথ্য দেওয়া প্রথম আরব রাষ্ট্রও হয়েছে এই দেশটি।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
একনেকে দুই হাজার কোটি টাকায় ১০ প্রকল্প অনুমোদন
ময়মনসিংহে সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে অস্ত্রসহ মাদক উদ্ধার
বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও রাজনীতি নিয়ে জাতীয় সেমিনার
লোহাগড়ায় কাঠ বোঝাই নসিমন উল্টে হেলপার নিহত
বাসার আল-আসাদ ও আসমা’র ডিভোর্সের সংবাদ প্রত্যাখ্যান রাশিয়ার
রাজশাহীতে সড়ক দূর্ঘটনায় মহানগরী জামায়াতের আমিরসহ আহত ৩
ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিদুৎস্পর্শে শ্রমিকের মৃত্যু
রাজশাহীতে ছাত্রীনিবাসে নি¤œমানের খাবার, গভীর রাতে রাস্তায় নেমে ছাত্রীদের বিক্ষোভ
কুমিল্লায় মুক্তিযোদ্ধাকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত
টিকটক-এ ৭ কোটি বারের বেশি দেখা হয়েছে স্বল্পদৈর্ঘ্যের ওয়েব সিরিজ ‘প্রেমের বিকাশ’
'সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নগরীর যানজট নিরসন করা হবে' ---বিভাগীয় কমিশনার মোখতার আহমেদ
অস্তিত্ব সংকটে ট্রাম্প টাওয়ারসহ ৩৫ বিলাসবহুল ভবন
রাজশাহী সীমান্তে গভীর রাতে বিএসএফের দফায় দফায় গুলি বর্ষন
আজীবন সন্মাননা পাচ্ছেন আবদুল হাদি-খুরশিদ আলম
প্রকৌশলীর দুর্নীতির ৮ প্রকল্পের ৭৫ লাখ টাকা আত্মসাতের সত্যতা পেয়েছে দুদক
পদ্মা সেতু হয়ে বেনাপোল-ঢাকা রুটে আগামীকাল ২৪ ডিসেম্বর যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু: যাত্রীদের মাঝে ব্যপক সাড়া
বাংলাদেশের কাছে ২০০ কোটি রুপি পায় ত্রিপুরা, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা
লক্ষ্মীপুরে দুই নারীকে পিটুনি, অভিযুক্ত যুবক গ্রেপ্তার
নওগাঁর রাণীনগরে জাতীয়তাবাদী প্রবাসী ঐক্য পরিষদের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত
বিনিয়োগ ‘ধ্বংসের’ অভিযোগে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনি ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি এস আলমের