বিতর্কিত হয়েও যে কারণে বার বার ক্ষমতায় ফিরেছেন বারলুসকোনি
১৩ জুন ২০২৩, ১২:২৪ পিএম | আপডেট: ১৩ জুন ২০২৩, ১২:২৪ পিএম
ইটালির সদ্য প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বারলুসকোনির বর্ণাঢ্য ব্যক্তিত্ব ইটালিয়ান ভোটারদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করেছিল। যে কারণে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি আর অনৈতিক আচরণের প্রচুর অভিযোগ অগ্রাহ্য করে তারা বার বার তার পেছনে দাঁড়িয়েছে।
চার চারবার তিনি ইটালির প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। প্রতিবারই মনে হয়েছিল এবারই বোধহয় তার রাজনৈতিক কেরিয়ার খতম। কিন্তু সমস্ত সন্দেহ আর সমালোচনাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে তিনি বারবার ক্ষমতায় ফিরেছেন। কর নিয়ে প্রতারণার দায়ে যে কোনো সরকারি ক্ষমতা থেকে তাকে নয় বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা ওঠার সাথে সাথেই ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ৮৬ বছর বয়সে তিনি ইটালির পার্লামেন্টে নির্বাচিত হন।
কিন্তু ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কেলেঙ্কারি তার পিছু ছাড়েনি। প্রায়ই দেখা যেত কম বয়সী সুন্দরী নারীরা তাকে ঘিরে রয়েছে। তার যৌন কেলেঙ্কারির নানা ঘটনা বিশ্বজুড়ে বহুবার শিরোনাম হয়েছে। কিন্তু তাতে তার সমর্থকরা তেমন টলেনি। বারলুসকোনি, যিনি সোমবার ৮৬ বছর বয়সে মারা যান, ইটালির বৃহত্তম মিডিয়া সাম্রাজ্যের কর্ণধার ছিলেন, ফুটবল ক্লাবের মালিক ছিলেন এবং সেইসাথে ছিল শত শত কোটি ডলারের ব্যবসা। কিন্তু তিনি কখনই রাজনীতি ছাড়েননি। কয়েক দশক ধরে তিনি ইটালির ভাবমূর্তি তৈরিতে বিশাল ভূমিকা রেখেছেন।
১৯৩৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর মিলানের একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম বারলুসকোনির। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় শহরের বাইরে একটি গ্রামে বড় হয়েছিলেন তিনি। কীভাবে টাকা বানাতে হয় সেই দক্ষতা তিনি ছাত্র জীবনেই বারবার দেখিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন পড়ার সময় ছাত্রদের একটি ব্যান্ড দলে ডাবল-ব্যাজ গিটার বাজাতেন। গানের গলাও ভালো ছিল। বিভিন্ন নৈশ ক্লাবে এবং প্রমোদ জাহাজে পয়সার বিনিময়ে গান গাইতেন।
ব্যবসায় তার আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বকে কাজে লাগানোর প্রথম নজির দেখা যখন ছাত্র জীবনেই ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের সেলসম্যানের কাজ শুরু করেন বারলুসকোনি। একইসাথে, তিনি তার বিশ্ববিদ্যালয়ে সতীর্থদের জন্য পয়সার বিনিময়ে অ্যাকাডেমিক রচনা-নিবন্ধ লিখে দিতেন। গ্রাজুয়েশন শেষ করেই তিনি এডিলনর্ড নামে একটি নির্মাণ কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন এবং মিলানের এক শহরতলীতে বিশাল এক অ্যাপার্টমেন্ট ভবন নির্মাণ করেন। ঐ প্রকল্পে কোথা থেকে তিনি টাকা পেয়েছিলেন তা এখনও রহস্য।
১৯৭৩ সালে বারলুসকোনি টেলিমিরানো নামে একটি স্থানীয় কেবল-টিভি কোম্পানি চালু করেন। ঐ কোম্পানি শুরুতে শুধু তার নির্মিত বিভিন্ন অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক বা ভবনে টিভি সার্ভিস দিত। চার বছর পর তিনি আরও দুটো কেবল টিভি স্টেশন চালু করেন। মিলানের কেন্দ্রে তৈরি করেন বিশাল এক টিভি স্টুডিও। বারলুসকোনির মিডিয়াসেট কোম্পানি এখন ইটালির সবচেয়ে বড় মিডিয়া সাম্রাজ্য। দেশের সবচেয়ে বড় বেসরকারি টিভি চ্যানেলের অনেকগুলোর মালিকানা এই মিডিয়াসেটের হাতে। ইটালির সবচেয়ে বড় প্রকাশনা সংস্থা মোন্ডাডোরির মালিকানাও মিডিয়াসেটের।
মৃত্যুর আগে বারলুসকোনি ইটালির শীর্ষ ধনীদের একজন হয়েছিলেন। তার পরিবার এখন এখন শত শত কোটি ডলারের মালিক। তার ছেলেমেয়েরা – মারিনা, বারবারা, পিয়ের সিলভিও, এলনোরা এবং লুইগি – সবাই বাবার ব্যবসা পরিচালনার সাথে জড়িত। কিছু সম্পদ তিনি তার শখের কিছু প্রকল্পে লাগিয়েছেন- যেমন তার শহরের ফুটবল ক্লাব এসি মিলানকে ১৯৮৬ সালে দেউলিয়াত্ব থেকে উদ্ধার করেছেন। অবশ্য তিন দশক পর ২০১৭ সালে সেই বিনিয়োগ থেকে তিনি অনেক মুনাফা করেছেন। সেবছর তিনি চীনা বিনিয়োগকারীদের কাছে ৭৪ কোটি ডলারে এসি মিলান ক্লাব বিক্রি করে দেন। তবে ফুটবল থেকে তিনি সরেননি। মনজা নামে ছোট একটি ফুটবল ক্লাব কিনে সেটিকে ইটালির শীর্ষ লীগ সিরি-আতে তুলে আনতে সমর্থ হন।
বারবার আদালতের মুখোমুখি হয়ে বারলুসকোনি যেভাবে তার জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছিলেন তার নজির বিরল। তিনি সবসময় বলে গেছেন তিনি প্রতিহিংসার শিকার। বিশেষ করে মিলানের সরকারি কৌসুলিদের তিনি দুষেছেন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত-ভাবে তার পেছনে লেগে থাকার জন্য। একবার তিনি বলেছিলেন ২০ বছরে ১০৬টি মামলায় তিনি ২৫০০ বার আদালতে হাজিরা দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে আদালতে আনা অভিযোগগুলোর মধ্যে ছিল – আত্মসাৎ, কর ফাঁকি, ভুয়া হিসাব দাখিল এবং একজন বিচারককে ঘুষ দেয়ার চেষ্টা। কয়েকবার তিনি অবশ্য মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন, অথবা উচ্চ আদালতে তার সাজা বাতিল হয়েছে।
পুরো রাজনৈতিক জীবন জুড়ে বিতর্ক-কেলেঙ্কারি তার পিছু ছাড়েনি। বারলুসকোনি সবচেয়ে কড় কেলেঙ্কারিতে জড়িয়েছিলেন সর্ব-শেষবার তিনি যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তিনি বাড়িতে কুখ্যাত “বুংগা বুংগা” পার্টি করেছিলেন যে অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। পরে তার বিরুদ্ধে ঐ ঘটনার একজন সাক্ষীকে মিথ্যা বলার জন্য পয়সা দেয়ার অভিযোগ ওঠে। এ বছর ফেব্রুয়ারিতে তিনি ঐ অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পান। ১৯৯৩ সালে অর্থাৎ ৩০ বছর আগে তিনি তার নিজের রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন, এবং ক্ষমতায় আসেন।
স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে একজন ফুটবল ফ্যানের দেওয়া একটি স্লোগানের অনুকরণে দলের নাম দেন ফোরজা ইটালিয়া (এগিয়ে যাও ইটালি)। সেসময় ইটালির ডান-পন্থী দলের ভেতর কিছু কেলেঙ্কারিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক শূণ্যতা চলছিল। সেই সুযোগে বাম-বিরোধী ভোটারদের কাছে বারলুসকোনি নিজেকে একজন বিকল্প হিসাবে তুলে ধরেন। নিজের টিভি চ্যানলগুলোতে চালানো ব্যাপক প্রচারণার কল্যাণে ১৯৯৪ সালের নির্বাচনে জিতে যান তিনি। তবে, অভিযোগ উঠতে থাকে ব্যবসায় বিভিন্ন দুর্নীতির অপরাধ থেকে বাঁচতে তিনি রাজনীতিতে ঢুকেছেন।
তবে এসব দাবী তিনি উড়িয়ে দেন। “ক্ষমতার জন্য আমার সরকারে যাওয়ার দরকার নেই। সারা পৃথিবীতে আমার বাড়িঘর রয়েছে, প্রমোদ তরী রয়েছে, প্রাইভেট বিমান রয়েছে, সুন্দরী বউ রয়েছে, চমৎকার একটি পরিবার রয়েছে। আমিতো আসলে আত্মত্যাগ করছি।“ ক্ষমতায় গিয়ে তিনি একটি আইন পাশ করেন যাতে ক্ষমতায় থাকাকালে তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা করা না যায়। তবে ইটালির সাংবিধানিক আদালত ঐ আইন পরে বাতিল করে দেয়।
বারলুসকোনির প্রথম কোয়ালিশন সরকার কমাস মাত্র টিকে ছিল। একটি কারণ ছিল -শরীক দলগুলোর মধ্যে শত্রুতা। তবে মিলানের একটি আদালতে তার বিরুদ্ধে কর ফাঁকির মামলা হলে তা নিয়েও জোটে বিরোধ তৈরি হয়। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে তিনি বামপন্থীদের কাছে হেরে যান। কিন্তু রাজনীতি থেকে তাকে হঠানো সম্ভব হয়নি। ২০০১ সালে তিনি আবার নির্বাচিত হন। ইটালির অর্থনীতির সংস্কার, কর আইন সহজ করা এবং পেনশন আয় বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি নির্বাচন লড়েন।
তবে নির্বাচনের পর ইটালির অর্থনৈতিক দুর্দশা বাড়তে থাকায় সেসব প্রতিশ্রুতি তিনি পূরণ করতে পারেননি। ২০০৬ সালে আবারও তিনি বামপন্থীদের কাছে হেরে যান। কিন্তু ২০০৮ সাল আবারও ক্ষমতায় ফিরে আসেন। ২০১১ সাল পর্যন্ত ইটালির রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন তিনি। তবে ২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তার ক্ষমতাকাল ছিল তার জন্য সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং সময়। ইউরোজোনের ঋণ সংকটে ইটালির অর্থনীতিও প্রচণ্ড চাপে পড়ে। বারলুসকোনির সমর্থন দ্রুত পড়তে থাকে। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ঐ বছরই তাকে এবং তার মন্ত্রীদের আইনি সুরক্ষা দিয়ে আনা আইনটি সাংবিধানিক আদালত বাতিল করে দেয়।
২০১১ সালের শেষদিকে তিনি ক্ষমতা হারান। ২০১২ সালের অক্টোবরে কর প্রতারণার মামলায় তার চার বছরের সাজা হয়, এবং কোনো সরকারি পদে তাকে নিষিদ্ধ করা হয়। বারলুসকোনি বলে গেছেন তিনি নিরপরাধ এবং “বিচারিক অভ্যুত্থানের” শিকার। কিন্তু ততদিনে তার বয়স ৭৫ ছাড়িয়ে যায়। ফলে কারাদণ্ডের বদলে তাকে কম্য্যুনিটি সার্ভিসে অর্থাৎ বিনা পয়সায় সামাজিক বিভিন্ন কল্যাণমুলক কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। মিলানের কাছে ডিমেনশিয়া রোগীদের একটি দাতব্য হোমে তিনি সপ্তাহে চার ঘণ্টা কাজ করতেন। সরকারি পদে তাকে নিষিদ্ধ করা হয় বলে অনেক বছর নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি তার পক্ষে।
রাজনীতির বাইরে তার ব্যক্তিগত জীবনাচরণ নিয়ে বহুবার সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন বারলুসকোনি। বারলুসকোনি কখনই সুন্দরী নারীদের প্রতি তার আকর্ষণ চেপে রাখতে পারেননি। তার সর্বশেষ বান্ধবী মার্তা ফাসিনা ছিলেন বয়সের তার ৫০ বছরের ছোট। প্লাস্টিক সার্জারি করে নিজের বয়স কম দেখানোর চেষ্টা করেছেন বারলুসকোনি। মাথায় কৃত্রিমভাবে চুল লাগিয়েছেন। তার দ্বিতীয় স্ত্রী ভেরোনিকা লারিওর সাথে তার সাক্ষাৎ হয় একটি স্টেজ নাটকের পর যে নাটকে ঐ নারী শরীরের ঊর্ধ্বাঙ্গ নগ্ন করে নেচেছিলেন। তবে ভেরোনিকা অনেকবারই তার স্বামীর নারী লোলুপতা নিয়ে ক্রোধ প্রকাশ করেছেন।
মডেল নেওমি লেতিজিয়ার ১৮তম জন্মদিনে তার সাথে বারলুসকোনির ছবি প্রকাশ হয়ে পড়লে ভেরোনিকা স্বামীকে তালাকনামা পাঠান। তবে বারলুসকোনি সবচেয়ে বড় নারী কেলেঙ্কারিতে জড়ান যখন তার বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত ভিলায় কুখ্যাত “বুংগা বুংগা পার্টি” আয়োজনের অভিযোগ ওঠে। সেসব পার্টিতে বহু নারীর সমাগত হতো। তেমন একটি পার্টিতে পয়সার বিনিময়ে অপ্রাপ্তবয়স্কা এক কিশোরীর সাথে যৌনকাজ করার জন্য তাকে দণ্ডিত করা হয়। পরে ফাঁস হয় যে ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় বারলুসকোনি চুরির অভিযোগে আটক ১৭ বছরের ঐ কিশোরী কারিমা এল মাহরুগকে ছেড়ে দিতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। অভিযোগ রয়েছে ঐ কিশোরী বারলুসকোনির এক বুংগা বুংগা পার্টিতে অতিথি ছিল।
ইটালিয়ান মিডিয়া খবর দিয়েছিল যে প্রধানমন্ত্রী দাবী করেছিলেন যে ঐ কিশোরী ছিল মিশরের প্রেসিডেন্টের ভাগ্নি। ফলে, কূটনৈতিক কোনো বিড়ম্বনা এড়াতে তিনি তাকে ছেড়ে দিতে বলেছিলেন। তবে ২০১৩ সালে ক্ষমতা অপব্যবহার এবং পয়সা দিয়ে ঐ কিশোরীর সাথে যৌন কাজের লিপ্ত হওয়ার জন্য দণ্ডিত হন বারলুসকোনি। পরের বছর অবশ্য সেই দণ্ডাদেশ উচ্চ আদালতে বাতিল হয়ে যায়। তবে পয়সা দিয়ে যৌনকাজের অভিযোগ বারলুসকোনি সবসময় অস্বীকার করেছেন। তিনি মন্তব্য করেছিলেন পয়সার বিনিময়ে নারী দেহ লাভে তার আগ্রহ নেই কারণ তাতে “মন জয়ের কোনো আনন্দ নেই।“ তবে তিনি এও বলেন তিনি কোনো “সাধু-সন্ত” নন।
নিজের বিভিন্ন কেলেঙ্কারি এবং সেইসাথে ইটালির অর্থনীতির সংকটে ২০১১ সালে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বারলুসকোনির জোট ‘পিপলস অব ফ্রিডম’ খুব খারাপ ফল করে। এমনকি নিজের শহর এবং তার ক্ষমতার ভিত্তি মিলানেও জোট হেরে যায়। কিন্তু তার ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা তাতে কমেনি। ২০১৩ সালের সাধারণ নির্বাচনে মাত্র এক শতাংশ ভোটের ব্যবধানে জোট হেরে যায়। জোট ভেঙ্গে যায়। পরে পুরনো নামে অর্থাৎ ফোরজা ইটালিয়া নামে নতুন আঙ্গিকে দল গঠনের ঘোষণা দেন তিনি।
তবে ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও ২০১৮ সালের নির্বাচনে ফোরজা ইটালিয়া তৃতীয় অবস্থানে ছিল। এমনকি প্রতিষ্ঠান বিরোধী দল ফাইভ স্টার এবং তাদেরই নির্বাচনী শরিক দি লিগের চেয়েও কম আসন পায় ফোরজা ইটালিয়া। নির্বাচনে ভালে ফল করে মাত্তেও সালভিনির দি লিগ ফোরজার সাথে জোট না করে এককভাবে ক্ষমতা গ্রহণের পথ নেয়। আরও একবার সন্দেহ দেখা দেয় যে বারলুসকোনির রাজনৈতিক কেরিয়ারের এবারই হয়তো ইতি ঘটছে।
কিন্তু ২০১৮ সালে একটি আদালত রায় দেয় যে তিনি আবারো সরকারি পদে আসীন হতে পারবেন। পরের বছরই অর্থাৎ ২০১৯ সালে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের আসনে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন তিনি। সহজেই সে নির্বাচনে তিনি জিতে যান। তিন বছর পর ২০২৩ সালে তিনি আবারো ইটালির পার্লামেন্টে নির্বাচিত হন। তার ফোরজা ইটালিয়া দল এখন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির ডানপন্থী কোয়ালিশনের একটি শরিক।
নানা দুর্নামের ভাগীদার পরিপাটি ব্যাক-ব্রাশ করা সিলভিও বিশ্বের অন্যতম পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছিলেন। তার মজা করার ধরণ নিয়েও বিস্তার সমালোচনা হয়েছে। একবার তিনি ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের এক জার্মান এমপি সম্পর্কে বলেছিলেন কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের (যেসব শিবির দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদিদের আটকে রাখা হতো) দারোয়ান হিসাবে তাকে মানাতো। মুসোলিনি সম্পর্কে বলেছিলেন তিনি ক্ষতিকারক ছিলেন না। পরে অবশ্য বারলুসকোনি বলেন এসব কথা তিনি ঠাট্টা করে বলেছিলেন।
তবে তিনি ভ্লাদিমির পুতিনের দীর্ঘদিনের বন্ধু ছিলেন, এবং রুশ সামরিক অভিযানের জন্য তিনি ইউক্রেনকে দায়ী করেছিলেন। তার সমালোচকরা বলেন ইটালির বৃহত্তম মিডিয়া গ্রুপের মালিক হওয়ায় রাজনীতি এবং নির্বাচনে বাড়তি ফায়দা লুটেছেন বারলুসকোনি। তবে তার ভোটাররা বলেছেন এতবড় ব্যবসা যে তিনি নিজের হাতে দাঁড় করিয়েছিলেন সেটাই প্রমাণ করে যে তিনি দেশে চালাতেও সক্ষম। বারলুসকোনি নিজে কখনই স্বীকার করেননি যে একইসাথে ব্যবসা ও রাজনীতি করায় তার নিজের কোনো লাভ হয়েছে। ‘আমি যেমন সবার স্বার্থ দেখেছি, সেইসাথে আমার নিজেরটাও দেখেছি। এখানে স্বার্থের দ্বন্দ্বের কোনো প্রশ্ন ওঠেনা।’ সূত্র: বিবিসি।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
পরিসংখ্যান ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক শরিফুলের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ
আ.লীগের দোসর সালাম আলী এখন বিএনপির সভাপতি প্রার্থী!
ঘুস নেওয়ার অভিযোগ, টিউলিপ সিদ্দিককে যুক্তরাজ্যে জিজ্ঞাসাবাদ
তালাক নিয়ে যুক্তরাজ্যে যেতে চান বাশার আল-আসাদের স্ত্রী
গভীর রাতে মেসে ছাত্রীদের বিক্ষোভ, মালিকের দুই ছেলেকে পুলিশে সোপর্দ
প্রোটিয়াদের হোয়াইট ওয়াশ করে পাকিস্তানের ইতিহাস
৯ গোলের উৎসবে লিভারপুলের বড় জয়
বড়দিনের ছুটির আগে রিয়ালের বড় জয়
ঘরের মাঠেই বিধ্বস্ত ইউনাইটেড
গোলশূন্য ড্রয়ে থামল চেলসির জয়রথ
এনার্জিপ্যাকের বার্ষিক সাধারণ সভায় ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ
আমার খাবার কি ফর্টিফায়েড?
হাসিনা পরিবারের নামে ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি তাকিয়ে আছে সরকারের দিকে
ব্র্যাক ব্যাংকের রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন
দিনাজপুর জেলা শিক্ষা অফিসারের বিদায়ী সংবর্ধনা
নরসিংদীর শিবপুরে প্লাস্টিক কারখানা আগুনে পুড়ে ছাই
ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স শূন্য যে ১০ ব্যাংকে
বিএনপি নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় আসতে চায় না: আব্দুস সালাম
সরকারের আশ্বাসে শাহবাগ থেকে সরে গেলেন বিএসএমএমইউ ট্রেইনি চিকিৎসকরা
সাকাকে হারিয়ে চিন্তিত আর্সেনাল কোচ