আফগানিস্তানে পঙ্গপালের হানা, হাজার হাজার একর ফসলের ক্ষেত সাবাড়

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

১৬ জুন ২০২৩, ০৪:৫৩ পিএম | আপডেট: ১৬ জুন ২০২৩, ০৪:৫৩ পিএম

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে হানা দিয়েছে পঙ্গপাল। একটার পর একটা খেয়ে ফেলছে ফসলের ক্ষেত। এভাবে এরই মধ্যে সাবাড় করে ফেলেছে হাজার হাজার একর ক্ষেত। এর ফলে দারিদ্রপীড়িত দেশটিতে খাদ্য ঘাটতি চরম রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের যে অঞ্চল ‘রুটির ঝুড়ি’ বলে পরিচিত সেই উত্তরাঞ্চলের অন্তত ৮টি প্রদেশ এরই মধ্যে পঙ্গপালে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে বলখ প্রদেশও রয়েছে।

এমনিতেই এই অঞ্চলে পানির অভাব। এর মধ্যেও কষ্ট করে গম চাষ করেছিলেন কৃষকরা। কিন্তু সব আশা নিরাশায় পর্যবসিত হয়েছে। ধূসর রঙের একপ্রকার পোকায় পুরো অঞ্চল ছেয়ে গেছে।

কোনো এলাকায় ফসল খেয়ে ফেলার পরই পঙ্গপাল সেই এলাকায় ডিম পাড়ে। পরবর্তী বসন্তে সেই ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। এভাবে একটি চক্রের আকারে পঙ্গপালের দল বারবার ফিরে আসে।
আফগানিস্তান ইতোমধ্যেই দারিদ্র্যের মধ্যে রয়েছে। প্রতি ১০টা পরিবারের ৯টি পরিবারেই খাবার সংকট। এর মধ্যে এভাবে ফসল নষ্ট হলে খাদ্য সংকট আরও ভয়াবহ হতে পারে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে ও ছবিতে কৃষকদের পঙ্গপাল আটকানোর মরিয়া চেষ্টা ফুটে উঠেছে। বলখের কান্দলি গ্রামের এক জনপ্রতিনিধি বাজ মোহাম্মদ বলেছেন, শুধু গমই নয়, পঙ্গপালে সব ধরনের শস্যই খেয়ে ফেলছে। এতে সমস্ত প্রদেশেই কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
আফগানিস্তানে হানা দেয়া এই পঙ্গপালকে ‘মরক্কান লোকাস্ট’ বলে চিহ্ণিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এই ধূসর রঙের ফড়িংয়ের মতো পোকাগুলো বিশ্বের সবচেয়ে সর্বভূক পোকাগুলোর অন্যতম। এই পঙ্গপাল ঠেকাতে কৃষকদের অনেকে বড় জাল ব্যবহার করছেন। এভাবে ধরে ধরে মাটিতে পুঁতে ফেলছেন।
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে কখনই পঙ্গপালদের রোখা সম্ভব নয়। কারণ তাদের মৃত্যুর তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি হারে বংশবৃদ্ধি হচ্ছে। তবে আধুনিক প্রযুক্তি না থাকায় জালই ভরসা।

আফগানিস্তানে এবার নিয়ে টানা তৃতীয় বছর খরা চলছে। গত মার্চ থেকে সেখানে বেশিরভাগ প্রদেশেই কোনও বৃষ্টিপাত হয়নি। এক কৃষকের আক্ষেপ, অন্তত বৃষ্টি হলে পঙ্গপালের উপদ্রব কমত। কিন্তু সেই উপায়ও নেই।
আফগানিস্তানে পঙ্গপালের হানায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি বিষয় সংস্থা এফএও। সংস্থাটির মতে, পঙ্গপালের আক্রমণের কারণে এ বছর দেশটিতে ১২ লাখ টন গম কম উৎপাদন হতে পারে। যার ফলে আর্থিক ক্ষতি হতে পারে ৪৮ কোটি ডলার।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

পাকিস্তানে সামরিক আদালতে ২৫ বেসামরিক ব্যক্তির সাজায় উদ্বিগ্ন ইইউ
মার্কিন বিমানবাহী রণতরী হামলা হুথিদের, যুদ্ধবিমান ভূপাতিত
বাসার আল-আসাদ ও আসমা’র ডিভোর্সের সংবাদ প্রত্যাখ্যান রাশিয়ার
সাধারণ ক্ষমার বিনিময়ে দোষ স্বীকার করছেন আসাদের সৈন্যরা
অস্তিত্ব সংকটে ট্রাম্প টাওয়ারসহ ৩৫ বিলাসবহুল ভবন
আরও

আরও পড়ুন

বিডিআর হত্যাকাণ্ড তদন্তে ৭ সদস্যের কমিশনে যারা আছেন

বিডিআর হত্যাকাণ্ড তদন্তে ৭ সদস্যের কমিশনে যারা আছেন

‘বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন’-এ বারের অন্তর্ভুক্তিকরণ প্রস্তাব

‘বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন’-এ বারের অন্তর্ভুক্তিকরণ প্রস্তাব

সোনারগাঁওয়ে বাস-অ্যাম্বুলেন্সের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১০

সোনারগাঁওয়ে বাস-অ্যাম্বুলেন্সের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১০

মামলা রেকর্ড করতে ঘুষ গ্রহণ, কুষ্টিয়ায় ওসি ও এসআই ক্লোজ

মামলা রেকর্ড করতে ঘুষ গ্রহণ, কুষ্টিয়ায় ওসি ও এসআই ক্লোজ

কুমিল্লায় বীর মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় জামায়াতের ২ কর্মী বহিষ্কার

কুমিল্লায় বীর মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় জামায়াতের ২ কর্মী বহিষ্কার

পতিত আওয়ামী স্বৈরাচারের গত ১৭ বছরের নির্যাতন ভুলে যাবার সুযোগ নেই: আমিনুল হক

পতিত আওয়ামী স্বৈরাচারের গত ১৭ বছরের নির্যাতন ভুলে যাবার সুযোগ নেই: আমিনুল হক

পাবনা ব্যাপ্টিস্ট চার্চে প্রাক বড়দিন উৎসব অনুষ্ঠিত

পাবনা ব্যাপ্টিস্ট চার্চে প্রাক বড়দিন উৎসব অনুষ্ঠিত

পূর্বধলায় শীতার্ত মানুষের মাঝে ইসলামী যুব আন্দোলনের কম্বল বিতরণ

পূর্বধলায় শীতার্ত মানুষের মাঝে ইসলামী যুব আন্দোলনের কম্বল বিতরণ

ধর্ম-বর্ণ নয়, সমান মর্যাদায় হোক নাগরিক পরিচয়: জোনায়েদ সাকি

ধর্ম-বর্ণ নয়, সমান মর্যাদায় হোক নাগরিক পরিচয়: জোনায়েদ সাকি

এসবিএসি ব্যাংকের শরিয়াহ্ সুপারভাইজরি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

এসবিএসি ব্যাংকের শরিয়াহ্ সুপারভাইজরি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

আ.লীগের হাতেও নির্যাতিত হয়েছিলেন সেই মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু তুলে ধরেনি গণমাধ্যম!

আ.লীগের হাতেও নির্যাতিত হয়েছিলেন সেই মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু তুলে ধরেনি গণমাধ্যম!

ভারত বাংলাদেশ থেকে বস্তা বস্তা টাকা লুট করেছে : দুদু

ভারত বাংলাদেশ থেকে বস্তা বস্তা টাকা লুট করেছে : দুদু

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে সিটিজেন’স চার্টার অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে সিটিজেন’স চার্টার অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত

মতিঝিলে বিশ্বমানের ডায়াগনস্টিক সেবা প্রদান শুরু আইসিডিডিআর,বি’র

মতিঝিলে বিশ্বমানের ডায়াগনস্টিক সেবা প্রদান শুরু আইসিডিডিআর,বি’র

স্বামীর অগোচরে স্ত্রী অন্য কারও সাথে কথা বলা প্রসঙ্গে?

স্বামীর অগোচরে স্ত্রী অন্য কারও সাথে কথা বলা প্রসঙ্গে?

চাঁদপুর মেঘনায় মালবাহী জাহাজে ৭ জনকে কুপিয়ে হত্যা, গুরুতর আহত ১

চাঁদপুর মেঘনায় মালবাহী জাহাজে ৭ জনকে কুপিয়ে হত্যা, গুরুতর আহত ১

পতিত স্বৈরাচার হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি

পতিত স্বৈরাচার হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি

যাকাত বোর্ডের ১১ কোটি টাকা বিতরণের প্রস্তাব অনুমোদিত

যাকাত বোর্ডের ১১ কোটি টাকা বিতরণের প্রস্তাব অনুমোদিত

১৬ বছরে নির্বাচন ব্যবস্থা নির্বাসনে চলে গিয়েছিল : সংস্কার কমিশন প্রধান

১৬ বছরে নির্বাচন ব্যবস্থা নির্বাসনে চলে গিয়েছিল : সংস্কার কমিশন প্রধান

জিনিসের দাম একবার বাড়লে কমানো কঠিন: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

জিনিসের দাম একবার বাড়লে কমানো কঠিন: পরিকল্পনা উপদেষ্টা