বাইডেন-মোদীর আসন্ন বৈঠক কেন এত গুরুত্বপূর্ণ
২০ জুন ২০২৩, ০১:০২ পিএম | আপডেট: ২০ জুন ২০২৩, ০১:০২ পিএম
আগামী ২২শে জুন (বৃহস্পতিবার) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমেরিকায় এমন একটি বিরল সম্মান পেতে চলেছেন, যা তাকে প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিত্ব উইনস্টন চার্চিল বা নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে এক কাতারে বসিয়ে দেবে। সে দিনই দুপুরে মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে দ্বিতীয়বারের মতো ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদীর – যে গৌরব চার্চিল, ম্যান্ডেলা বা হাল আমলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ছাড়া আর কেউই পাননি।
শুধু তাই নয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফার্স্ট লেডি ড: জিল বাইডেনের আমন্ত্রণে মোদীর এই সফরে তাকে একাধিকবার হোয়াইট হাউসে আপ্যায়িত করা হবে। নরেন্দ্র মোদীর সম্মানে বাইডেন দম্পতি শুধু বিশেষ নৈশভোজই দিচ্ছেন না, প্রেসিডেন্ট তার সঙ্গে একান্তে ও প্রতিনিধিপর্যায়ে একাধিকবার বৈঠকেও বসছেন। দিল্লি ও ওয়াশিংটনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই সফরকে ভারত যে একটি ‘মাইলস্টোন মোমেন্ট’ বলে বর্ণনা করছে - তাতে তাই অবাক হওয়ার কিছু নেই।
আন্তর্জাতিক সাময়িকী ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ও এই আসন্ন সফরের পটভূমিতে লিখেছে, ‘ভারত যদিও পশ্চিমাদের পছন্দ করে না, আমেরিকার কাছে আজ তারা অপরিহার্য’ – আর এই সফরে তারই প্রতিফলন ঘটতে চলেছে। দ্য ওয়াশিংটন পোস্টও মন্তব্য করেছে, চীনের বিরুদ্ধে একটি ‘প্রতিরোধ’ (বুলওয়ার্ক) গড়ে তোলার জন্য ভারতকে আমেরিকার আজ যে জরুরি প্রয়োজন – ততটা আগে কখনোই ছিল না।
বস্তুত এর আগে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক স্তরে অন্তত ছ'বার প্রধানমন্ত্রী মোদী আমেরিকা সফর করেছেন – কিন্তু এটাই হতে যাচ্ছে সে দেশে তার প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর, যা ধারে ও ভারে তার আগেকার সফরগুলোর চেয়ে অনেক বেশি ওজনদার ও গুরুত্বপূর্ণ। ফলে আগামী ২১ থেকে ২৩ জুন, আমেরিকায় নরেন্দ্র মোদীর তিন দিনব্যাপী এই সফরের দিকে শুধু ভারত বা আমেরিকা নয়, নজর থাকবে গোটা আন্তর্জাতিক বিশ্বেরই।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াটরা সোমবার দিল্লিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মোদীর এই সফরের আলোচ্যসূচীতে কী কী থাকতে পারে, তার একটি সম্ভাব্য রূপরেখা তুলে ধরেছেন। তিনি জানান, ভারত ও আমেরিকার মধ্যে রাজনৈতিক স্তরে ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতার একটা প্রভাব অবশ্যই এই সফরে পড়বে – এবং নরেন্দ্র মোদী ও জো বাইডেনের মধ্যে ব্যক্তিগত স্তরেও একটা ‘লিডারশিপ কানেক্ট’ গড়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে। দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবে তিনটি বিষয় – বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে যে সব বিষয়ে সমঝোতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তার মধ্যে একটি হল ১৮০ কোটি ডলারের ১৮টি প্রিডেটর-বি আর্মড ড্রোন ক্রয় সংক্রান্ত। আমেরিকার তৈরি এই ড্রোনগুলি দুর্গম সীমান্ত বা সামুদ্রিক এলাকায় দূর পাল্লাতেও নিখুঁত লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে এবং নজরদারি চালাতে পারে। এর পাশাপাশি, যৌথভাবে যুদ্ধবিমানের (ফাইটার জেট) ইঞ্জিন বানানোর জন্য দুই দেশের মধ্যে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তিও স্বাক্ষরিত হতে পারে।
এই চুক্তি সম্পাদিত হলে ম্যাসাচুসেটসের এ্যারোস্পেস ম্যানুফ্যাকচারিং জায়ান্ট জেনারেল ইলেকট্রিক কোম্পানি (জিই) ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত হিন্দুস্থান এরোনটিকস লিমিটেডের (হ্যাল) সঙ্গে মিলে তেজস লাইট এয়ারক্র্যাফটের ইঞ্জিন বানাতে পারবে। ভারতে যে সব সংস্থা প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরি করে থাকে, এসব সমঝোতার প্রত্যাশায় সেই সব সংস্থার অনেকগুলোর শেয়ার দর ইতিমধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে।
অনেকটা এই কারণেই ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ লিখেছে, ভারতের সঙ্গে আমেরিকা এই সব প্রতিরক্ষা চুক্তি করতে মরিয়া বলেই ইউক্রেন কিংবা ভারতে গণতন্ত্রের অধোগতি নিয়ে মোদীর সফরে তারা নীরব থাকবে। তাদের ভাষায়, “তেলের জন্য তৃষ্ণার্ত ভারত যেভাবে রাশিয়ার যুদ্ধ-অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে, চীন ছাড়া অন্য কোনও দেশ ততটা করেনি। গণতান্ত্রিক স্বাধীনতার র্যাঙ্কিংয়েও ভারত যতটা নিচে নেমেছে, ততটা খুব কম দেশই নেমেছে।” কিন্তু তার পরেও নরেন্দ্র মোদী ওয়াশিংটনে রাজসিক অভ্যর্থনা পাবেন এবং সেই উচ্ছ্বাসে এই সব অস্বস্তিকর প্রসঙ্গের অবতারণা হবে না – দ্য ইকোনমিস্ট সেই পূর্বাভাসও সেরে রেখেছে।
ওয়াশিংটন পোস্টও পাশাপাশি মনে করিয়ে দিচ্ছে, ‘এই সফরে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই সর্বশক্তিতে চেষ্টা করতে হবে, কিন্তু সে দেশে মোদীর শাসনামলে গণতন্ত্রের যে অধ:পতন হয়েছে সেটা নিয়ে চুপ থাকাটাও সমীচীন হবে না।’ সূত্র: বিবিসি।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বড়দিনের ছুটির আগে রিয়ালের বড় জয়
ঘরের মাঠেই বিধ্বস্ত ইউনাইটেড
গোলশূন্য ড্রয়ে থামল চেলসির জয়রথ
এনার্জিপ্যাকের বার্ষিক সাধারণ সভায় ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ
আমার খাবার কি ফর্টিফায়েড?
হাসিনা পরিবারের নামে ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি তাকিয়ে আছে সরকারের দিকে
ব্র্যাক ব্যাংকের রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন
দিনাজপুর জেলা শিক্ষা অফিসারের বিদায়ী সংবর্ধনা
নরসিংদীর শিবপুরে প্লাস্টিক কারখানা আগুনে পুড়ে ছাই
ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স শূন্য যে ১০ ব্যাংকে
বিএনপি নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় আসতে চায় না: আব্দুস সালাম
সরকারের আশ্বাসে শাহবাগ থেকে সরে গেলেন বিএসএমএমইউ ট্রেইনি চিকিৎসকরা
সাকাকে হারিয়ে চিন্তিত আর্সেনাল কোচ
৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব জমা হবে : বদিউল আলম মজুমদার
সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বদলী
মানিকগঞ্জের ঘিওরে ছাত্রদল নেতা লাভলু হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
বঙ্গবাজার পুড়ে যাওয়া মামলায় একজন গ্রেফতার
জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধীর গতিতে চলছে: আমিনুল হক
জমকালো আয়োজনে পালিত হলো বান্দরবান সেনাবাহিনীর ৬৯ ব্রিগেডের ৪৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ