এবার ক্যালিফোর্নিয়ার ভারতীয় দূতাবাসে খালিস্তানিদের আগুন
০৫ জুলাই ২০২৩, ০৯:৫৫ এএম | আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৩, ০৯:৫৫ এএম
আমেরিকার সানফ্রান্সিসকোতে ভারতের দূতাবাসে সন্দেহভাজন খালিস্তানি সমর্থকরা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করার পর মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেই ঘটনার কড়া নিন্দা করেছে।
এদিকে কানাডার টরন্টোতে খালিস্তানিরা একটি ‘ফ্রিডম র্যালি’র ডাক দেয়ার পর দিল্লিতে কানাডার রাষ্ট্রদূতকে তলব করে ভারত সরকার তারও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
ভারতের পাঞ্জাবে ‘খালিস্তান’ নামে শিখদের পৃথক রাষ্ট্র গঠনের দাবিকে যারা সমর্থন করেন, বিদেশের মাটিতে তাদের যেসব তৎপরতা ভারতকে তীব্র অস্বস্তিতে ফেলছে এগুলো তাতে সবশেষ সংযোজন।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর গতকালই (সোমবার) মন্তব্য করেছেন, ‘মৌলবাদী ও উগ্রপন্থী’ খালিস্তানি আদর্শবাদ ভারতের জন্য যেমন ভালো নয় – তেমনি ভারতের মিত্র দেশ আমেরিকা, ব্রিটেন, কানাডা বা অস্ট্রেলিয়ার জন্যও ভালো নয়।
ওই চারটি দেশেই সম্প্রতি ভারতের দূতাবাস বা মিশনগুলো কয়েকবার খালিস্তানিদের হামলার মুখে পড়েছে।
সানফ্রান্সিসকোর ঘটনায় গত শনিবার রাতে (ভারতীয় সময় রোববার সকালে) ভারতীয় কনস্যুলেটে একদল খালিস্তানি হঠাৎই হামলা চালায় বলে অভিযোগ। তারা দূতাবাসের একটি অংশে আগুনও ধরিয়ে দেয়।
তবে বার্তা সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, সানফ্রান্সিসকো ফায়ার ডিপার্টমেন্ট খুব দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিভিয়ে ফেলায় বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ছুটির দিন হওয়ায় দূতাবাসের কর্মীরাও তখন কেউ কনস্যুলেট ভবনে ছিলেন না।
পরে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, ‘সানফ্রান্সিসকোর ভারতীয় কনস্যুলেটে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টাকে আমেরিকা কঠোর ভাষায় নিন্দা জানায়।’
বিদেশের কোনো দূতাবাস প্রাঙ্গণে বা বিদেশী কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের হামলাকে আমেরিকা যে গুরুতর ‘ফৌজদারি অপরাধ’ বলে গণ্য করে, সে কথাও মনে করিয়ে দেন তিনি।
নিজ্জর হত্যার সাথে সংযোগ?
সানফ্রান্সিসকোর ওই ঘটনার পর আমেরিকায় দক্ষিণ এশীয়দের মধ্যে জনপ্রিয় একটি কমিউনিটি টিভি চ্যানেল যে ফুটেজ প্রচার করেছে, তাতে প্রশ্ন উঠেছে কানাডায় সম্প্রতি একজন খালিস্তানি নেতার রহস্যজনক হত্যার সাথে এই ঘটনার কোনো সম্পর্ক আছে কি না।
‘দিয়া টিভি’ নামে ওই চ্যানেলটি সোশ্যাল মিডিয়াতেও যে ভিডিও শেয়ার করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে ভারতীয় কনস্যুলেটে আগুন জ্বলছে – আর তার ওপর সুপারইম্পোজ করে লেখা ‘ভায়োলেন্স বেগেটস ভায়োলেন্স’ (অর্থাৎ হিংসা শুধু হিংসাই ডেকে আনে)।
দিয়া টিভির ওই ভিডিওতে খবরের কাগজের ক্লিপিংও ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে খালিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যার খবর দেয়া হয়েছিল।
এর আগে গত ১৯ জুন কানাডার সারে-তে একটি গুরদোয়ারার পার্কিং লটে কে বা কারা খালিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরকে গুলি করে হত্যা করে।
হরদীপ সিং নিজ্জর ভারত সরকারের কাছে একজন ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ উগ্রবাদী হিসেবে চিহ্নিত ছিলেন – তিনি ‘খালিস্তান টাইগার ফোর্স’ বা কানাডাতে ‘শিখস ফর জাস্টিসে’র (এসএফজে) মতো একাধিক সংগঠনেরও প্রধান ছিলেন।
৪৬ বছর বয়সী নিজ্জর মূলত পাঞ্জাবের জলন্ধরের বাসিন্দা হলেও বহু বছর তিনি ভারতে আসেননি।
ভারত সরকার কানাডার কর্তৃপক্ষের কাছে এর আগে অভিযোগ জানিয়েছিল, বব্বর খালসা ইন্টারন্যাশনাল (বিকেআই) নামে খালিস্তান-সমর্থক যে ‘উগ্রবাদী গোষ্ঠী’টি কানাডাতে দীর্ঘকাল ধরে সক্রিয়, তাদের হয়েও প্রচুর অর্থ সংগ্রহ করতেন হরদীপ সিং নিজ্জর।
এই হত্যাকাণ্ডে ভারতের গোয়েন্দা বাহিনীর হাত থাকতে পারে, বিদেশের কোনো কোনো খালিস্তানি সংগঠন এমন সন্দেহও প্রকাশ করেছে।
সোশ্যাল মিডিয়াতেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তবে ভারত সরকার এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
বিবাদে টরন্টোর ‘ফ্রিডম র্যালি’ও
এদিকে কানাডার টরন্টোতে আগামী শনিবার (৮ জুলাই) খালিস্তান সমর্থকরা যে ফ্রিডম র্যালি বা স্বাধীনতা মিছিলের ডাক দিয়েছেন তাকে কেন্দ্র করেও ভারত ও কানাডার মধ্যে কূটনৈতিক বিরোধ দেখা দিয়েছে।
ওই ফ্রিডম র্যালির সমর্থনে অনলাইনে যেসব পোস্টার ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে তাতে হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যাকাণ্ডের জন্য সরাসরি ভারত সরকারকে দায়ী করা হয়।
কানাডায় ভারতের হাইকমিশনার সঞ্জয় কুমার ভার্মা, ভ্যাঙ্কুভারের কনসাল জেনারেল মনীশ ও টরন্টোর কনসাল জেনারেল অপূর্বা শ্রীবাস্তবের ছবিও পোস্টারে ছাপা হয়েছে, সাথে তাদের প্রতি প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারির বার্তা।
এরপরই সোমবার রাতে দিল্লিতে কানাডার রাষ্ট্রদূত ক্যামেরন ম্যাককেওভকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে ওই ‘ফ্রিডম র্যালি’র বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়।
কানাডাতে নিযুক্ত ভারতের কূটনীতিবিদরা যে তাদের ওপর শারীরিক হামলারও আশঙ্কা করছেন, হাইকমিশনারকে বলা হয় সে কথাও।
এরপরই কানাডা সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে, ফ্রিডম র্যালির সমর্থনে যেসব পোস্টার দেয়া হয়েছে তা আদৌ মেনে নেয়া যায় না।
কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি ভারতীয় সময় মঙ্গলবার (৩ জুলাই) সকালে টুইট করেন, ‘ভিয়েনা কনভেনশনের আওতায় বিদেশী কূটনীতিবিদেদর নিরাপত্তা বিধান করার যে দায়িত্ব, কানাডা সরকার সেটাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়।’
ভারতের কর্মকর্তাদের সাথেও তারা বিষয়টি নিয়ে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রেখে চলেছেন বলে জানান মেলানি জোলি।
তবে খালিস্তান সমর্থকরা কানাডাতে যেভাবে আশ্রয়-প্রশ্রয় পাচ্ছেন বলে ভারত মনে করে, সেটা যে দিল্লির আদৌ পছন্দ নয় সাম্প্রতিক অতীতেও তা বহুবার কানাডা সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে তারা। সূত্র : বিবিসি
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বড়দিনের ছুটির আগে রিয়ালের বড় জয়
ঘরের মাঠেই বিধ্বস্ত ইউনাইটেড
গোলশূন্য ড্রয়ে থামল চেলসির জয়রথ
এনার্জিপ্যাকের বার্ষিক সাধারণ সভায় ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ
আমার খাবার কি ফর্টিফায়েড?
হাসিনা পরিবারের নামে ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি তাকিয়ে আছে সরকারের দিকে
ব্র্যাক ব্যাংকের রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন
দিনাজপুর জেলা শিক্ষা অফিসারের বিদায়ী সংবর্ধনা
নরসিংদীর শিবপুরে প্লাস্টিক কারখানা আগুনে পুড়ে ছাই
ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স শূন্য যে ১০ ব্যাংকে
বিএনপি নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় আসতে চায় না: আব্দুস সালাম
সরকারের আশ্বাসে শাহবাগ থেকে সরে গেলেন বিএসএমএমইউ ট্রেইনি চিকিৎসকরা
সাকাকে হারিয়ে চিন্তিত আর্সেনাল কোচ
৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব জমা হবে : বদিউল আলম মজুমদার
সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বদলী
মানিকগঞ্জের ঘিওরে ছাত্রদল নেতা লাভলু হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
বঙ্গবাজার পুড়ে যাওয়া মামলায় একজন গ্রেফতার
জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধীর গতিতে চলছে: আমিনুল হক
জমকালো আয়োজনে পালিত হলো বান্দরবান সেনাবাহিনীর ৬৯ ব্রিগেডের ৪৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ