২০ বছরের মধ্যে প্রথমবার কোন নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করল সিঙ্গাপুর

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

২৮ জুলাই ২০২৩, ০৬:২৬ পিএম | আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৩, ০৬:২৬ পিএম

সিঙ্গাপুর শুক্রবার প্রায় ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো একজন মহিলার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে বলে দেশটির কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। সিঙ্গাপুরের নাগরিক সারিদেউই জামানি (৪৫) নামের ওই মহিলা ২০১৮ সালে ৩০ গ্রাম হেরোইন পাচারের জন্য দোষী সাব্যস্ত হন।

তিনি হচ্ছেন সিঙ্গাপুরে মাদক মামলায় দণ্ডিত মোহাম্মদ আজিজ বিন হুসেনের পরে এ সপ্তাহে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দ্বিতীয় আসামী। এবং ২০২২ সালের মার্চ থেকে ১৫ তম। আগামী সপ্তাহে আরও একটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কথা রয়েছে সিঙ্গাপুরে।

সংবাদসংস্থা এপি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার ভোরে বছর জামানিকে ফাঁসিতে ঝোলায় সেদেশের কারা কর্তৃপক্ষ। ২০১৮-য় হেরোইন পাচারের সময় হাতে নাতে ধরা পড়ে ওই মহিলা। তার থেকে ৩১ গ্রাম ডায়মরফিন উদ্ধার করে সেন্ট্রাল নারকোটিক্স ব্যুরো। এ পরিমাণ হেরোইন এক সপ্তাহের মধ্যে ৩৭০ জনকে মাদকাশক্তে পরিণত করতে পারে বলে জানা গিয়েছে।

উল্লেখ্য, দু’দিনে আগেই মাদক পাচার মামলায় ৫৬ বছর বয়সী হুসেনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে সিঙ্গাপুর সরকার। তার থেকে ৫০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার হয়েছিল। আজিজ ও জামানি একই গ্যাংয়ের হয়ে কাজ করতেন কিনা, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়।

সিঙ্গাপুরের আইন অনুযায়ী, ৫০০ গ্রাম গাঁজা ও ১৫ গ্রাম হেরোইন পাচারের ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের সংস্থান রয়েছে। সেই আইন মেনেই আজিজ ও জামানির প্রাণদণ্ডের শাস্তি চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করে সিঙ্গাপুরের সেন্ট্রাল নারকোটিক্স ব্যুরো। তবে তাদের প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছিল।

২০২২-এ মাদক পাচারের অপরাধে ফাঁসির সাজা কার্যকরের সংখ্যা বাড়িয়েছে সিঙ্গাপুর সরকার। মানবাধিকার সংগঠনগুলির দাবি, গত এক বছরে মোট ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কার্যকর করেছে প্রশাসন। অর্থাৎ গড়ে মাসে একজন করে ফাঁসিতে ঝোলানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন তারা। এ আইন প্রত্যাহারের জন্য সিঙ্গাপুর সরকারকে অনুরোধ করেছে জাতিসংঘ।

প্রসঙ্গত, ২০০৪-এ শেষবার সিঙ্গাপুরে কোনও মহিলা মাদক পাচারকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। বছর ৩৬-র সেই তরুণীর নাম ছিল ইয়েন মে উয়েন। হেয়ারড্রেসার হিসেবে কাজ করত সে। এর ফাঁকে ফাঁকেই চলত মাদক পাচার। তখনই একদিন ধরা পড়ে যায় উয়েন।

সিঙ্গাপুর সরকারের দাবি, মাদকের প্রভাব থেকে দেশকে বাঁচাতে কড়া আইন প্রয়োজন। সেই কারণেই মৃত্যুদণ্ডের সাজা বন্ধ করা সম্ভব নয়। অর্থনৈতিকভাবে সিঙ্গাপুর যথেষ্ট সমৃদ্ধশালী দেশ। সেই কারণেই বেশি টাকা দিয়ে দামি মাদক কেনার প্রবণতা বাড়ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

অন্যদিকে মাদক আইনে অনেকটাই শীথিলতা এনেছে প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড। সেখানে গাঁজা রাখা ও সেবন বৈধ করা হয়েছে। মৃত্যুদণ্ড আইনে বদল এনেছে মালয়েশিয়াও। মারাত্মক গুরুতর অপরাধ ছাড়া মৃত্যুদণ্ড রদ করা হয়েছে সেখানে। সূত্র: বিবিসি।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

পাকিস্তানে সামরিক আদালতে ২৫ বেসামরিক ব্যক্তির সাজায় উদ্বিগ্ন ইইউ
মার্কিন বিমানবাহী রণতরী হামলা হুথিদের, যুদ্ধবিমান ভূপাতিত
বাসার আল-আসাদ ও আসমা’র ডিভোর্সের সংবাদ প্রত্যাখ্যান রাশিয়ার
সাধারণ ক্ষমার বিনিময়ে দোষ স্বীকার করছেন আসাদের সৈন্যরা
অস্তিত্ব সংকটে ট্রাম্প টাওয়ারসহ ৩৫ বিলাসবহুল ভবন
আরও

আরও পড়ুন

পতিত আওয়ামী স্বৈরাচারের গত ১৭ বছরের নির্যাতন ভুলে যাবার সুযোগ নেই: আমিনুল হক

পতিত আওয়ামী স্বৈরাচারের গত ১৭ বছরের নির্যাতন ভুলে যাবার সুযোগ নেই: আমিনুল হক

পাবনা ব্যাপ্টিস্ট চার্চে প্রাক বড়দিন উৎসব অনুষ্ঠিত

পাবনা ব্যাপ্টিস্ট চার্চে প্রাক বড়দিন উৎসব অনুষ্ঠিত

পূর্বধলায় শীতার্ত মানুষের মাঝে ইসলামী যুব আন্দোলনের কম্বল বিতরণ

পূর্বধলায় শীতার্ত মানুষের মাঝে ইসলামী যুব আন্দোলনের কম্বল বিতরণ

ধর্ম-বর্ণ নয়, সমান মর্যাদায় হোক নাগরিক পরিচয়: জোনায়েদ সাকি

ধর্ম-বর্ণ নয়, সমান মর্যাদায় হোক নাগরিক পরিচয়: জোনায়েদ সাকি

এসবিএসি ব্যাংকের শরিয়াহ্ সুপারভাইজরি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

এসবিএসি ব্যাংকের শরিয়াহ্ সুপারভাইজরি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

আ.লীগের হাতেও নির্যাতিত হয়েছিলেন সেই মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু তুলে ধরেনি গণমাধ্যম!

আ.লীগের হাতেও নির্যাতিত হয়েছিলেন সেই মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু তুলে ধরেনি গণমাধ্যম!

ভারত বাংলাদেশ থেকে বস্তা বস্তা টাকা লুট করেছে : দুদু

ভারত বাংলাদেশ থেকে বস্তা বস্তা টাকা লুট করেছে : দুদু

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে সিটিজেন’স চার্টার অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে সিটিজেন’স চার্টার অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত

মতিঝিলে বিশ্বমানের ডায়াগনস্টিক সেবা প্রদান শুরু আইসিডিডিআর,বি’র

মতিঝিলে বিশ্বমানের ডায়াগনস্টিক সেবা প্রদান শুরু আইসিডিডিআর,বি’র

স্বামীর অগোচরে স্ত্রী অন্য কারও সাথে কথা বলা প্রসঙ্গে?

স্বামীর অগোচরে স্ত্রী অন্য কারও সাথে কথা বলা প্রসঙ্গে?

চাঁদপুর মেঘনায় মালবাহী জাহাজে ৭ জনকে কুপিয়ে হত্যা, গুরুতর আহত ১

চাঁদপুর মেঘনায় মালবাহী জাহাজে ৭ জনকে কুপিয়ে হত্যা, গুরুতর আহত ১

পতিত স্বৈরাচার হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি

পতিত স্বৈরাচার হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি

যাকাত বোর্ডের ১১ কোটি টাকা বিতরণের প্রস্তাব অনুমোদিত

যাকাত বোর্ডের ১১ কোটি টাকা বিতরণের প্রস্তাব অনুমোদিত

১৬ বছরে নির্বাচন ব্যবস্থা নির্বাসনে চলে গিয়েছিল : সংস্কার কমিশন প্রধান

১৬ বছরে নির্বাচন ব্যবস্থা নির্বাসনে চলে গিয়েছিল : সংস্কার কমিশন প্রধান

জিনিসের দাম একবার বাড়লে কমানো কঠিন: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

জিনিসের দাম একবার বাড়লে কমানো কঠিন: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

স্বৈরাচারের দোসর শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী-সন্তানসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

স্বৈরাচারের দোসর শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী-সন্তানসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

মুজিবল্যান্ড বানিয়ে হিন্দুস্তানে থাকুক আ.লীগ : রাশেদ প্রধান

মুজিবল্যান্ড বানিয়ে হিন্দুস্তানে থাকুক আ.লীগ : রাশেদ প্রধান

মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী

মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী

আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই  আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে: ডা. জাহিদ হোসেন

আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই  আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে: ডা. জাহিদ হোসেন

বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ

বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ