হকর্মীদের সুরক্ষায় যে নতুন বিধান চালু করল সউদী আরব

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

৩১ জুলাই ২০২৩, ০৯:৪৩ এএম | আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২৩, ০৯:৪৩ এএম

গৃহকর্মীদের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় নতুন বিধি জারি করেছে সউদী আরব। গৃহকর্মীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ ও চুক্তি বহির্ভূত কাজ আদায়কারী নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সউদী মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এই বিধি জারি করেছে।
বিধিতে বলা হয়েছে, গৃহকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার জন্য দোষী সাব্যস্ত হলে গৃহকর্তাদের এক বছরের নিয়োগ নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হতে হবে। পাশাপাশি নিয়োগকর্তাদের ২ হাজার সউদী রিয়াল জরিমানা করা হবে। শিগগিরই এই বিধান কার্যকর হবে।
বিধানে নিয়োগকর্তার গোপনীয়তা রক্ষায় গৃহকর্মীদের বাধ্যবাধকতার কথাও বলা হয়েছে। এ ধরনের অপরাধে গৃহকর্মীর জন্যও শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
বলা হয়েছে, কোনো গৃহকর্মী তাঁর নিয়োগকর্তার গোপনীয়তা লঙ্ঘন করলে তাঁকে ২ হাজার সউদী রিয়াল পর্যন্ত জরিমানা করা হবে। সেই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে কাজ করার ওপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞাও আসতে পারে। আর একাধিকবার বিধি লঙ্ঘন করলে কর্মীকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে এবং সেই খরচ তাঁকেই বহন করতে হবে। গৃহকর্মী জরিমানা দিতে অক্ষম হলে রাষ্ট্র নিজ খরচে তাঁকে দেশে পাঠিয়ে দেবে।
বিধানে জোর দেওয়া হয়েছে যে, গৃহকর্মীকে অবশ্যই তাঁদের নিয়োগকর্তার সম্পত্তির মর্যাদা রক্ষা করতে হবে। তিনি নিয়োগকর্তার পরিবারের কোনো সদস্যদের ক্ষতি করলে তাঁকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। নিয়োগকর্তা এবং পরিবার সম্পর্কিত তথ্যের গোপনীয়তাও তাঁকে রক্ষা করতে হবে।
বিধিতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, জরিমানা ও দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার শাস্তি এড়াতে হলে অভিযুক্ত কর্মীকে অবশ্যই চুক্তিতে উল্লেখিত নিয়ম-কানুন মেনে চলার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।
নিয়োগকর্তা বিধান লঙ্ঘন করলে তাঁকে ২ হাজার সউদী রিয়াল জরিমানা বা এক বছরের জন্য গৃহকর্মী নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। অথবা উভয়ই দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। বারবার বিধি লঙ্ঘন করলে জরিমানা ২ হাজার থেকে ৫ হাজার সউদী রিয়াল পর্যন্ত হবে। পাশাপাশি তিন বছর পর্যন্ত কর্মী নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা পাবেন। এ ছাড়া পরপর তিনবার বিধি লঙ্ঘন করলে স্থায়ী নিয়োগ নিষেধাজ্ঞাও পেতে পারেন তিনি।
এতে আরও বলা হয়েছে, একেবারে প্রয়োজন না হলে কর্মীকে তাঁর সঙ্গে করা চুক্তির বাইরে কোনো কাজ করানো যাবে না। চুক্তি অনুযায়ী প্রদেয় মাসিক মজুরি নগদ বা ব্যাংক চেক অথবা তাঁদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করতে হবে। এ ছাড়া প্রতিদিন কমপক্ষে ৯ ঘণ্টা তাঁকে বিশ্রামের সুযোগ দিতে হবে।
এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থাগুলো সউদী আরবের শ্রম আইনের ৭ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। ওই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, গৃহকর্মীদের এমন কোনো কাজে নিযুক্ত করা যাবে না যা তাঁদের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা বা মানবিক মর্যাদাকে বিপন্ন করে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ ও সউদী আরবের মধ্যে গৃহকর্মী নেওয়ার জন্য চুক্তি হয়। এর মাধ্যমে সাত বছর বন্ধ থাকার পর বাংলাদেশ থেকে সউদী আরবে জনশক্তি রপ্তানি শুরু হয়েছে। সউদী সরকার তখন ২ লাখের বেশি নারীকর্মীর চাহিদা জানিয়েছিল। বিপরীতে বাংলাদেশ প্রতি মাসে ১০ হাজার নারী গৃহকর্মী পাঠানোর কথা বলে। এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৩ লাখের বেশি বাংলাদেশি গৃহকর্মী সউদী আরবে কাজ করছেন বলে জানা যায়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নির্যাতনের শিকার হয়ে বিপুল সংখ্যক নারী গৃহকর্মী সউদী আরব থেকে দেশে ফিরেছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন। সেখানে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার অভিযোগও করেছেন অনেকে।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

এশিয়ান যুব চ্যাম্পিয়নশিপে ইরানি ভারোত্তোলকের স্বর্ণ জয়
যুদ্ধের দামামা, তালেবানের পাল্টা হামলায় ১৯ পাকিস্তানি সেনা নিহত
ট্রাম্প-মাস্কের বন্ধুত্বে চিড়! অভিবাসন নীতি নিয়ে দ্বন্দ্ব তুঙ্গে
ভারতে বড়দিন উদযাপন করায় ২ নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে যৌন নিপীড়ন-মারধর
জুতার জন্য চাকরি হারিয়ে পেলেন ৪৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ!
আরও

আরও পড়ুন

কৃষকের ৫০০ কলাগাছ কেটে দিল যুবলীগ কর্মীরা

কৃষকের ৫০০ কলাগাছ কেটে দিল যুবলীগ কর্মীরা

অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করায় ১০ পরিবহনকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত

অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করায় ১০ পরিবহনকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত

নায়িকার গাড়ির চাপায় শ্রমিক নিহত

নায়িকার গাড়ির চাপায় শ্রমিক নিহত

দোয়া চাওয়ার ১০ মিনিট পরেই সড়ক দুর্ঘটনায় ইমামের মৃত্যু

দোয়া চাওয়ার ১০ মিনিট পরেই সড়ক দুর্ঘটনায় ইমামের মৃত্যু

চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজের জামাত পড়ার সময় তিন রাকাত না পেলে কেরাত পড়া প্রসঙ্গে।

চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজের জামাত পড়ার সময় তিন রাকাত না পেলে কেরাত পড়া প্রসঙ্গে।

৩১ ডিসেম্বর কী হতে যাচ্ছে? যা জানা গেল

৩১ ডিসেম্বর কী হতে যাচ্ছে? যা জানা গেল

পটুয়াখালীতে আলতাফ হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে  বিশাল গণমিছিল

পটুয়াখালীতে আলতাফ হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে  বিশাল গণমিছিল

টোল প্লাজার দুর্ঘটনা সন্তান বেঁচে নেই, এখনও জানেন না বাবা-মা

টোল প্লাজার দুর্ঘটনা সন্তান বেঁচে নেই, এখনও জানেন না বাবা-মা

নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতি স্থগিত

নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতি স্থগিত

শিল্পাচার্য জয়নাল আবদিনের ১১০ তম জন্মবার্ষিকী পালন

শিল্পাচার্য জয়নাল আবদিনের ১১০ তম জন্মবার্ষিকী পালন

এশিয়ান যুব চ্যাম্পিয়নশিপে ইরানি ভারোত্তোলকের স্বর্ণ জয়

এশিয়ান যুব চ্যাম্পিয়নশিপে ইরানি ভারোত্তোলকের স্বর্ণ জয়

রহমত ২৩১*, শাহিদি ১৪১*, বুলাওয়েতে ঐতিহাসিক দিন

রহমত ২৩১*, শাহিদি ১৪১*, বুলাওয়েতে ঐতিহাসিক দিন

এইচ এম কামরুজ্জামান খান সারা জীবন আধিপত্যবিরোধী রাজনীতি করে গেছেন

এইচ এম কামরুজ্জামান খান সারা জীবন আধিপত্যবিরোধী রাজনীতি করে গেছেন

বন্দরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া ধ্বংসের পায়তারা করছে আ.লীগের দোসররা

বন্দরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া ধ্বংসের পায়তারা করছে আ.লীগের দোসররা

ময়মনসিংহে আলোচিত ‘বালু খেকো’ আওয়ামী লীগ নেতা জামাল গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহে আলোচিত ‘বালু খেকো’ আওয়ামী লীগ নেতা জামাল গ্রেপ্তার

বিজয় দিবস রাগবিতে চ্যাম্পিয়ন সেনাবাহিনী

বিজয় দিবস রাগবিতে চ্যাম্পিয়ন সেনাবাহিনী

কোরআন শিক্ষার মাধ্যমেই সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন করা সম্ভব- মামুনুল হক

কোরআন শিক্ষার মাধ্যমেই সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন করা সম্ভব- মামুনুল হক

বাংলাদেশে বেড়েই চলেছে খাদ্যপণ্যের দাম : বিশ্বব্যাংক

বাংলাদেশে বেড়েই চলেছে খাদ্যপণ্যের দাম : বিশ্বব্যাংক

সংস্কার না করলে শহীদদের রক্তের সঙ্গে অন্যায় করা হবে : উপদেষ্টা সাখাওয়াত

সংস্কার না করলে শহীদদের রক্তের সঙ্গে অন্যায় করা হবে : উপদেষ্টা সাখাওয়াত

একইসময়ে রহস্যময় স্ট্যাটাস দিয়ে কী বুঝাতে চাইলেন আসিফ-হাসনাত!

একইসময়ে রহস্যময় স্ট্যাটাস দিয়ে কী বুঝাতে চাইলেন আসিফ-হাসনাত!