ঢাকা   শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৩ পৌষ ১৪৩১

গুরুগ্রামে মুসলিমদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক বয়কটের ডাক হিন্দুত্ববাদীদের

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

০৭ আগস্ট ২০২৩, ০৭:৫৭ এএম | আপডেট: ০৭ আগস্ট ২০২৩, ০৭:৫৭ এএম

ভারতের উত্তর প্রদেশের গুরুগ্রামে হিন্দুত্ববাদীরা মুসলিমদের সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে বয়কটের ডাক দিয়েছে। ব্যাপক সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর এবার সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবেও মুসলিমদের বিধ্বস্ত করার ষড়যন্ত্র করছে হিন্দুত্ববাদীরা।

সাম্প্রতিক সহিংসতার কারণে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল গুরুগ্রাম অঞ্চলে। তবে ওই বিধিনিষেধকে তোয়াক্কা না করেই গতকাল রোববার গুরুগ্রামের আশেপাশে বেশ কিছু গ্রাম থেকে সেক্টর ৫৭-এ জড়ো হয়েছিল অনেকে। এক হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের ডাকেই সেখানে জমায়েত হয় তারা। এই সেক্টর ৫৭-এই কয়েক দিন আগে একটি মসজিদে হামলা হয়েছিল। তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল। মসজিদ লক্ষ্য করে চালানো হয়েছিল গুলি। তাতে মৃত্যু হয়েছিল এক ইমামের। আর সেই সেক্টর ৫৭-এ এসেই মুসলিমদের সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে বয়কটের ডাক দিলো হিন্দুত্ববাদীরা।

এদিকে গতকালকের সেক্টর ৫৭-এর মহাপঞ্চায়েত থেকে হিন্দুত্ববাদীরা দাবি করে, মসজিদে হামলার জন্য যেসব ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা নাকি নির্দোষ। তাদের মুক্তির দাবি তোলা হয়। এমনকি হুঁশিয়ারি দেয়া হয়, সাত দিনে সেই ধৃতদের ছাড়া না হলে গুরুগ্রামে চাক্কা জাম করে দেয়া হবে।

এই আবহে ওয়াজিরাবাদের সাবেক পঞ্চায়েত প্রধান সুবে সিং বোহরা বলেন, 'ধৃতদের বিরুদ্ধে কী প্রমাণ রয়েছে তা আমাদের দেখাতে হবে। মসজিদের পাশে যারা থাকে, তারা ধৃতদের পরিবারকে হেনস্থা করে যাচ্ছে ক্রমাগত। এটা চলতে দেয়া যায় না।'

এদিকে বজরং দল সদস্য কুলভূষণ ভরদ্বাজও দাবি করেন, গুরুগ্রামের ঘটনায় যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা নাকি সহিংসতকার সাথে জড়িত নয়। তিনি মুসলিমদের বিরুদ্ধে উস্কানি দিয়ে বলেন, 'গুরুগ্রামে হাজার হাজার মুসলিম আছে যারা বিভিন্ন কাজের সাথে যুক্ত। কেউ ক্যাব চালায়, কেউ চুল কাটে, কেউ সবজি বিক্রি করে। তবে আমরা নিশ্চিত করব যাতে তাদেরকে কোনো রকম সাহায্য না করা হয়। এই শহরে মুসলিমদের কাজ করতে দেয়া হবে না। আমি আবেদন জানাচ্ছি যাতে কোনো মুসলিমকে এই শহরে ঘর ভাড়া না দেয়া হয়।'

উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই একটি ধর্মীয় মিছিলকে আটকানোর অভিযোগে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয় হরিয়ানার নুহ এবং গুরুগ্রাম জেলায়। হরিয়ানার বজরং দল কর্মী মনু মানেসারকে কেন্দ্র করেই সেখানের নুহ্ এবং গুরুগ্রাম জেলায় সহিংসতা ছড়ায়। গত ফেব্রুয়ারিতে ভিওয়ানিতে দুই মুসলিম যুবককে খুন করার ঘটনায় মনু পলাতক। ওই মনু ভিডিয়ো পোস্ট করে দাবি করেছিল এই ধর্মীয় মিছিলে সে থাকবে। এই আবহে গুরুগ্রাম আলওয়ার হাইওয়েতে এই যাত্রা থামান কয়েকজন। এরপরই মিছিলকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হয়। সরকারি ও বেসরকারি গাড়িকে লক্ষ্য পাথর ছোঁড়া হয়। ওই সময় পাশের এক শিবমন্দির চত্বরে আশ্রয় নেন প্রায় ২৫০০ মানুষ।

সেদিন সন্ধ্যার দিকে গুরুগ্রাম সোহনা হাইওয়েতে সহিসংতা ছড়াতে থাকে। একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ঘটনার জেরে বেশ কিছু বাড়িঘর, দোকানেও আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ধর্মস্থানেও হামলা হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করেও চলে ইট বৃষ্টি। সহিসংতায় দুই হোমগার্ডসহ অন্তত তিনজনের মৃত্যু ঘটেছে। মৃত হোমগার্ডদের নাম- নীরজ এবং গুরুসেবক। ঘটনায় জখম আরো অন্তত ২০০ জন। পরে অন্যত্র সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। রাতে সেক্টর ৫৭-এর মসজিদে হামলা হয়েছিল। আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল মসজিটিতে। সেখানে চালানো হয়েছিল গুলি। তাতে মৃত্যু হয়েছিল এক ইমামের। জখম হয়েছিলেন আরো তিনজন।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

নারীকে যৌন নিপীড়ন: খোদ মহারাষ্ট্রে ইসকন সন্ন্যাসী জুতাপেটা
অস্ট্রিয়ার তিরোলে তুষারধসে বাবা-ছেলের মৃত্যু
নতুন শাসকদের সাথে সংঘর্ষে সিরিয়ায় আসাদ অনুসারীদের হাতে ১৪ জন নিহত
দক্ষিণ কোরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিশংসন ভোট, মুদ্রার মান পতন
ইউক্রেনে আহত উত্তর কোরীয় এক সেনা আটক
আরও

আরও পড়ুন

শেষ বিকেলে দ্রুত উইকেট হারিয়ে চাপে ভারত

শেষ বিকেলে দ্রুত উইকেট হারিয়ে চাপে ভারত

নারীকে যৌন নিপীড়ন: খোদ মহারাষ্ট্রে ইসকন সন্ন্যাসী জুতাপেটা

নারীকে যৌন নিপীড়ন: খোদ মহারাষ্ট্রে ইসকন সন্ন্যাসী জুতাপেটা

অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা

অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা

আফগানিস্তানকে পেয়ে আবারও জ্বলে উঠলেন উইলিয়ামস

আফগানিস্তানকে পেয়ে আবারও জ্বলে উঠলেন উইলিয়ামস

অস্ট্রিয়ার তিরোলে তুষারধসে বাবা-ছেলের মৃত্যু

অস্ট্রিয়ার তিরোলে তুষারধসে বাবা-ছেলের মৃত্যু

বিয়ে-বাচ্চা সব মানুষ হওয়ায় দিছে: জেফার

বিয়ে-বাচ্চা সব মানুষ হওয়ায় দিছে: জেফার

নতুন শাসকদের সাথে সংঘর্ষে সিরিয়ায় আসাদ অনুসারীদের হাতে ১৪ জন নিহত

নতুন শাসকদের সাথে সংঘর্ষে সিরিয়ায় আসাদ অনুসারীদের হাতে ১৪ জন নিহত

কালকিনিতে ইউপি সদস্য নিহত, আহত ১০

কালকিনিতে ইউপি সদস্য নিহত, আহত ১০

রাজধানীতে শীতের ছোঁয়ায় শীতল সবজির বাজার

রাজধানীতে শীতের ছোঁয়ায় শীতল সবজির বাজার

উত্তরা ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হলেন ফয়সাল তাহের

উত্তরা ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হলেন ফয়সাল তাহের

মাদারীপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ২ গ্রুপের সংঘর্ষ, ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা

মাদারীপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ২ গ্রুপের সংঘর্ষ, ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা

সংস্কার ও নির্বাচনী প্রস্তুতি একই সঙ্গে চলবে: প্রধান উপদেষ্টা

সংস্কার ও নির্বাচনী প্রস্তুতি একই সঙ্গে চলবে: প্রধান উপদেষ্টা

ইংরেজি নববর্ষে আতশবাজি ও পটকা ফোটানো থেকে বিরত থাকার নির্দেশ

ইংরেজি নববর্ষে আতশবাজি ও পটকা ফোটানো থেকে বিরত থাকার নির্দেশ

ইন্টারপোলের তালিকায় হাসিনার নাম যুক্ত হওয়া নিয়ে যা জানা গেল, খোঁজা হচ্ছে আরও যেসব বাংলাদেশিকে

ইন্টারপোলের তালিকায় হাসিনার নাম যুক্ত হওয়া নিয়ে যা জানা গেল, খোঁজা হচ্ছে আরও যেসব বাংলাদেশিকে

দক্ষিণ কোরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিশংসন ভোট, মুদ্রার মান পতন

দক্ষিণ কোরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিশংসন ভোট, মুদ্রার মান পতন

কটিয়াদীতে তুচ্ছ ঘটনায় শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে জখম

কটিয়াদীতে তুচ্ছ ঘটনায় শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে জখম

জাহাজে ছেলে হত্যা: শোকে মারা গেলেন বাবা

জাহাজে ছেলে হত্যা: শোকে মারা গেলেন বাবা

ভারত থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকালে বিজিবি’র হাতে ১৬ বাংলাদেশি আটক

ভারত থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকালে বিজিবি’র হাতে ১৬ বাংলাদেশি আটক

সৈয়দপুরে রাস্তা সংস্কারে নিম্নমানের কার্পেটিংয়ের অভিযোগে কাজ বন্ধ করে দিলো ছাত্ররা

সৈয়দপুরে রাস্তা সংস্কারে নিম্নমানের কার্পেটিংয়ের অভিযোগে কাজ বন্ধ করে দিলো ছাত্ররা

শার্শায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ২ গ্রুপে সংঘর্ষ

শার্শায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ২ গ্রুপে সংঘর্ষ