পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে সৌরঝড়! নাসার রোভারে ধরা পড়ল ভয়ংকর 'সানস্পট'
২৮ আগস্ট ২০২৩, ১১:২৮ এএম | আপডেট: ২৮ আগস্ট ২০২৩, ১১:২৮ এএম
মহাকাশের কর্মকাণ্ডের উপর যথাসম্ভব নজর রেখে চলেছে মার্কিন গবেষণা সংস্থা নাসা। সম্প্রতি তাদের এক পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে শিউরে ওঠার মতো তথ্য। ভয়ঙ্কর সৌরঝড় ধেয়ে আসতে পারে পৃথিবীর দিকে, ইঙ্গিত দিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
মঙ্গলে গ্রহে নাসার পারসিভারেন্স রোভার সম্প্রতি একটি সৌরকলঙ্ক চিহ্নিত করেছে। আর তাতেই দেখা গিয়েছে সূর্যের একটি দূরবর্তী স্থানে সৌর কার্যকলাপ বেড়েছে। আর সেই কর্মকাণ্ড বেড়ে চলেছে পৃথিবীর দিকে মুখ করে। সানস্পটিও রয়েছে একবারে পৃথিবীর দিকে মুখ করে। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা আচমকাই সূর্যের এই কার্যকলাপ বৃদ্ধিতে পৃথিবীতে প্রভাব পড়তে পারে।
মঙ্গল গ্রহটি একেবারে সূর্যের বিপরীতে অবস্থিত। মঙ্গলগ্রহের এই অবস্থানের জন্য সূর্যের কোনও প্রকার অস্বাভাবিক পরিস্থিতির তৈরি হলেই বা কোনও কলঙ্ক তৈরি হলেও তা প্রথম চিহ্নিত করা যায় মঙ্গলগ্রহ থেকেই। কখনও কখনও পৃথিবীর থেকে এক সপ্তাহ আগে থেকে সূর্যের সেই অস্বাভাবিক কার্যকলাপ চিহ্নিত করা হয় মঙ্গল গ্রহ থেকে। আগেও এনিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। জানানো হয়েছিল, সূর্যের কলঙ্ক দেখা গিয়েছে। খুব শীঘ্রই সৌরঝড় ধেয়ে আসার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
মাস্টক্যাম-জেডের তোলা আতঙ্কের ছবি
রোভারের মধ্যে মাস্টক্যাম-জেড যন্ত্রটি সূর্যের ওই কলঙ্ক চিহ্নিত করেছে। নাসার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, মাস্টক্যাম জেড উচ্চ রেজোলিউশনের ভিডিও তুলতে, প্যানোরমিক রঙিন ছবি, ও মঙ্গল গ্রহ পৃষ্ঠ-বায়ুমণ্ডলীয় ঘটনার ত্রিমাত্রিক ছবি তুলতে সক্ষম।
মঙ্গল পৃষ্ঠের উপর নজরদারি চালানো, সেখানে প্রাণের অস্বিত্ব রয়েছে কিনা সেই সম্বন্ধে তথ্য অনুসন্ধান ছাড়াও সূর্যের উপরও টুকটাক নজরদারি চালায় উচ্চ প্রযুক্তির এই ক্যামেরা। মঙ্গল আবহাওয়ার কতটা ধূলিকণার উপস্থিতি রয়েছে তার হিসাব-নিকেশ রাখতে সূর্যের উপর নজরদারি চালায় নাসার এই যন্ত্র। আর সেই নজরদারিতেই উঠে এসেছে ভয় পাওয়ার তথ্য। যা দেখে চিন্তিত বিজ্ঞানীমহল। সূর্যের অস্বাভাবিক কার্যকলাপ ধরা পড়েছে ছবিতে।
সানস্পট বা সৌরকলঙ্ক কী?
কলঙ্কের ছাপকে সৌরবিজ্ঞানের ভাষায় বলে সানস্পট (Sunspot)। সৌরপদার্থবিজ্ঞানী দেখিয়েছেন সৌরকলঙ্ক (সানস্পট), সৌরবায়ু (সোলার উইন্ড), সৌরঝড় (সোলার স্টর্ম), করোনাল মাস ইজেকশান (সিএমই)-এর উপরে নির্ভর করে সূর্য কখন রেগে উঠবে এবং গনগনে আগুনের ফুলকি ছুঁড়বে। সূর্যের ভয়ঙ্কর অস্ত্রগুলোকে কোনওভাবেই পরাস্ত করা সম্ভব নয়।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে সৌরঝড়ের সামান্য ঝাপটাও যদি এসে লাগে তাহলে সবকিছু তছনছ হয়ে যাবে সব। উড়ে যাবে জিপিএস, রেডিও নেটওয়ার্ক থেকে যোগাযোগের সমস্ত মাধ্যম। ঠিক কখন সূর্য তেতে উঠবে, তার রোষানলে দাপুটে সৌরঝড় আর সৌরবায়ু ছিটকে বেরবে মহাকাশে তা সানস্পট বা সৌরকলঙ্ক জানান দিতে পারে।
কী ভাবে জন্ম হয় সৌরকলঙ্কের?
সূর্য থেকে যে ভয়ঙ্কর করোনাল মাস ইজেকশান হয় তার জন্ম ওই কালো দাগ বা সানস্পটের জন্যই হয়। পৃথিবীর মতো সূর্যেরও আবহাওয়া বা অ্যাটমস্ফিয়ার রয়েছে। সূর্যের পিঠ (সারফেস) ও তার উপরের স্তরকে বলা হয় সোলার করোনা। সূর্যের পিঠ বা সারফেসের গড় তাপমাত্রা ৫৬০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। কোনও অংশে আবার ৫৮০০ ডিগ্রি আবার কোথাও ৫২০০ ডিগ্রি সেলসিয়ারের কাছাকাছি। করোনার তাপমাত্রা অনেক বেশি, প্রায় ২ লক্ষ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। কখনও বা তারও বেশি। সবসময় এই তাপমাত্রার তারতম্য হতে থাকে।
সৌরঝড় কাকে বলে?
করোনা স্তর যেখানে শেষ হচ্ছে সেখান থেকেই জন্ম হয় সৌরঝড়ের। উচ্চতাপমাত্রার প্লাজমা আবরণে ঢাকা এই করোনা স্তর। এখান থেকেই তড়িদাহত কণার স্রোত বেরিয়ে আসে। মহাকাশে ছড়িয়ে পড়ে প্রচণ্ড গতিতে। একেই বলে সৌরঝড়। আর ঠিক সৌরপৃষ্ঠেই সানস্পট তৈরি হয়। সূর্যের পিঠ থেকে নীচে আরও ৩০ শতাংশ গভীরতায় এই সানস্পটগুলি অবস্থিত। বড় সানস্পটগুলির ২০ থেকে ৩০ মেগা মিটারের (মানে, ১০ হাজার মিটার) মধ্যে ব্যাস হতে পারে। কখনও কখনও তা ৫০ মেগা মিটারও হতে পারে। সেগুলিকে বলা হয় 'জায়ান্ট সানস্পট'। আবার তা খুব ছোট ১ মেগা মিটার ব্যাসেরও হতে পারে। আদতে সানস্পটগুলি খুব শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্র। 'জায়ান্ট সানস্পট' এর অর্থ তা প্রায় ১০টা পৃথিবীর সমান বড়।
এমন অজস্র সানস্পট তৈরি হতে পারে সূর্যের গোটা জীবনচক্রে (Solar Cycle)। একটা সোলার সাইকেল হয় ১১ বছরের, আবার তা বেড়ে ১২ বছরও হতে পারে, কমে ১০ বছরও হতে পারে। একটা সাইকেলে তৈরি হতে পারে তিন হাজারের মতো সানস্পট (sunspot)। কিছুদিন দেখা দিয়ে তারা আবার মিলিয়ে যায় বা সরে যায় সূর্যের পাশে। সৌরকলঙ্ক জানান দেয় সূর্য কখন রেগে উঠবে। এই সানস্পটই জানান দেয় সূর্য কখন বিকিরণ করবে গনগনে আগুনের স্রোত। সৌর বিকিরণের বেগ বেশি হলে বদল ঘটবে মহাকাশের তাপমাত্রাও। পৃথিবীর তাপমাত্রাও বাড়বে সূর্য তেতে উঠলে।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ
সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার
যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২
ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল
সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ
গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক
যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন
যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার
৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান
তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা
শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত
গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক
কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়
ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম
যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা
মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী
প্রশাসক হতে চান শিক্ষকরা, ঠেকাতে একাট্টা ৪ সংগঠন
বাংলাদেশের এই দলকে সেরা বললেন হার্শা