আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন, নভোচারী এবং মহাকাশচারীদের বাড়ি বললে ভুল কিছু বলা হবে না। যে বাড়িতে তারা দিনের পর দিন গবেষণা চালান, সেখানেই ঘটেছে বিরাট বড় দুর্ঘটনা। স্পেস স্টেশনে রাশিয়ান মডিউল থেকে একটি কুল্যান্ট ফুটো হয়ে গিয়েছিল। আর সেটিকে ঘিরেই ঘটে বিপদ। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এক ব্লগে এবিষয়ে জানিয়েছে। নাসার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হঠাৎই কুল্যান্ট থেকে অ্যামোনিয়া লিক হতে শুরু করে। তবে মহাকাশচারীরা এর কারণে কোনও বিপদে পড়েননি।

কী করে এমন বিপদ ঘটল?

স্পেস স্টেশনে একটি রাশিয়ান মডিউল ছিল। আর তার দিকে হঠাৎ চোখ যায় মহাকাশচারীদের। হঠাৎ দেখেন মডিউলে একটি ফুটো হয়ে গিয়েছে। আর তা থেকে বের হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে অ্যামোনিয়া গ্যাস। বর্তমানে এই পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছেন নাসার প্রকৌশলীরা। অ্যামোনিয়া বিপজ্জনক এবং বিষাক্ত গ্যাস। তাই মহাকাশচারীদের স্পেসওয়াক করার সময় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যে সময় এই ঘটনা ঘটেছে (বাংলাদেশ সময়), তখন রাত এগারোটা। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ইনস্টল করা রাশিয়ান মডিউলে বিষাক্ত অ্যামোনিয়া দেখতে পান বিজ্ঞানীরা। মহাকাশচারী জেসমিন মোগবেলি প্রথম দেখতে পান এমন একটা ঘটনা ঘটছে।

নাসার তরফে জানা গিয়েছে, লিক হওয়া অ্যামোনিয়া স্পেস স্টেশন অপারেশনগুলিতে কোনও প্রভাব ফেলেনি। রাশিয়ান মডিউলের প্রাথমিক রেডিয়েটার স্বাভাবিকভাবে কাজ করেছে। রাশিয়ার মহাকাশ সংস্থা রোসকসমস এই লিকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তিনি বলেন, ‘তাপমাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে। এই গ্যাসের কারণে কোনও পরিবর্তন হয়নি। যে ব্যাকআপ রেডিয়েটরটি লিক হয়েছিল, তা ছিল রাসভেট নামক একটি ভিন্ন রাশিয়ান মডিউলের জন্য, যা ২০১০ সালে আইএসএস-এর স্পেস শাটল মিশন এসটিএস-১৩২-এর সঙ্গে নিয়ে আসা হয়েছিল।’

কিন্তু অ্যামোনিয়া কেন ব্যবহার করা হয়েছিল?

অ্যামোনিয়া সিস্টেমকে ঠান্ডা রাখে। মহাকাশ স্টেশনের সিস্টেমগুলি প্রচুর পরিমাণে তাপ উৎপন্ন করে। নাসার মতে, আইএসএসকে ঠান্ডা করতে অ্যামোনিয়া প্রয়োজন। তার জন্য সিস্টেমে ব্যবহৃত প্লেটগুলিকে ঠান্ডা রাখা প্রয়োজন। এমন ঘটনা গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকবার ঘটেছে। তবে এত বিরাট আকার ধারণ করেনি। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে এটি পদ্ধতিগত সমস্যার কারণে ঘটছে, যা খুব দ্রুত ঠিক করা প্রয়োজন।