পাকিস্তানের নির্বাচন কি সুষ্ঠ হবে?

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

২১ অক্টোবর ২০২৩, ০৭:৩৯ পিএম | আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৩, ০৭:৩৯ পিএম

 

 

 

ইমরান খান একদিকে কারাগারে, আর অন্যদিকে গত মে মাসে তার গ্রেফতারের প্রতিবাদে হওয়া ব্যাপক বিক্ষোভের পর ধরপাকড়ে তার দলও যখন অনেকটাই দুর্বল অবস্থানে। এমন অবস্থায় বেশিরভাগ মানুষেরই ধারণা নির্বাচন সুষ্ঠ হবেনা।

 

ইমরান খান গ্রেফতার হওয়ার আগ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে পিটিআই এগিয়ে ছিল। কিন্তু বিশ্লেষক জুলফি বুখারী বলছেন, এখন আর নির্বাচনের মাঠে সবাইকে সমান সুযোগ দেয়া হচ্ছে না – একই মত অন্যান্য দলেরও। ‘আপনি কীভাবে নির্বাচনের আগে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতাকে কারাগারে দিতে পারেন,’ প্রশ্ন করেন বুখারী, ‘আপনি যদি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করেন, তাহলে দেখবেন ইমরান খানের ভোট ব্যাংক কত শক্তিশালী।’

 

নওয়াজ শরিফের দলও অনেকটা একই কথা বলেছিল যখন ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে তিনি কারাগারে যান। তাই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে শুধু এবার পিটিআইয়ের জায়গায় সুবিধা পাচ্ছে পিএমএল-এন। প্রধান ফ্যাক্টর এখানে অর্থনীতি – দুই দলই এই সংকটের জন্য একে অন্যকে দায়ী করছে। আকাশ ছোঁয়া মূল্যস্ফীতি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধিই হবে ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে ভোটারদের ভাবনার বিষয়।

 

যদিও পিএমএল-এন দাবি করছে যে নওয়াজ শরীফ আগেও ক্ষমতায় ছিল এবং তিনি জানেন কীভাবে সব ‘আবারও ঠিক করতে হবে’। তবে অনেকেই নিশ্চিত না যে কীভাবে তিনি এটা করবেন। বেশিরভাগ পাকিস্তানি এখন ভীষণ হতাশ দেশের এই নষ্ট হয়ে যাওয়া গণতন্ত্র দেখে। তরুণ প্রজন্ম এখন খোলাখুলিভাবেই রাজনীতিবিদ ও রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে কথা বলছে।

 

সেনাবাহিনী নওয়াজকে ভরসা করতে পারে?

সেনাবাহিনী পাকিস্তানের রাজনীতিতে সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসেছে এবং কয়েকবারই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা গ্রহণ করেছে। নওয়াজ শরীফের সাথেও তাদের দীর্ঘ টানাপোড়েনের ইতিহাস আছে। কিন্তু তারপরও আর কোন উপযুক্ত কেউ না থাকায়, সেনাবাহিনী হয়তো তাকেই আরেকটা সুযোগ দেবে বলে মনে করছেন ওয়াজাহাত মাসুদ।

 

‘প্রথমে মিলিটারি ইমরান খানকে বেছে নেয়, কারণ তারা মনে করেছিল এটা তাদের জন্য নিরাপদ ও ভালো পছন্দ, কিন্তু যখন তারা দেখলো তাদের কর্তৃত্ব হুমকির মুখে তারা তাকে সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিল,’ বলেন মাসুদ, ‘আর এখন মনে হচ্ছে নওয়াজ শরীফের সময়।’ তিনি ও অন্য পর্যবেক্ষকরা কিছু সংকেত দেখতে পাচ্ছেন যেটা বলছে যে লন্ডনে থাকার সময় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মি. শরীফের সমালোচনার পরও, তাদের মধ্যে একটা বোঝাপড়া হয়েছে।

 

তারা মনে করিয়ে দেন যে শরীফও তার রাজনীতির শুরুর দিকে সেনাবাহিনীর সহায়তা পেয়েছেন এবং তিনিও এনিয়ে ইমরান খানের মতোই তার বিরুদ্ধে সমালোচনাগুলোকে অস্বীকার করেছেন। তবে এরপর তার ক্যারিয়ার জুড়ে বেশিরভাগ সময় শরীফের সাথে সেনাবাহিনীর সম্পর্ক জটিল থেকেছে, এবং এখন এসে সেটা ঠিক কেমন রূপ নেবে? ‘তিনি ‘ইয়েস স্যার’ ধরণের মানুষ হবেন না’- বলেন সাবেক এমপি নাদিম আফজাল চান।

 

তিনি সেনাবাহিনীর সাথে শরিফের মতানৈক্যের ইতিহাসের কথা মনে করেন। ‘তবে তিনি তার সীমানা ভালো করেই জানেন যে কখন সেটা অতিক্রম করা যাবে আর কখন যাবে না,’ বলেন চান, যিনি ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় তার মুখপাত্র হিসেবে কাজ করেছেন।

 

তবে চান ও অন্য পর্যবেক্ষরাও মনে করেন, কোন এক পর্যায়ে ঠিকই আবার দু পক্ষের মধ্যে বিবাদ হবে – এটা শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র। তবে এসব কিছুর আগে নির্বাচনের জন্য একটা তারিখ ঠিক করতে হবে এবং অর্থনীতিকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে হবে যা আসন্ন রাজনৈতিক প্রচারণার মূল বিষয় হয়ে উঠবে। সূত্র: বিবিসি।

 


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ইসলামী আইনজীবী পরিষদের ১৩তম কেন্দ্রীয় সম্মেলন রবিবার

ইসলামী আইনজীবী পরিষদের ১৩তম কেন্দ্রীয় সম্মেলন রবিবার

কমলনগরে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ আহত ৩

কমলনগরে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ আহত ৩

কুড়িগ্রামে জেলা বিএনপির ১২টি ইউনিট বিলুপ্ত ঘোষণা

কুড়িগ্রামে জেলা বিএনপির ১২টি ইউনিট বিলুপ্ত ঘোষণা

তারাকান্দায় বাসের ধাক্কায় আহত-৪

তারাকান্দায় বাসের ধাক্কায় আহত-৪

কুয়েটে অনুষ্ঠিত হলো ন্যাশনাল আইডিয়া কেস কম্পিটিশন ‘বিজব্যাটেল’

কুয়েটে অনুষ্ঠিত হলো ন্যাশনাল আইডিয়া কেস কম্পিটিশন ‘বিজব্যাটেল’

ভারতের ড্রেসিংরুম চ্যাপেল যুগের মতো বিধ্বস্ত: হরভজন

ভারতের ড্রেসিংরুম চ্যাপেল যুগের মতো বিধ্বস্ত: হরভজন

জুনে জাফর-২ ও পায়া উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করবে ইরান

জুনে জাফর-২ ও পায়া উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করবে ইরান

আন্দোলনের ইমেজ বিশ্বকে জানাতে হবে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

আন্দোলনের ইমেজ বিশ্বকে জানাতে হবে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

সাতক্ষীরা কালিগঞ্জে বাঁশ ও বেত শিল্প প্রায় বিলুপ্ত

সাতক্ষীরা কালিগঞ্জে বাঁশ ও বেত শিল্প প্রায় বিলুপ্ত

দুই যাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ৪ সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে- গ্রেপ্তার- ১

দুই যাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ৪ সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে- গ্রেপ্তার- ১

হবিগঞ্জে সাড়ে ৭ কোটি টাকার মাদকদ্রব্য ধ্বংস করেছে বিজিবি

হবিগঞ্জে সাড়ে ৭ কোটি টাকার মাদকদ্রব্য ধ্বংস করেছে বিজিবি

ছাত্রদলের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি শুরু

ছাত্রদলের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি শুরু

শুরু হয়েছে 'শার্ক ট্যাঙ্ক বাংলাদেশ সিজন–২ এর রেজিষ্ট্রেশন; কি থাকবে এবারের পর্বে?

শুরু হয়েছে 'শার্ক ট্যাঙ্ক বাংলাদেশ সিজন–২ এর রেজিষ্ট্রেশন; কি থাকবে এবারের পর্বে?

‘২০ বছরের অধিক সাজাখাটা বন্দিদের অবিলম্বে মুক্তি দিন’

‘২০ বছরের অধিক সাজাখাটা বন্দিদের অবিলম্বে মুক্তি দিন’

বাংলাদেশে ঢুকে গাছের ডাল কাটল বিএসএফ, সীমান্তে উত্তেজনা

বাংলাদেশে ঢুকে গাছের ডাল কাটল বিএসএফ, সীমান্তে উত্তেজনা

নদীতে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করায় ৬ জন গ্রেফতার, ড্রেজার জব্দ

নদীতে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করায় ৬ জন গ্রেফতার, ড্রেজার জব্দ

ইরানের সুপ্রিম কোর্টের সামনে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত দুই বিচারক

ইরানের সুপ্রিম কোর্টের সামনে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত দুই বিচারক

কলাপাড়ায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব, প্রকল্প পরিচালকের গাড়ী বহর আটকে দিল বিক্ষোভকারীরা

কলাপাড়ায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব, প্রকল্প পরিচালকের গাড়ী বহর আটকে দিল বিক্ষোভকারীরা

সাজিদ-নোমানের ঘূর্ণিতে ১৩৭ রানেই শেষ উইন্ডিজ

সাজিদ-নোমানের ঘূর্ণিতে ১৩৭ রানেই শেষ উইন্ডিজ

কেন মেলোনির সামনে হাঁটু গেড়ে বসলেন আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী?

কেন মেলোনির সামনে হাঁটু গেড়ে বসলেন আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী?