অভিবাসীদের তাড়াতে নীতি বদল করবে জার্মানি?

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

০৮ নভেম্বর ২০২৩, ০১:২০ পিএম | আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৩, ০১:২০ পিএম

অভিবাসীদের স্রোতে চাপের মুখে পড়েছে জার্মান সরকার। বার্লিনে প্রতিদিন প্রায় দুইশ জন অভিবাসী বা শরণার্থী এসে পৌঁছান। তাদের প্রাথমিকভাবে একটি সাবেক বিমানবন্দরের রিসেপশন ফেসিলিটিতে রাখা হয়। কিছুদিনের মধ্যেই তাদের শহরের মধ্যে ফ্ল্যাটে সরিয়ে নেয়ার কথা। কিন্তু শহরে আবাসনে এত ফ্ল্যাট পাওয়া দুষ্কর। তাই এই বিমানবন্দরেই চার হাজার মানুষ এক বছর ধরে বসবাস করছেন। আরো আট হাজার মানুষ যাতে থাকতে পারেন, তার ব্যবস্থা হচ্ছে।

 

দেশের অন্য শহরের অবস্থাও বার্লিনের থেকে আলাদা নয়। ২০২৩ সালে দুই লাখ ২০ হাজার অভিবাসন-প্রত্যাশী জার্মান কর্তৃপক্ষের কাছে আশ্রয়ের জন্য আবেদন জানিয়েছেন। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেন থেকে অভিবাসীদের ঢল নেমেছে। প্রতিদিন আরো বেশি করে মানুষ নিজেদের নাম নথিভুক্ত করছে। জার্মানি জুড়েই পৌরসভা বা ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলগুলি জানিয়েছে, তারা বুঝতে পারছে না, কী করে এত অভিবাসীকে আশ্রয় দেয়া যাবে? একে তো এত মানুষকে আশ্রয় দেয়ার জন্য উপযুক্ত সংখ্যক বাড়ি বা ফ্ল্যাট নেই, তার উপর প্রশাসনে কর্মী কম, স্কুলে জায়গা নেই, আতঙ্কিত অভিবাসীদের কাউন্সেলিংয়ের জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই।

 

৫৩ শতাংশ মেয়র বা ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিল জানিয়েছে, তাদের উপর বাড়তি বোঝা চেপেছে। জার্মান অ্যাসোসিয়েশন অফ টাউন অ্যান্ড মিউনিসিপ্যালিটিসের মুখপাত্র জানিয়েছেন, মানুষের মনে অভিবাসন নীতি নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে। তিনি জানিয়েছেন, অধিকাংশ জায়গায় অভিবাসীদের জন্য খরচ করার মতো অর্থ নেই। অভিবাসীদের নিয়ে গবেষণা করছেন বরিস। তার সমাক্ষায় পাঁচভাগের মধ্যে একভাগ মানুষ বলেছেন, অভিবাসীদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হোক।

 

জার্মানি ইতিমধ্যে প্রায় আড়াই লাখ অভিবাসন প্রত্যাশীর আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। কিন্তু দুই লাখ মানুষকে ফেরত পাঠানো যাচ্ছে না, কারণ, হয় কোনো দেশ তাদের নিতে রাজি নয়, অথবা তারা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে এসেছেন বা তাদের শরীর এতই অসুস্থ যে নিজেদের দেশে চিকিৎসা সম্ভব নয়। গত অক্টোবরে আরো বেশি সংখ্যায় অবিবাসীদের ফেরত পাঠানোর জন্য সরকার একটি বিল তৈরি করেছিল। কিন্তু প্রতিটি শহর বা পৌরসভায় এখনো অবিবাসনপ্রত্যাশীরা এসে যাচ্ছেন। তাই বরিস মনে করেন, আইন কড়া করেও লাভ নেই।

 

কিছু রাজনীতিক দাবি করেছেন, অভিবাসী বা শরণার্থীদের সামাজিক সুরক্ষায় কাটছাঁচ করা হোক। ইউরোপের দেশগুলির তুলনায় জার্মানিতে সামাজিক সুরক্ষার পরিমাণ বেশি বলে মানুষ বেশি করে আসছেন। রক্ষণশীল রাজনীতিকদের মতে, এটাই জার্মানিতে এত বেশি মানুষের আশ্রয় নেয়ার কারণ। তাদের হাতে অর্থ দেয়া উচিত নয়।

 

যে সব প্রাপ্তবয়স্ক রিসেপশন সেন্টারে আছেন, তারা খাবার পান এবং প্রতি মাসে সর্বাধিক ১৫০ ইউরো হাতখরচ পান। এই হাতখরচের বিষয়টি আইনে উল্লেখ করা আছে এবং আদালত জানিয়ে দিয়েছে, খেয়ালখুশিমতো তা কমানো যাবে না। অ্যাসোসিয়েশন অফ টাইন অ্যান্ড মিউনিসিপ্যালিটিসের বক্তব্য, ইউরোপের অন্য দেশে যে ব্যবস্থা আছে, জার্মানিতেও একই ব্যবস্থা চালু করা উচিত। সূত্র: ডয়চে ভেলে।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
ভারতের সঙ্গে আমাদের সীমান্ত সমস্যার সমাধান হবে আলোচনায় : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানের অনুষ্ঠানিকতা শুরু
ঐতিহ্যবাহী ওষুধ পরীক্ষায় তৃতীয় স্থানে ইরান
একই গাড়িতে শপথ অনুষ্ঠানে পৌঁছলেন ট্রাম্প ও বাইডেন
আরও

আরও পড়ুন

গফরগাঁওয়ে অসহায় হতদরিদ্রদের মধ্যে দেয়া হলো কম্বল

গফরগাঁওয়ে অসহায় হতদরিদ্রদের মধ্যে দেয়া হলো কম্বল

আত্মীয়ের জানাজায় যাওয়ার পথে বাস চাপায় নিজেই লাশ হলেন মোস্তফা

আত্মীয়ের জানাজায় যাওয়ার পথে বাস চাপায় নিজেই লাশ হলেন মোস্তফা

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

ভারত থেকে এলো পৌনে ৬ হাজার টন চাল

ভারত থেকে এলো পৌনে ৬ হাজার টন চাল

ভারতের সঙ্গে আমাদের সীমান্ত সমস্যার সমাধান হবে আলোচনায় : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ভারতের সঙ্গে আমাদের সীমান্ত সমস্যার সমাধান হবে আলোচনায় : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানের অনুষ্ঠানিকতা শুরু

ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানের অনুষ্ঠানিকতা শুরু

ঐতিহ্যবাহী ওষুধ পরীক্ষায় তৃতীয় স্থানে ইরান

ঐতিহ্যবাহী ওষুধ পরীক্ষায় তৃতীয় স্থানে ইরান

একই গাড়িতে শপথ অনুষ্ঠানে পৌঁছলেন ট্রাম্প ও বাইডেন

একই গাড়িতে শপথ অনুষ্ঠানে পৌঁছলেন ট্রাম্প ও বাইডেন

সৌদি আরবে ব্যাপক ধরপাকড়, ২১ হাজার অভিবাসী গ্রেপ্তার

সৌদি আরবে ব্যাপক ধরপাকড়, ২১ হাজার অভিবাসী গ্রেপ্তার

শেরপুরে ৪ মামলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বাবু কারাগারে

শেরপুরে ৪ মামলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বাবু কারাগারে

শপথের আগে ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানালেন পুতিন

শপথের আগে ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানালেন পুতিন

গোরাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

গোরাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

আবু সাঈদ হত্যা বেরোবির ৫৬ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার, ১৫ জনের বিরুদ্ধে হবে মামলা

আবু সাঈদ হত্যা বেরোবির ৫৬ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার, ১৫ জনের বিরুদ্ধে হবে মামলা

বিরলে জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের চুড়ান্ত খেলা ও পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত

বিরলে জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের চুড়ান্ত খেলা ও পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত

ঈশ্বরগঞ্জে তারুণ্যের উৎসব ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত

ঈশ্বরগঞ্জে তারুণ্যের উৎসব ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত

ট্রাম্প ভাঙলেও রীতি রক্ষা করলেন বাইডেন

ট্রাম্প ভাঙলেও রীতি রক্ষা করলেন বাইডেন

লক্ষ্মীপুরে কৃষি জমির মাটি কাটায় লাখ টাকা জরিমানা

লক্ষ্মীপুরে কৃষি জমির মাটি কাটায় লাখ টাকা জরিমানা

হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প, স্বাগত জানালেন বাইডেন

হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প, স্বাগত জানালেন বাইডেন

চকরিয়ায় বসতবাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা, লুটপাট, ব্যবসায়ীকে গুলির ঘটনায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

চকরিয়ায় বসতবাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা, লুটপাট, ব্যবসায়ীকে গুলির ঘটনায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

৬ সংস্কার কমিশনের মেয়াদ বেড়েছে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত

৬ সংস্কার কমিশনের মেয়াদ বেড়েছে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত