আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনে তিন শিশুসহ ৫ জন ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন। এই ঘটনার পর শহরটিতে ব্যাপক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এই ঘটনা ঘটলেও পুলিশ এখনো জানে না, এই ছুরিকাঘাতের পেছনের কারণ কী বা এই দাঙ্গার পেছনে কী কারণ জড়িত। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এই ঘটনার পর ডাবলিনের গণপরিবহন সেবা স্থগিত করা হয়েছে এবং স্থানীয়দের প্রয়োজন ছাড়া নিকটস্থ প্রসূতি সেবা হাসপাতালে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ও’কনেল স্ট্রিটে পুলিশ ও অভিবাসনবিরোধীদের মধ্যকার সংঘর্ষের পর স্থানীয় প্রশাসন এই ঘোষণা দেয়। এর আগে, ও’কনেল স্ট্রিটের মাথায় একটি ডাবল ডেকার বাসে আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এর পাশাপাশি বেশ কয়েকটি হোটেল, দোকান এমনকি আবাসিক ভবনের জানালাও ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা।

ডাবলিনের পুলিশ কমিশনার ড্রিউ হ্যারিস সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘এগুলো কলঙ্কজনক পরিস্থিতি। আমরা আশঙ্কা করছি- চরম ডানপন্থী মতাদর্শে উজ্জীবিত একদল সম্পূর্ণ পাগল, গুন্ডা গোষ্ঠী এই চরম সহিংসতায় নিয়োজিত।’ তিনি জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৪০০ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ সময় তিনি আরও জানান, পুলিশের একটি গাড়িও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

হ্যারিস আরও বলেন, ‘হামলার সঙ্গে সম্পর্কিত তদন্তের সব পথ খোলা রাখা হয়েছে।’ হ্যারিসের আগে, ডাবলিন পুলিশের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, পুলিশ ধারণা করছে যে- ঘটনাটি সন্ত্রাসের সঙ্গে যুক্ত নয় নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেছিলেন, ‘তবে সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আমি কোনো অনুমানভিত্তিক তথ্য প্রকাশ করব না। যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা নিশ্চিত না হচ্ছি যে, তাদের উদ্দেশ্য কী, কেন এটি ঘটল তার আগে আমরা কোনো তথ্য জানাব না।’

এদিকে, ছুরিকাঘাতে গুরুতর জখম হয়ে পাঁচ বছরের এক কিশোরীকে জরুরি চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। প্রায় ৪০ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকেও গুরুতর জখম অবস্থায় চিকিৎসা দেওয়া করা হচ্ছে। আহত বাকি ৩ জনের একজন প্রায় ৩০ বছরের একজন নারী ও যথাক্রমে ৫ ও ৬ বছরের ছেলে ও মেয়ে। শেষের তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

ঘটনার বিষয়ে পুলিশ বলছে, আনুমানিক স্থানীয় সময় দেড়টার দিকে ডাবলিনের পার্নেল স্কয়ারে বেশ কয়েকজন লোককে আক্রমণ করে দুর্বৃত্তরা। তবে হামলার প্রাথমিক পর্যায়েই সাধারণ লোকজন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।

ডাবলিনে এমন দাঙ্গা প্রায় নজিরবিহীন। আইরিশ পার্লামেন্টেও নির্বাচিত কোনো কট্টর ডানপন্থী দল বা রাজনীতিবিদ নেই। তবে গত বছর থেকেই অভিবাসীবিরোধী ছোট ছোট বিক্ষোভ বেড়েছে দেশটিতে। তবে সাম্প্রতিক বিক্ষোভ দেশটির আইনপ্রণেতাদের আলোড়িত করেছে।