গাজার কসাই নেতানিয়াহু, হামাস স্বাধীনতাকামী : এরদোগান
০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৩১ এএম | আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৩১ এএম
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অমানবিক হত্যাক-ের পরিস্থিতি দেখে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গাজার কসাই বলে আখ্যায়িত করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েপ এরদোগান। শুধু তা-ই না, ইসরাইলকে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বলে উল্লেখ করেন তিনি। এদিকে মাতৃভূমি রক্ষার সংগ্রামের জন্য হামাসকে তিনি একটি স্বাধীনতাকামী সংগঠন বলেছেন বলে জানিয়েছে ফ্রান্সের বার্তা সংস্থা এএফপি। এরদোগান এক টেলিভিশনে মন্তব্য করে বলেন, নেতানিয়াহু ইতোমধ্যে গাজার কসাই হিসেবে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছেন। তিনি বলেন, গাজায় হত্যাকা- ঘটিয়ে বা ইহুদি বিরোধিতাকে সমর্থন করে সব ইহুদিকে অনিরাপদ করে তুলেছেন নেতানিয়াহু। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এরদোগানের এই মন্তব্য ইসরাইলের সঙ্গে তুরস্কের উদীয়মান সম্পর্ক ছিন্ন করার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তাদের সম্পর্ক প্রায় এক দশক খারাপ ছিল। সেটা ঠিক করে গত বছর আবার রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দিয়েছিল দুই পক্ষ। দুই দেশের সম্পর্ক ভালো হওয়ার পর বাণিজ্য সম্পর্কোন্নয়ন এবং দীর্ঘমেয়াদি বিশ্বাস গড়ে তোলার আলোচনাও শুরু করেছিলেন তারা। কিন্তু গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ইতোমধ্যে তেলআবিবের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করেছে তুরস্ক। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার হামাস-ইসরাইলের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছেন মধ্যস্থতাকারীরা। গত সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত ৬০ জন ইসরাইলি জিম্মি ও ১৮০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। অপর এক খবরে বলা হয়, গাজায় ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চলার ষষ্ঠ দিনে নতুন করে সহিংসতার খবর এসেছে। অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শহর এবং জেনিন শরণার্থী শিবিরে বড় ধরনের অভিযান চালিয়েছে ইসরাইল। গাজায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও বাড়ানো নিয়ে কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের আলোচনা চলার মধ্যেই ইসরাইল পশ্চিম তীরে এ অভিযান চালাল। জেনিনের পরিস্থিতি সম্পর্কে ফিলিস্তিনের এক রাজনীতিবিদ মুস্তফা বিবিসি রেডিও ফোর কে জানান, ইসরাইলি বাহিনী দুটি বাড়ি ধ্বংস করেছে এবং বহু জায়গা অবরুদ্ধ করে রেখেছে। জেনিনের দুটি বড় হাসপাতালে ঢুকছে ইসরাইলি সেনারা। তারা জেনিনের শরণার্থী শিবিরেও ঢুকেছে। তারা সেখানকার অবকাঠামো ধ্বংস করছে। পরিস্থিতি খুবই ভয়ঙ্কর। তারা পুরো জেনিন এলাকাকে সামরিক এলাকা ঘোষণা করেছে। ইসরাইলের অবরোধের কারণে জেনিনের হাসপাতালে দুই ঘণ্টারও বেশি সময়ধরে আটকা পড়ে আছে এমএসএফ এর দাতব্য চিকিৎসাকর্মী দল। তবে ইসরাইল হাসপাতালের পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করেনি। জেনিনে গুলিতে দুই শিশু নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ। ওদিকে, ইসরাইল পশ্চিম তীরের অভিযানে দুই নেতৃস্থানীয় ‘সন্ত্রাসীকে’ হত্যার দাবি করেছে। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু আবারও তার অটল অবস্থান ব্যক্ত করে বলেছেন, পূর্ণ যুদ্ধবিরতি কখনওই হবে না। তার বাহিনী শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবে। তিনি বলেন, “যুদ্ধের শুরু থেকেই আমি তিনটি লক্ষ্য স্থির করেছি। হামাসকে নির্মূল করা, আমাদের সব জিম্মিকে ফিরিয়ে আনা এবং ইসরাইল রাষ্ট্রের জন্য গাজা আবার হুমকি হবে না সেটি নিশ্চিত করা। “কিন্তু সম্প্রতি কয়েকদিনে আমি একটি প্রশ্ন শুনছি: আমাদের জিম্মিদের ফেরানোর এই পর্যায় শেষের পর ইসরাইল কি আবার লড়াইয়ে ফিরবে? স্পষ্টতই আমার উত্তর হচ্ছে, হ্যাঁ। এটাই আমার নীতি। গোটা ইসরাইলি নিরাপত্তা মন্ত্রিপরিষদ, গোটা সরকার, সেনারা এর পক্ষে আছে। গণমানুষও এর পক্ষে আছে। তাই আমরা ঠিক এটাই করব।” ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে এই যুদ্ধবিরতি চলছে গত শুক্রবার থেকে। বুধবার গাজায় ছিল যুদ্ধবিরতির ষষ্ঠদিন। এই কয়দিনের যুদ্ধবিরতিতে মুক্তি পেয়েছে হামাসের হাতে বন্দি ইসরাইলি জিম্মিরাসহ ইসরাইলের জেলে বন্দি বেশকিছু সংখ্যক ফিলিস্তিনি। গাজায় ঢুকেছে বেশ কয়েক ট্রাক ত্রাণ সাহায্যও। হামাসের হাতে আরও ১৬১ জন জিম্মি আছে বলে ধারণা ইসরাইলের। তাদের মুক্ত করতে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও বাড়াতে দোহায় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতাকারীরা। তবে এর মধ্যেই গাজায় ইসরাইলের হামলায় এক জিম্মির পরিবারের মৃত্যু হওয়ার হামাসের দাবি আলোচনায় কালো ছায়া ফেলেছে। হামাসের হাতে সপরিবারে জিম্মি হয়েছিল ইসরাইলি বিবাসের পরিবার। হামাস বলছে, গাজায় ইসরাইলের বিমান হামলায় বিবাস, তার স্ত্রী শিরি বিবাস এবং তাদের ৪ বছর ও ১০ মাস বয়সী ছেলে নিহত হয়েছে। হামাসের এই দাবির সত্যাসত্য তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইসরাইল। গত ৭ অক্টোবর গাজার সীমান্ত সংলগ্ন ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের নজিরবিহীন হামলা সবাইকে হতবাক করে দেয় এবং সাধারণ ইসরাইলিরা হতভম্ব হয়ে পড়ে। সেই হামলায় ১২০০ জন নিহত হয় এবং তাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক বলে ইসরাইল জানিয়েছে। ওই দিন প্রায় ২৪০ জনকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে গিয়ে জিম্মি করে রাখে হামাস। হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে প্রায় সবদিক থেকে গাজা অবরুদ্ধ করে ভয়াবহ আক্রমণ শুরু করে ইসরাইল। তাদের অবিরাম বোমাবর্ষণ ও গোলা হামলায় ১৪ হাজারেরও বেশি গাজাবাসী ফিলিস্তিনি নিহত হয়, এদের প্রায় ৪০ শতাংশ শিশু। এএফপি, বিবিসি রেডিও ফোর।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বিদেশে সাবেক ভুমিমন্ত্রীর আট হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি
ইউনূস গুড উইলের প্রতিফলন দেখতে চায় জনগণ: রিজভী
সময় থাকতে হাসিনাকে ফেরত পাঠান : ভারতকে দুদু
রুশ সেনা কুরস্কের দুটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে
বিমানবন্দর এলাকা হবে শব্দদূষণ মুক্ত
যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান ৭ দিনের রিমান্ডে
বিচার শুরু হলে হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে : আইন উপদেষ্টা
লোহাগড়ায় দিনে-দুপুরে বসতবাড়ি পুড়ে ছাই
রাষ্ট্রীয় কল্যাণে অবদান রাখার সুযোগ দিন আলেমদেরকে
দুই মেডিকেল টেকনোলজিস্টের ওপর হামলার ঘটনায় বিএমটিএর নিন্দা
জিএম কাদের ও মজিবুল হক চুন্নুকে অবিলম্বে আটক করতে হবে : আবু হানিফ
উপদেষ্টাদের আয় ও সম্পদ বিবরণী প্রকাশের নীতিমালা অনুমোদন
সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল-এমপি হেনরিসহ ৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতিকে একবছর ,সাধারন সম্পাদককে দুই বছর একাডেমীক কার্যক্রম থেকে বহিস্কারসহ উভয়কে হোস্টেল থেকে আজীবন বহিস্কার।
ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে ৫ শিক্ষার্থী গ্রেফতার
রাজউক চেয়ারম্যানের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল
‘স্পেন্ড অ্যান্ড উইন’ ক্যাম্পেইনের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেছে মাস্টারকার্ড
সিটি ব্যাংক আনল অভূতপূর্ব ভিসা ইনফিনিট ক্রেডিট কার্ড
শেখ হাসিনার কোনো ক্ষমা নেই, জবাব তাকে দিতেই হবে : মির্জা ফখরুল
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে খুনিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে