সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার মারা গেছেন
০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:২৩ এএম | আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:২৩ এএম
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ১০০ বছর। সর্বশেষ তিনি নিক্সন ও ফোর্ড প্রশাসনে দেশটির শীর্ষ কূটনীতিক ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছিলেন। তার প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক কনসালটিং প্রতিষ্ঠান - কিসিঞ্জার এসোসিয়েটস এর এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, জার্মান বংশোদ্ভূত এ সাবেক কূটনীতিক কানেক্টিকাটে তার বাড়িতে মারা গেছেন। তবে বিবৃতিতে তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি।
কয়েক দশকের ক্যারিয়ারে কিসিঞ্জার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। কখনো কখনো আলোচিত, সমালোচিত এবং বিতর্কিতও হয়েছেন। কিসিঞ্জার ১৯২৩ সালে জার্মানিতে জন্ম গ্রহণ করেন। এরপর নাৎসি জার্মানি থেকে পালিয়ে পরিবারের সাথে ১৯৩৮ সালে প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। পরে ১৯৪৩ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব লাভ করেন। এরপর তিনি দেশটির সামরিক বাহিনী ও পরে কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সে কাজ করেন। ছাত্র হিসেবে ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডি ডিগ্রি লাভের পর তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে শিক্ষকতা করেছেন। পরে ১৯৬৯ সালে তখনকার প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন তাকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেন।
মূলত এটিই তাকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতিতে ব্যাপক প্রভাব তৈরির সুযোগ করে দেয়। নিক্সন প্রশাসনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। এরপর প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ড এর সময়েও কিসিঞ্জারের নেতৃত্বে পরিচালিত কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফল হিসেবে ইসরাইল ও এর প্রতিবেশীদের মধ্যে ইয়ম কিপুর যুদ্ধ অবসানে মধ্যস্থতার সুযোগ এনে দেয়। এছাড়া ভিয়েতনাম যুদ্ধ অবসানে প্যারিস শান্তি চুক্তিতেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। পরে ১৯৭৭ সালে সরকারী চাকরী থেকে বিদায়ের পর কিসিঞ্জার জনস্বার্থ সম্পর্কিত বিষয়ের বিশ্লেষক হিসেবে ভূমিকা অব্যাহত রাখেন। বিভিন্ন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ও অনেক আইন প্রণেতারা বিভিন্ন বিষয়ে তার পরামর্শ নিয়েছেন।
একশো বছর বয়সেও তিনি সক্রিয় ছিলেন। সর্বশেষ চলতি বছর তিনি চীন সফর করেন। সম্প্রতি আমেরিকার শীর্ষ কর্মকর্তারা একের পর পর চীন সফর করেছেন। এর মধ্যে জুলাইয়ে হঠাৎ করে পূর্ব কোন ঘোষণা ছাড়া বেইজিং সফর করেন ১০০ বছর বয়সী হেনরি কিসিঞ্জার। বিবিসি নিউজের এশিয়া ডিজিটাল সংবাদদাতা টেসা ওয়াং সেসময় লিখেছিলেন, ‘১৯৭০এর দশকে চীন যখন কূটনৈতিকভাবে একঘরে হয়েছিল, তখন দেশটিকে সে অবস্থা থেকে বের করে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন হেনরি কিসিঞ্জার।’ চীন তাকে ‘পুরনো বন্ধু’ হিসাবে মূল্যায়ন করে এসেছে সব সময়।
একুশটি বই লিখেছেন তিনি এবং কাজ করেছেন অনেক কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে। গত মে মাসে তার বয়স একশ বছর পূর্ণ হয়েছিলো। তবে তখনও তিনি সক্রিয় ছিলেন। জুলাই মাসে বেইজিং সফরে গিয়ে চীনা প্রেসিডেন্টের সাথে তার বৈঠকটি বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিলো। তিনি স্ত্রী, দুই সন্তান ও পাঁচ নাতি নাতনি রেখে গেছেন।
সমালোচনা আর বিতর্ক : যদিও বহু বছর ধরে কিসিঞ্জারকে ঘিরে নানা ধরণের সমালোচনাও হয়েছে। বিশেষ করে তার সোভিয়েত ইউনিয়ন নীতি এবং চিলির অগাস্টো পিনোশেসহ বিশ্বজুড়ে বহু কর্তৃত্বপরায়ন শাসকগোষ্ঠীকে সমর্থন দেয়ার জন্যও সমালোচনা হয় তার। শীতল যুদ্ধের সময়কার ‘রিয়ালপলিটিকে’র মূর্ত প্রতীক বলেও তাকে মনে করেন অনেকেই। কাম্বোডিয়ায় বেআইনিভাবে বোমা ফেলে গণহত্যা থেকে চিলিতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে উৎখাত - এমন বহু ঘটনায় বারে বারে নাম জড়িয়েছে কিসিঞ্জারের। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের চালানো গণহত্যাকেও প্রচ্ছন্ন সমর্থন করে স্বাধীন বাংলাদেশেও তার পরিচয় এক নিন্দিত চরিত্র হিসেবেই। সূত্র : বিবিসি।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বিদেশে সাবেক ভুমিমন্ত্রীর আট হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি
ইউনূস গুড উইলের প্রতিফলন দেখতে চায় জনগণ: রিজভী
সময় থাকতে হাসিনাকে ফেরত পাঠান : ভারতকে দুদু
রুশ সেনা কুরস্কের দুটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে
বিমানবন্দর এলাকা হবে শব্দদূষণ মুক্ত
যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান ৭ দিনের রিমান্ডে
বিচার শুরু হলে হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে : আইন উপদেষ্টা
লোহাগড়ায় দিনে-দুপুরে বসতবাড়ি পুড়ে ছাই
রাষ্ট্রীয় কল্যাণে অবদান রাখার সুযোগ দিন আলেমদেরকে
দুই মেডিকেল টেকনোলজিস্টের ওপর হামলার ঘটনায় বিএমটিএর নিন্দা
জিএম কাদের ও মজিবুল হক চুন্নুকে অবিলম্বে আটক করতে হবে : আবু হানিফ
উপদেষ্টাদের আয় ও সম্পদ বিবরণী প্রকাশের নীতিমালা অনুমোদন
সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল-এমপি হেনরিসহ ৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতিকে একবছর ,সাধারন সম্পাদককে দুই বছর একাডেমীক কার্যক্রম থেকে বহিস্কারসহ উভয়কে হোস্টেল থেকে আজীবন বহিস্কার।
ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে ৫ শিক্ষার্থী গ্রেফতার
রাজউক চেয়ারম্যানের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল
‘স্পেন্ড অ্যান্ড উইন’ ক্যাম্পেইনের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেছে মাস্টারকার্ড
সিটি ব্যাংক আনল অভূতপূর্ব ভিসা ইনফিনিট ক্রেডিট কার্ড
শেখ হাসিনার কোনো ক্ষমা নেই, জবাব তাকে দিতেই হবে : মির্জা ফখরুল
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে খুনিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে