ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ আশ্বিন ১৪৩১

তিন রাজ্যে ভরাডুবি, প্রত্যাশা পূরণে কেন ব্যর্থ কংগ্রেস?

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:৫৯ পিএম | আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:৫৯ পিএম

 

 

 

ভারতের চার রাজ্যের ভোটে কার্যত ভরাডুবি কংগ্রেসের। বিশেষ করে গোবলয়ের ৩ রাজ্যে সেভাবে দাগই কাটতে পারল না হাত শিবির। অথচ এই চার রাজ্য থেকেই ভালো ফলের প্রত্যাশা করেছিল কংগ্রেস। অন্তত ৩ রাজ্যে সরকার গড়ব, শুরু থেকেই বলে আসছিলেন কংগ্রেস নেতারা। তাহলে নির্বাচনে এই ভরাডুবি হল কেন? রইল সম্ভাব্য পাঁচ কারণ।

 

১। মোদি ফ্যাক্টর: অধুনা ভারতীয় রাজনীতিতে একটি প্রবাদ তৈরি হয়েছে, ‘মোদি হ্যায়, তো মুমকিন হ্যায়।’ ৩ রাজ্যের ফলাফলে সেই প্রবাদ আরও একবার ফলে গেল। গোবলয়ের তিন রাজ্যে যথেষ্ট কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিল। এই তিন রাজ্যেই বিজেপি মুখ হিসাবে এগিয়ে দিয়েছিল খোদ প্রধানমন্ত্রীকে। কংগ্রেস যেখানে স্থানীয় নেতৃত্বকে সামনে রেখে ভোটে নেমেছে, সেখানে বিজেপি স্থানীয় নেতাদের সেভাবে গুরুত্বই দেয়নি। পুরো প্রচার অভিযানই চলেছে মোদিকে কেন্দ্র করে। গেরুয়া শিবিরের প্রত্যাশা ছিল, স্থানীয় নেতাদের প্রতি যাবতীয় যা অসন্তোষ সব উড়ে যাবে মোদি আসরে নামলে। হলও সেটাই। প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা, সাংগঠনিক দুর্বলতা সব ঢেকে দিলেন প্রধানমন্ত্রী। তাছাড়া গোবলয়ে বিজেপির সঙ্গে সরাসরি লড়াইয়ে কংগ্রেস যে বারবার অসহায় হয়ে যায়, সেটা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল।

 

২। অন্তর্কলহ: শচীন পাইলট বনাম অশোক গেহলট। টিএস সিংদেও বনাম ভুপেশ বাঘেল। কমল নাথ বনাম দিগ্বিজয় সিং। উত্তর ভারতের যে তিন রাজ্যে ভোট হয়েছে, তিন রাজ্যেই কোন্দলে জর্জরিত কংগ্রেস। রাজস্থানে পাঁচ বছর পর পর সরকার বদলের রীতি পালটে ফেলার একটা সুবর্ণ সুযোগ ছিল কংগ্রেসের সামনে। কিন্তু পাইলট-গেহলটের দ্বন্দ্ব শেষ পর্যন্ত হাত শিবিরের জন্য আত্মঘাতী হয়ে গেল। গেহলটকে মুখ করায় সেভাবে প্রচারই করলেন না পাইলট। ফলে গুর্জর ভোটে ভাগ বসাল বিজেপি। আবার ছত্তিশগড়ে মুখ্যমন্ত্রী ভুপেশ বাঘেল এবং উপমুখ্যমন্ত্রী টিএস সিংদেওয়ের লড়াই সর্বজনবিদিত। তারা দুজনেই লড়েছেন, তবে একে অপরের হাত ধরে নয়। একে অপরের বিরুদ্ধে। মধ্যপ্রদেশেও শেষবেলায় কমল নাথ এবং দিগ্বিজয়ের মতো বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছিল।

 

৩। একলা চলোর মাশুল: পাঁচ রাজ্যের ভোটে ইন্ডিয়া জোটকে কার্যত উপেক্ষা করে গিয়েছে কংগ্রেস। কোথাও প্রচারে ইন্ডিয়া নেতাদের ডাকা হয়নি। মধ্যপ্রদেশ-রাজস্থানে সমাজবাদী পার্টি- সিপিএমের মতো তথাকথিত ছোট দলগুলিকে পাত্তাই দেয়নি কংগ্রেস। এমনকী ইন্ডিয়া জোটের নেতারা ভোপালে যৌথ জনসভা করতে চেয়েছিলেন। সেটাকেও পাত্তা দেননি কমল নাথ। যার ফল ভুগতে হল হাত শিবিরকে।

 

৪। দেদার খয়রাতি ও দুর্নীতি: এ বলে আমায় দেখ, ও বলে আমায় দেখ। ভোটের আগে যে দুই রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস, সেই দুই রাজ্যেই ব্যাপক খয়রাতি চালিয়ে গিয়েছে। মধ্যপ্রদেশেও ব্যাপক প্রপ কিন্তু মজার কথা হল, এই খয়রাতিতে কংগ্রেসকেও টপকে গিয়েছে বিজেপি। যা বিরাট ফ্যাক্টর হয়েছে চার রাজ্যেই। তাছাড়া মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড়ে কংগ্রেস অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসেও ভুগেছে। কংগ্রেস নেতারা ধরেই নিয়েছিলেন, নিজেরা মাঠে না নামলেও জনতা তাদের জিতিয়ে দেবে। বাস্তবে সেটা হয় না। আবার যে দুই রাজ্যে কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল, সেই দুই রাজ্যে দুর্নীতির অভিযোগও ছিল ব্যাপক।

 

৫। রাহুলের দিশাহীন প্রচার: কংগ্রেসের প্রচারেও এবার সঠিক দিশা ছিল না। কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্বে একসুরে কথা বলেছেন, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আরেক সুরে কথা বলেছেন। রাজ্য নেতৃত্ব যেখানে রাজ্যের ইস্যু নিয়ে সরব হয়েছেন, সেখানে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অর্থাৎ রাহুল গান্ধী এসে বলেছেন জাতিগত জনগণনার কথা। যা আমজনতার বোধগম্য হয়নি।

 


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

সাধ্যের বাইরে গিয়ে মা-বাবার চাহিদা পূরণ করা প্রসঙ্গে?

সাধ্যের বাইরে গিয়ে মা-বাবার চাহিদা পূরণ করা প্রসঙ্গে?

প্রথম বিদেশ সফরে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রথম বিদেশ সফরে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

ইসলামি দেশগুলোর মধ্যে জ্ঞানীয় বিজ্ঞানে শীর্ষ দুয়ে ইরান

ইসলামি দেশগুলোর মধ্যে জ্ঞানীয় বিজ্ঞানে শীর্ষ দুয়ে ইরান

জাইসের লেন্সের জয়জয়কার, স্মার্টফোনেও দুর্দান্ত

জাইসের লেন্সের জয়জয়কার, স্মার্টফোনেও দুর্দান্ত

সাগর-রুনি হত্যার বিচারের প্রাথমিক স্তর পরিষ্কার করা দরকার : শামসুজ্জামান দুদু

সাগর-রুনি হত্যার বিচারের প্রাথমিক স্তর পরিষ্কার করা দরকার : শামসুজ্জামান দুদু

আন্দোলন সংগ্রামে থাকা নেতাকর্মীদের পিছনে রাখার সুযোগ নেই : আমিনুল হক

আন্দোলন সংগ্রামে থাকা নেতাকর্মীদের পিছনে রাখার সুযোগ নেই : আমিনুল হক

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টার সাথে বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টের বৈঠক

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টার সাথে বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টের বৈঠক

যশোরে সাবেক এমপি, এসপিসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

যশোরে সাবেক এমপি, এসপিসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি স্থানান্তরে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া রিটের আদেশ আগামী রোববার

এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি স্থানান্তরে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া রিটের আদেশ আগামী রোববার

গণহত্যাকারী আ.লীগের সঙ্গে আলোচনা নয় : আসিফ নজরুল

গণহত্যাকারী আ.লীগের সঙ্গে আলোচনা নয় : আসিফ নজরুল

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি’র সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি শুরু

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি’র সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি শুরু

প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে নোবিপ্রবি শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের বেতন প্রদান

প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে নোবিপ্রবি শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের বেতন প্রদান

সিল্ক রোড উৎসবে ইরানের ‘মেলোডি’

সিল্ক রোড উৎসবে ইরানের ‘মেলোডি’

বেনজির ও আজিজসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের

বেনজির ও আজিজসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের

৬ ব্যাংকের এমডি নিয়োগ বাতিল

৬ ব্যাংকের এমডি নিয়োগ বাতিল

১৪৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এলো সেপ্টেম্বরের ১৭ দিনে

১৪৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এলো সেপ্টেম্বরের ১৭ দিনে

ইউনূস গুড উইলের প্রতিফলন দেখতে চায় জনগণ: রিজভী

ইউনূস গুড উইলের প্রতিফলন দেখতে চায় জনগণ: রিজভী

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর আমীর আলী চৌধুরীর ইন্তেকাল

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর আমীর আলী চৌধুরীর ইন্তেকাল

ভারতের কাছ থেকে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে: আইন উপদেষ্টা

ভারতের কাছ থেকে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে: আইন উপদেষ্টা

মেজর জে. অব. তারেক সিদ্দিকসহ ১০ জনের নামে মামলা

মেজর জে. অব. তারেক সিদ্দিকসহ ১০ জনের নামে মামলা