চীনের বৃহত্তম মৎস্য গবেষণা জাহাজটি তার প্রথম মিশনে যাত্রা শুরু করেছে। চীনের গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, লান হাই (ব্লু ওশান) ২০১ গত বৃহস্পতিবার সাংহাই থেকে উত্তর-পশ্চিম ভারত মহাসাগরের গভীর সমুদ্রে জরিপ চালানোর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে।
চাইনিজ একাডেমি অব ফিশারি সায়েন্সেসের ইস্ট চায়না সি ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফাং হুই বলেন, সমুদ্র চীনের প্রোটিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস এবং আমাদের সামুদ্রিক কৌশলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ফাং বলেন, দূরবর্তী মৎস্য সম্পদের টেকসই উন্নয়ন এবং চীনের সামুদ্রিক অধিকার রক্ষার জন্য উন্মুক্ত মহাসাগরে মৎস্য সম্পদের জরিপ পরিচালনা করা গুরুত্বপূর্ণ।
ইনস্টিটিউটের মতে, এই সফর চার মাস স্থায়ী হবে এবং ১০০ টি স্থান জুড়ে থাকবে। মৎস্য সম্পদের আয়তন এবং জৈবিক বৈচিত্র্যের পাশাপাশি প্রধান মৎস্য সম্পদের আশেপাশের হাইড্রোলজিকাল এবং আবহাওয়াগত উপাদানগুলি মূল্যায়ন করা হবে।
জাহাজটির ক্যাপ্টেন তাং জিয়াওলিন বলেন, এই অফশোর জরিপ মিশন চীনের দূরবর্তী সমুদ্র অঞ্চলের মৎস্যচাষকে (বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আওতায়) শিল্প উন্নয়নের সাথে একীভূত করতে এবং আন্তর্জাতিক মৎস্য প্রশাসনে অংশ নেওয়ার সময় চীনের মাথাকে উন্নত করতে সহায়তা করতে পারে।
বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ মাছের ভোক্তা চীন। আবার তারাই বিশ্বের বৃহত্তম সামুদ্রিক খাদ্য রফতানিকারক। চীনের জলসীমা বিশ্বের যে কোন দেশের মধ্যেও বৃহত্তম।
উত্তর কোরিয়ার মতো নিম্ন আয়ের দেশগুলোর জলসীমায় মাছ ধরার ক্ষেত্র নিয়ে চীনা জাহাজগুলোও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে।
চীন সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রশান্ত মহাসাগর, ভারত ও আটলান্টিক মহাসাগর এবং অ্যান্টার্কটিকার আশেপাশের সাগরের পাশাপাশি সহযোগী দেশগুলির আওতাধীন জলসীমায় ২,৫৫১টি দূরবর্তী নৌবহরের জাহাজ চলাচল করেছে।
কিন্তু লন্ডনভিত্তিক থিংক ট্যাংক ওভারসিজ ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউটের ২০২০ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রকৃত সংখ্যা ১৭ হাজারের কাছাকাছি হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, জাহাজগুলি অন্যান্য এখতিয়ারে নিবন্ধিত হতে পারে বলে এই খাতের উপর চীনা সরকারের ব্যাপক নিয়ন্ত্রণ রয়েছে কিনা তাও অস্পষ্ট।
অক্টোবরে স্টেট কাউন্সিল ইনফরমেশন অফিস কর্তৃক প্রকাশিত একটি শ্বেতপত্র অনুসারে, বেইজিং তার আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতাগুলি আরও ভালভাবে পূরণের জন্য তার দূরবর্তী নৌবহরের আকার নিয়ন্ত্রণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং তাদের জ্বালানী ভর্তুকি বাতিল করেছে।
তবে মাছ ধরার জাহাজ ও সরঞ্জাম, মৎস্য ক্যাটালগিং এবং এ শিল্পের উন্নয়নে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অবদানের দিক থেকে চীন এখনও উন্নত দেশগুলোর চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে।