চীনের ভোক্তা মূল্য তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত কমেছে। দুর্বল অভ্যন্তরীণ চাহিদা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বিষয়ে সন্দেহ সৃষ্টি করায় ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির চাপ বাড়ছে। জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর (এনবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ভোক্তা মূল্য সূচক (সিপিআই) এক বছর আগের তুলনায় ০.৫ শতাংশ কমেছে।

ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ জু তিয়ানচেন বলেন, এই তথ্য নীতিনির্ধারকদের জন্য উদ্বেগজনক হবে। এর পেছনে তিনটি প্রধান কারনের কথা উল্লেখ করেছেন বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়া, চীন ভ্রমণের আগ্রহ হ্রাস এবং দীর্ঘস্থায়ী সরবরাহের ঘাটতি।
জু আরও বলেন, ডেভেলপার এবং স্থানীয় সরকারগুলোর ধীরগতির কারণে ২০২৪ সালে নিম্নমুখী চাপ বাড়তে থাকবে এবং বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

খাদ্য ও জ্বালানির দাম বাদ দিয়ে বার্ষিক মূল মুদ্রাস্ফীতি ছিল ০.৬ শতাংশ, যা অক্টোবরের সমান।
জোন্স ল্যাং লাসালের প্রধান অর্থনীতিবিদ ব্রুস পাং বলেন, দুর্বল সিপিআই রিডিং ক্রমাগত মন্থর চাহিদার বিষয়ে একটি সতর্কবার্তা। এ বিষয়টিই এখন চীনের জন্য নীতিগত অগ্রাধিকার হওয়া উচিত যদি তারা টেকসই এবং ভারসাম্যপূর্ণ প্রবৃদ্ধি সরবরাহ করতে চায়।
যদিও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে ভোক্তা মূল্য সাম্প্রতিক সময়ে মুদ্রাস্ফীতির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর প্যান গংশেং গত সপ্তাহে বলেছিলেন, মুদ্রাস্ফীতি `উপরের দিকে যাবে’ বলে আশা করা হচ্ছে।

চীনের অর্থনীতি এ বছর একাধিক প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ক্রমবর্ধমান স্থানীয় সরকারের ঋণ, অস্থীতিশীল আবাসন বাজার এবং দেশে-বিদেশে মন্থর চাহিদা।

মঙ্গলবার মুডিজ চীনের ক্রেডিট রেটিং নিয়ে একটি ডাউনগ্রেড সতর্কতা জারি করে বলেছে যে, স্থানীয় সরকার এবং রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলিকে রক্ষা করতে এবং সম্পত্তি সংকট নিয়ন্ত্রণে ব্যয় অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে।
চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় এই রেটিংকে হতাশাজনক বলে অভিহিত করেছে। তারা আশা ব্যক্ত করেছে, অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত হবে এবং ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণযোগ্য।
ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থা পলিটব্যুরো শুক্রবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ ২০২৪ সালে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধি করবে এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করবে।