যখন বিশ্বের অনেক কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখনও মুদ্রাস্ফীতি কমানোর চেষ্টা করছে তখন চীন মূল্য হ্রাসের সাথে লড়াই করছে। শনিবার চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ভোক্তা মূল্য সূচক (সিপিআই) বার্ষিক ভিত্তিতে নভেম্বর মাসে ০.৫% হ্রাস পেয়েছে।

এই পতন অক্টোবর থেকে মুদ্রাস্ফীতির হারকে ত্বরান্বিত করেছে। চাহিদা বাড়াতে এবং দামের নিম্নগামীতা রোধ করতে বেইজিংয়ের কাছ থেকে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিলো।

চীনা নীতিনির্ধারকরা রিয়েল এস্টেট সংকট, বেকারত্ব এবং ভোক্তাদের আস্থা হ্রাসের সাথে লড়াই করা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য আর্থিক সহায়তা জোরদার করার অঙ্গীকার করার কয়েক দিন পরে এই তথ্য এসেছে।

রিয়েল এস্টেট বাজারের মন্দা এবং দুর্বল ব্যয়ের কারণে চীন এই বছরের বেশিরভাগ সময় লড়াই করছে। মুদ্রাস্ফীতি অর্থনীতির জন্য খারাপ কারণ ভোক্তা এবং সংস্থাগুলি দাম আরও কমার প্রত্যাশায় ক্রয় বা বিনিয়োগ বন্ধ করতে পারে। এটি অর্থনীতিকে আরও ধীর করতে পারে এবং একটি দুষ্টচক্র তৈরি করতে পারে।

ভোক্তা মুদ্রাস্ফীতি ফেব্রুয়ারি থেকে বাড়তে শুরু করে এবং দুই বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো জুলাইমাসে নেতিবাচক হয়ে ওঠে। এটি আগস্টে ইতিবাচক অবস্থানে ফিরে এসেছিল এবং সেপ্টেম্বরে সমান ছিল, তবে অক্টোবরে শূন্যের নীচে নেমে এসেছিল।
সিটির বিশ্লেষকরা রবিবারের এক প্রতিবেদনে বলেছেন, অভ্যন্তরীণ খাদ্যদ্রব্যের দাম, আন্তর্জাতিক তেলের মূল্য সংশোধন এবং দুর্বল অভ্যন্তরীণ চাহিদার কারণে চীনের মুদ্রাস্ফীতি পরিস্থিতি আরও গভীর হচ্ছে।

তারা আরও বলছে, মূল্য পতন এখন পণ্য থেকে পরিসেবাগুলোতে ছড়িয়ে যাচ্ছে।
খাদ্যদ্রব্যের দাম নভেম্বরে ৪.২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। বিশেষ করে শুয়োরের মাংসের দাম কমেছে ৩১.৮ শতাংশ।
নভেম্বরে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কয়েক মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছানোর পরে গ্যাসোলিনের দাম হ্রাস পেয়েছে।
ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির চাপ চীনের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বিষয়ে আরও সন্দেহ সৃষ্টি করেছে।
গত মাসের শেষের দিকে পিপলস ব্যাংক অব চায়নার গভর্নর প্যান গংশেং হংকংয়ে বলেছিলেন যে, চীন অর্থনীতিকে ঠিক রাখার জন্য আর্থিক নীতিকে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখবে এবং আগামী মাসগুলিতে ভোক্তার দাম বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
শুক্রবার চীনের শীর্ষ কর্মকর্তারা পলিটব্যুরো বৈঠকে বসেন এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদা সম্প্রসারণ এবং ভোক্তা ব্যয় বাড়ানোর জন্য আরও কিছু করার প্রতিশ্রুতি দেন।

পলিটব্যুরো বৈঠক বার্ষিক সেন্ট্রাল ইকোনমিক ওয়ার্ক কনফারেন্স (সিইডব্লিউসি)। এই বৈঠক করা হয় সাধারণত আগামী বছরের অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণ করা জন্য।