বিখ্যাত আনসারি পরিবারের ছেলে মুখতার যেভাবে যোগীর শত্রুতে পরিণত হয়
২৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:৩৩ পিএম | আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:৩৩ পিএম
ভারতের বিজেপিশাসিত রাজ্য উত্তরপ্রদেশের জেলে বন্দী অবস্থায় জনপ্রিয় মুসলিম নেতা মুখতার আনসারির মৃত্যুর পরে সেরাজ্যে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আনসারি বৃহস্পতিবার রাতে মারা গেছেন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। তার পরিবার অভিযোগ করছে দীর্ঘ সময় ধরে জেলে বিষ খাওয়ানো হয়েছিল তাকে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই বলছে আনসারির নিজের জেলা মৌ ছাড়াও আলিগড়, ফিরোজাবাদ, প্রয়াগরাজ, কাসগঞ্জ-সহ রাজ্যের একাধিক জেলায় আধাসামরিক বাহিনীর সঙ্গে ফ্ল্যাগ মার্চ করেছে পুলিশ। গাজীপুরে তার বাসভবনের বাইরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে, সেখানে রাত থেকে হাজির হয়েছেন তার প্রচুর সমর্থক। পুলিশের দাবি, মঙ্গলবার তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে জেল থেকে এনে হাসপাতালে ভর্তি করে আইসিইউতে রাখা হয়। সেখানেই বৃহস্পতিবার রাতে মারা যান বলে মেডিক্যাল বুলেটিনে জানানো হয়েছে।
তার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ম্যাজিস্টেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে উত্তর প্রদেশ পুলিশ। তিন সদস্যের একটি তদন্ত দল গড়া হয়েছে। তার দেহের ময়না তদন্ত করবেন দুজন চিকিৎসক, এমনটাও জানিয়েছে প্রশাসন। খুন, চাঁদাবাজি সহ ৬৫টি মামলা ছিল তার বিরুদ্ধে, যার মধ্যে আছে ১৪টি খুনের মামলা। উত্তর প্রদেশ আর পাঞ্জাবের বিভিন্ন জেলে ২০০৫ সাল থেকে বন্দী থেকেছেন তিনি।
তারপরেও জনপ্রিয়তা কমেনি তার। বন্দী অবস্থাতেই বারে বারে ভোটেও জিতেছেন। পাঁচ বার ভোটে জিতে বিধানসভার সদস্য হয়েছিলেন তিনি। বিবিসিতে প্রচারিত একটি পুরনো প্রতিবেদন অনুযায়ী শুধু তিনি নন, তার পুরো পরিবারই রাজনীতিতে যুক্ত চার পুরুষ ধরে। আনসারির পরবর্তী প্রজন্মও রাজনীতিতে যোগ দিয়েছে। তার পুত্রও দুবছর আগে বিধানসভা সদস্য হয়েছেন ভোটে জিতে। আবার তার এক সম্পর্কিত চাচা হামিদ আনসারি ছিলেন ভারতের উপরাষ্ট্রপতি।
তার দাদা ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী মুখতার আহমেদ আনসারি। মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর ভক্ত আনসারি গত শতাব্দীর কুড়ির দশকে জাতীয় কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। পরে আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটির উপাচার্যও হয়েছিলেন তিনি। আবার মুখতার আনসারির মায়ের বাবা সেনাবাহিনীতে ব্রিগেডিয়ার ছিলেন। ব্রিগেডিয়ার মুহম্মদ উসমান ১৯৪৮ সালে অধিকৃত কাশ্মীরে পাকিস্তানী হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রেই নিহত হন। মুখতার আনসারির বাবা সুবহানুল্লাহ আনসারির একটা পরিষ্কার ভাবমূর্তি ছিল গাজীপুর এলাকায়। তিনি কমিউনিস্ট পার্টি করতেন স্থানীয়ভাবে।
বলা হয় উত্তরপ্রদেশের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ও কট্টর হিন্দুত্ববাদী যোগী আদিত্যনাথের ওপরে একবার হামলা চালিয়েছিল মুখতার আনসারির দল। মৌ জেলায় ২০০৫ সালে দাঙ্গার মধ্যেই আদিত্যনাথের গাড়ি বহরের ওপরে হামলা। হয়। স্থানীয় সাংবাদিকরা বলছেন ওই ঘটনাই আনসারির রাজনৈতিক জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে শুরু করে। ওই হামলার পরেই ধীরে ধীরে উত্তর প্রদেশে তার প্রভাব কমতে শুরু করে।
একের পর এক মামলায় তার জেল হতে থাকে। আর যোগী আদিত্যনাথ মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে মুখতার আনসারি ভয় পেয়ে যায় যে তাকে উত্তরপ্রদেশের জেলে রাখা হলে মেরে ফেলা হতে পারে। তাই তাকে পাঞ্জাবের রোপার জেলে স্থানান্তরিত করা হয়। তবে তারপরেও যোগীর রোষানল তাকে বাঁচানো যায়নি।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ছাগলনাইয়ায় দুই হাত কাটা যুবকের লাশ উদ্ধার
কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি লিটন, সম্পাদক মামুন
খুবি কেন্দ্রে ঢাবি ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্নের লক্ষ্যে নানা সিদ্ধান্ত
ট্রাম্পের জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের আদেশ স্থগিতে ১৮টি রাজ্যের মামলা
টেলিকমে অপ্রয়োজনীয় লাইসেন্স বাতিল করা হবে : বিটিআরসি চেয়ারম্যান
ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে প্রাইভেট কারচালক নিহত
খালেদা জিয়ার নাইকো মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য
আনিসুল হকের আয়কর নথি জব্দ
সাবেক ক্রিকেটার দুর্জয়ের সম্পদ জব্দ, ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ
বন্দরে বকেয়া বেতন দাবিতে পারটেক্স শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি
অবৈধভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছে ইস্ট এশিয়ান ইউনিভার্সিটি : ইউজিসি
ধামরাইয়ে ৩ দিনেও সন্ধান মেলেনি ইজিবাইক চালকের
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্মদিন পালিত
গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যমুক্ত সমৃদ্ধশালী দেশ গড়তে প্রয়োজন সমন্বিত প্রচেষ্টা -নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক
বিদ্যুৎ উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিল পবিস কর্মীরা
উত্তরা উলামা আইম্মা পরিষদের কমিটি গঠন
ডাকাতির ভিডিও ভাইরাল হলেও অধরা রূপগঞ্জের রুবেল
সিনিয়র-জুনিয়র সংঘাতের দায়ে অভিযুক্ত দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার
পদ্মা ব্যাংকের ১২২তম পরিষদ সভা অনুষ্ঠিত
ভারতের ছত্তিশগড়ে বন্দুকযুদ্ধে ২০ মাওবাদী নিহত