মানুষের চামড়া দিয়ে তৈরি বইয়ের মলাট
৩০ মার্চ ২০২৪, ০৯:০১ এএম | আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৪, ০৯:০৫ এএম
যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত ছিল মানব চামড়ায় বাঁধানো একটি বই। ৯০ বছর ধরে বইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংরক্ষণে থাকলেও তার মলাট যে মানুষের চামড়ায় তৈরি, তা নিশ্চিত হওয়া যায় ২০১৪ সালে। তারপরও এক দশক এ অবস্থাতেই বইটি নিজেদের সংরক্ষণে রাখলেও এবার সেই মলাট সরিয়ে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ‘ডেস্টিনিজ অব দ্য সোল’ নামে বইটি থেকে মানব চামড়ায় তৈরি মলাটটি অপসারণ করা হয়েছে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
হার্ভার্ড জানিয়েছে, চামড়াটি অপসারণ করা হয়েছে এবং ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তার শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করা হবে।
জানা গেছে, ১৮৮০ সালে লেখা হয় এই বইটি। ‘দেস দেসতিনেস দে লামে’ শিরোনামে আত্মা ও মৃত্যু-পরবর্তী জীবন নিয়ে লেখা এই বইটির লেখক আর্সেন হোসায়ের। পরে বইটি নিজের চিকিৎসক বন্ধু ডা. লুডোভিচ বোল্যান্ডকে দেন লেখক। বইপ্রেমী ওই চিকিৎসক পরবর্তীতে এক অপরিচিত মানসিক বিকারগ্রস্ত নারীর চামড়া দিয়ে বাঁধাই করেন বইটি। মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয়েছিল ওই নারীর।
১৯৩৪ সাল থেকে বইটি স্থান পায় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হাফটন লাইব্রেরিতে। এরপর একটা পর্যায়ে বইটির মলাট নিয়ে সন্দেহ হওয়ার পর ব্যাপক অনুসন্ধান চালান বিজ্ঞানী ও পর্যবেক্ষকরা। অবশেষে ২০১৪ সালে এসে সিদ্ধান্তে উপনীত হতে সক্ষম হন গবেষকরা। বইটির মলাটে মানুষেরই চামড়া ব্যবহার করা হয়েছে বলে শতভাগ নিশ্চিত হন তারা।
এরপর এক দশক ধরে বইটি মানব চামড়ার মলাটেই সংরক্ষিত থাকলেও দুদিন আগে সেই মলাট সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ। অনেক বিবেচনা ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
অজ্ঞাত ওই নারীর এই দেহাবশেষের সম্মানজনক সৎকারের পাশাপাশি এখন ওই নারীর জীবন নিয়েও গবেষণা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাফটন লাইব্রেরি।
অবশ্য কেন মানুষের চামড়া দিয়ে বই বাঁধাইয়ের মতো ‘উদ্ভট’ কাজটি করেছিলেন ওই ব্যাখ্যাও বইয়ের ভেতর একটি চিরকুটে দিয়ে গিয়েছিলেন ডা. বোল্যান্ড। চিরকুটে ওই চিকিৎসক লিখেছিলেন, “মানব আত্মা নিয়ে লেখা একটি বই অবশ্যই মানুষের চামড়া দিয়ে বাঁধাই হওয়ার দাবি রাখে।”
আজকাল মানুষের চামড়া দিয়ে বই মলাট করাকে উদ্ভট বা ঘৃণ্য কাজ হিসেবে গণ্য করা হলেও এক সময় অবশ্য এর প্রচলন ছিল।
বোল্যান্ড লিখেছিলেন, ষোড়শ শতাব্দী থেকে ‘এনথ্রোপোডার্মিক’ শব্দটি বেশ প্রচলিত, যার অর্থ হচ্ছে মানুষের চামড়া দিয়ে বইয়ের মলাট করা। ওই শতকে এর প্রচলন ছিল।
তখন কেউ অপরাধ করলে তার চামড়ায় তা লিখে দেওয়া হতো। অনেক সময় কেউ কেউ মরে যাওয়ার পর তার চামড়া দিয়ে বইয়ের মলাট বানিয়ে তাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের অনুরোধও করে যেতেন।
একই নোটে তার সংগ্রহে থাকা আরেকটি বই ‘সাভিয়েরিন পাইনাস’ও মানুষের চামড়ায় বাঁধাই করা বলে নিজের লেখা চিরকুটে উল্লেখ করে যান বোল্যান্ড। বইটি বর্তমানে লন্ডনের ‘ওয়েলকাম’ লাইব্রেরিতে আছে বলে জানা গেছে।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
নরওয়েতে যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত,নিহত ১ আহত ৪
কুর্দিস্তানে ৩২টি লক্ষ্যবস্তুতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে তুরস্ক
রোহিঙ্গা সংকটে ‘জরুরি মনোযোগ’ দিতে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আহ্বান ড. ইউনূসের
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েই শতকোটি টাকার মালিক সাদ্দাম
বড় পর্দায় 'দাগী' নিয়ে ফিরছেন আফরান নিশো
জাস্টিন ট্রুডোকে পদত্যাগের দাবি জানিয়ে ২৪ আইনপ্রণেতার চিঠি
গভীর রাতে যে বার্তা দিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সেনাপ্রধান ফিরছেন আজ, সফরে গুরুত্ব পেল যে বিষয়গুলো
ওড়িশায় আঘাতের পর ছত্তীসগঢ়-মধ্যপ্রদেশের দিকে এগোচ্ছে ‘দানা’
অব্যাহত ইসরাইলি হামলায় গাজায় প্রাণহানির সংখ্যা ছাড়াল ৪২ হাজার ৮০০
ইসরাইলি বিমান হামলায় লেবাননে ৩ সাংবাদিক নিহত
যুক্তরাষ্ট্রে আগাম ভোট দিয়েছেন প্রায় ৩ কোটি ভোটার
সেই এডিসি সানজিদাসহ পুলিশের ৩৫ কর্মকর্তা বদলি
বিশ্বের অন্যতম নিঃসঙ্গ দেশ দক্ষিণ কোরিয়া
রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রিয়াজ গ্রেপ্তার
বেনাপোল বন্দর দিয়ে গত ৯ দিনে ১,৪২১ মে:টন কাচা মরিচ আমদানি
আজ বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজ পড়াবেন নতুন খতিব মুফতি আব্দুল মালেক
সমন্বয়ক পরিচয়ে ৮৩ ভরি স্বর্ণ, ১৫ লাখ টাকা লুট
জম্মু-কাশ্মীরে দুই ভারতীয় সেনাসহ চারজন নিহত
যশোর বোর্ডে এ বছরের এইচএসসি পরীক্ষা ফলাফল চ্যালেঞ্জ করে ৬৬ হাজার আবেদন জমা রেকর্ড