ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪ | ১৬ কার্তিক ১৪৩১

প্রতিদ্বন্দ্বী ফাতাহর সঙ্গে আলোচনায় বসার ইঙ্গিত হামাসের

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

০৬ জুন ২০২৪, ০৩:৪৯ পিএম | আপডেট: ০৬ জুন ২০২৪, ০৩:৪৯ পিএম

 

 

 

গাজায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসন অবসানের পর ফিলিস্তিনের গাজা ও পশ্চিম তীরের শাসক গোষ্ঠী একীভূত হতে আলোচনায় বসতে পারে। পাঁচটি ফিলিস্তিনি সূত্র জানিয়েছে, দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গভীর বিভাজন পুনর্মিলনের আলোচনার অগ্রগতিকে সীমিত করতে পারে। তবে এসব বৈঠক ইঙ্গিত দিচ্ছে গাজায় যুদ্ধ শেষ হলেও হামাসের প্রভাব থাকবে।

 

গাজা ও পশ্চিম তীরের কর্মকর্তারা বলেছেন, জুনের মাঝামাঝি চীনে এই আলোচনা শুরু হতে পারে। এর আগে এই ইস্যুতে দুটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, একটি চীনে এবং অপরটি রাশিয়া। এই বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীরা যখন গাজায় হামাস-ইসরাইলের একটি যুদ্ধবিরতির চুক্তি নিয়ে আলোচনার চেষ্টা করছেন তখন চীনে হামাস-ফাতাহ বৈঠক আয়োজনের খবর সামনে এলো। উভয় প্রক্রিয়াতেই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উঠে আসছে যুদ্ধের পর কীভাবে উপত্যকাটি শাসন করা হবে।

 

একাধিক পশ্চিমা দেশ হামাসকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে মনে করে। ৭ অক্টোবর ইসরাইলে তাদের গোষ্ঠীটির হামলায় ১২০০ জন নিহতের আগে থেকেই পশ্চিমা দেশগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। এই হামলার পরই গাজায় আগ্রাসন শুরু করে ইসরাইল। ইসরাইলি অভিযানে হামাসের সামরিক শক্তির ক্ষয় হয়েছে। তবে ইসরাইলের দখলে থাকা পশ্চিম তীরের শাসক গোষ্ঠী ফাতাহ দলের সঙ্গে হামাস কর্মকর্তাদের বৈঠক ইঙ্গিত দিচ্ছে যুদ্ধের পরে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড নিয়ে তাদের লক্ষ্য সম্পর্কে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হামাস সূত্র এমনটিই জানিয়েছে রয়টার্সকে।

 

যুদ্ধ শুরুর পূর্বে গাজা শাসন করছিল হামাস। সূত্র মতে, গোষ্ঠীটি স্বীকার করছে এক সময় গাজায় যুদ্ধ শেষ হলে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি যে নতুন সরকার হবে, সেটির অংশ তারা হতে পারবে না।ওই সূত্র ও হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা বাসিম নাইম বলেছেন, তারা চায় পশ্চিম তীর ও গাজায় একটি নতুন টেকনোক্র্যাটি প্রশাসন গড়ে তুলতে ফাতাহ রাজি হোক। যা হবে একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক সমঝোতা।

 

চীনে প্রথম দফার আলোচনায় অংশ নেয়া নাইম এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ফিলিস্তিনি সত্তার পুনর্গঠনের জন্য আমরা রাজনৈতিক অংশীদারিত্ব ও রাজনৈতিক ঐক্যের কথা বলছি। সরকারে হামাসের থাকা বা না থাকা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ দাবি না। পুনর্মিলনের জন্য এটিকে হামাস কোনও শর্ত হিসেবেও দেখছে না। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় যুদ্ধের লক্ষ্য হিসেবে হামাসকে নির্মূল করার লক্ষ্যের কথা বললেও বেশিরভাগ পর্যবেক্ষক মনে করেন যে, যুদ্ধবিরতির পর হামাসের অস্তিত্ব কিছু মাত্রায় থেকে যাবে।

 

যুদ্ধ শেষে পশ্চিম তীরের শাসকগোষ্ঠী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের গাজা শাসনের প্রতি সমর্থন রয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। এই প্রশাসনের নেতৃত্বে রয়েছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। তার শাসন পশ্চিম তীরে সীমাবদ্ধ এবং রামাল্লা-কেন্দ্রিক। ফিলিস্তিনিদের প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে বৈশ্বিকভাবে তারা স্বীকৃত এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে নিরাপত্তা সহযোগিতা পায়।

 

আব্বাসের আগে ফাতাহ গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ইয়াসির আরাফাত। তিনি ছিলেন অবিসংবাদিত ফিলিস্তিনি নেতা। হামাসের উত্থানের আগ পর্যন্ত ফিলিস্তিনি অধিকারের পক্ষে ফাতাহ একাই লড়াই করে আসছিল। পাঁচটি সূত্র ইঙ্গিত দিয়েছে, আলোচনা চললেও দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধপূর্ণ সম্পর্কের কারণে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের একক শাসনের চুক্তিতে পৌঁছার সম্ভাবনা কম। এই অবস্থানকে সমর্থন করছেন বিশেষজ্ঞরাও। সূত্র: রয়টার্স।

 


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

আগের শিরোপা ‘বাই চান্স’ আসেনি,মেয়েরা প্রমাণ করেছে: সাবিনা

আগের শিরোপা ‘বাই চান্স’ আসেনি,মেয়েরা প্রমাণ করেছে: সাবিনা

অকস্মাৎ মৃত্যু ইসলামে কাম্য নয়

অকস্মাৎ মৃত্যু ইসলামে কাম্য নয়

হাসিনা পালিয়ে না গেলে দেশে গৃহযুদ্ধ শুরু হতো: ইসমাইল সম্রাট

হাসিনা পালিয়ে না গেলে দেশে গৃহযুদ্ধ শুরু হতো: ইসমাইল সম্রাট

কেরানীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ,আহত ১০

কেরানীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ,আহত ১০

দস্তগীরের বানোয়াট প্রশ্নের সমুচিত জবাব দিলেন ম্যাথু মিলার

দস্তগীরের বানোয়াট প্রশ্নের সমুচিত জবাব দিলেন ম্যাথু মিলার

বাংলাদেশের মাটিতে যত খুন হয়েছে, বিচার বহির্ভূত হত্যকান্ড হয়েছে সবার বিচার এই মাটিতেই হবে; শামা ওবায়েদ

বাংলাদেশের মাটিতে যত খুন হয়েছে, বিচার বহির্ভূত হত্যকান্ড হয়েছে সবার বিচার এই মাটিতেই হবে; শামা ওবায়েদ

রাসুল সা. এর জীবনাদর্শই আদর্শ রাষ্ট্র গঠনের একমাত্র চাবিকাঠি- সিলেটে জমিয়ত মহাসচিব মাওলানা আফেন্দী

রাসুল সা. এর জীবনাদর্শই আদর্শ রাষ্ট্র গঠনের একমাত্র চাবিকাঠি- সিলেটে জমিয়ত মহাসচিব মাওলানা আফেন্দী

অলরাউন্ডারদের তালিকায় তিনে মিরাজ, শীর্ষ বোলার রাবাদা

অলরাউন্ডারদের তালিকায় তিনে মিরাজ, শীর্ষ বোলার রাবাদা

ডেঙ্গু প্রতিরোধে চাই সচেতনতা

ডেঙ্গু প্রতিরোধে চাই সচেতনতা

শিক্ষাব্যবস্থায় ইসলামী জ্ঞান-গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে

শিক্ষাব্যবস্থায় ইসলামী জ্ঞান-গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে

চুয়াডাঙ্গার সীমান্তবর্তী মাছপাড়ায় অবৈধ ৬টি স্বর্ণের বারসহ চোরাচালান কাজে ব্যবহৃত ১টি মোটরসাইকেল উদ্ধার

চুয়াডাঙ্গার সীমান্তবর্তী মাছপাড়ায় অবৈধ ৬টি স্বর্ণের বারসহ চোরাচালান কাজে ব্যবহৃত ১টি মোটরসাইকেল উদ্ধার

ঢাকাকে বাসযোগ্য করতে হবে

ঢাকাকে বাসযোগ্য করতে হবে

মানবাধিকারের নামে সমাকামিতা প্রমোট করা জনগণ মানবে না

মানবাধিকারের নামে সমাকামিতা প্রমোট করা জনগণ মানবে না

ইসরাইলি হামলায় আরও ১০২ ফিলিস্তিনি নিহত

ইসরাইলি হামলায় আরও ১০২ ফিলিস্তিনি নিহত

পর্তুগাল জমিয়তের উলামায়ে ইসলামের কাউন্সিল সম্পন

পর্তুগাল জমিয়তের উলামায়ে ইসলামের কাউন্সিল সম্পন

শিক্ষার সব স্তরে 'ইসলাম শিক্ষা' বাধ্যতামূলকসহ ৭ দাবি

শিক্ষার সব স্তরে 'ইসলাম শিক্ষা' বাধ্যতামূলকসহ ৭ দাবি

আয়রন ডোমের আদলে তুরস্কের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ

আয়রন ডোমের আদলে তুরস্কের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ

ইরান সামরিক বাজেট তিন গুণ বাড়াবে

ইরান সামরিক বাজেট তিন গুণ বাড়াবে

রহস্যঘেরা মায়া সভ্যতার শহরের খোঁজ মেক্সিকোয়

রহস্যঘেরা মায়া সভ্যতার শহরের খোঁজ মেক্সিকোয়

উষ্ণায়নের প্রভাবে মাউন্ট ফুজিতে তুষারপাতে বিলম্ব

উষ্ণায়নের প্রভাবে মাউন্ট ফুজিতে তুষারপাতে বিলম্ব