আরেকটি গণহত্যার দ্বারপ্রান্তে দুর্ভিক্ষ কবলিত দার্ফুর
২১ জুন ২০২৪, ০৭:১৪ পিএম | আপডেট: ২১ জুন ২০২৪, ০৭:১৪ পিএম
আফ্রিকার অন্যতম বড় দেশ সুদানকে ছারখার করে দিচ্ছে কয়েক দশক ধরে চলমান থাকা গৃহযুদ্ধ। সুদানের সামরিক-জাঞ্জাউইদ যৌথ বাহিনী ও র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের মধ্যে চলতে থাকা এই গোষ্ঠিগত যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ নিহত ও বাস্তুচ্যুত হয়েছে। জাতিসঙ্ঘ বলেছে যে, দার্ফুরে হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে, পাশাপাশি, এটি একটি বিশাল দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন, যা বিশ্বের অন্য বৃহত্তম মানবিক সংকটের সূচনা করেছে। আকারে স্পেনের সমান দার্ফুর অঞ্চলের শহর আল ফাশির এখন বিশ্বব্যাপী সতর্কতার কেন্দ্রে অবস্থান করছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড সতর্ক করেছেন যে, আল ফাশির একটি বড় আকারের গণহত্যার প্রান্তে রয়েছে। জাতিসংঘ বলছে, দুর্ভিক্ষ কবলিত দারফুরে ইতিমধ্যে ১৭ লাখ মানুষ অনাহারে রয়েছে। এবং পূর্ব দার্ফুরে খাদ্য ও ওষুধের সঙ্কট চলছে। দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের নিরীক্ষা নিশ্চিত করেছে যে, যুদ্ধ ক্রমেই তীব্রতর হচ্ছে। ইয়েল হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব এবং সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ নথিভুক্তকারী অলাভজনক সংস্থা সেন্টার ফর ইনফরমেশন রেজিলিয়েন্সের তথ্য-প্রমান বলছে যে, দার্ফুরে হাজার হাজার বাড়ি পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে এবং যে হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার ভূমিকার জন্য একজন র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স কমান্ডারের উপর সম্প্রতি যেমন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তেমন কামান এবং বিমান হামলা সহ বেসামরিক এলাকায় নির্বিচারে বোমা হামলার জন্য সুদানের সামরিক বাহিনীও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের সম্মুখীন হয়েছে। জাতিসংঘের তদন্তকারীরা জানিয়েছে যে, গত শরতে শাদ সংলগ্ন সুদানের সীমান্তে কয়েক দিনের মধ্যে ১৫হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল। এখন আল ফাশিরের বাসিন্দারা এর পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা করছেন। সাম্প্রতিক মাসগুলিতে দক্ষিণ এবং পূর্ব আল ফাশির এবং এর আশেপাশের এলাকাগুলি ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।এই গৃহযুদ্ধে উভয় পক্ষকেই ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ এনেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। জাতিসংঘ দার্ফুরে সহায়তার জন্য ২শ’ ৭০ কোটি ডলার একটি জরুরি প্রস্তাব করলেও এপর্যন্ত এক পঞ্চমাংশেরও কম উপলব্ধ করতে পেরেছে।উল্লেখ্য, ৬০ শতাংশ মুসলিম জনসংখ্যার দেশ সুদানে প্রায় ৮০টি উপজাতি এবং আদি গোষ্ঠি বসবাস করে। ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত দেশটি যুক্তরাজ্য ও মিশরের যৌথ শাসন ব্যবস্থার অধীনে ছিল। ১৯৫৬ সালে এটি স্বাধীনতা লাভ করার পর থেকে সুদানে গোষ্ঠিগত সঙ্ঘাত ক্রমেই বাড়তে থাকে। আয়তনে প্রায় ফ্রান্সের সমান দার্ফুর সুদানের পশ্চিমের একটি অঞ্চল। কয়েক দশক ধরে ব্যাপক হত্যাকান্ড, বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া, ধর্ষণ এবং অপহরণের শিকার হয়েছে অঞ্চলটির প্রায় ১৮ লাখ মানুষ। ২০০৩ এবং ২০০৫ এর মধ্যে সহিংসতা, রোগ এবং অনাহারে আনুমানিক ২লাখ বেসামরিক লোক মারা যায় এবং ২০ লাখ মানুষ এলাকাটি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। সেই সময় এটিকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মানবিক সঙ্কট বলে অভিহিত করা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) মানবতাবিরোধী অপরাধ, ধর্ষণ, জোরপূর্বক বিতাড়ন এবং হণহত্যার দায়ে জন্য বেশ কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
অমিত শাহকে অভিযুক্ত করলেন কানাডার মন্ত্রী, কোনপথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক?
টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন
না.গঞ্জে ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গুতে আরও ৫০ জন আক্রান্ত
উত্তরায় ডেঙ্গু সচেতনতা লিফলেট বিতরণ করেন বিএনপি নেতা মোস্তফা জামান
ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক উত্তেজনার মধ্যে সামরিক বাজেট দ্বিগুণ বাড়াচ্ছে ইরান
ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে সিলেটে প্রথম শহীদ জিলুর মৃত্যু বার্ষিকীতে সিলেট যুবদলের দোয়া মাহফিল
বগুড়ায় স্ত্রী হত্যার দায়ে ১৯ বছর পর স্বামীর মৃত্যুদন্ড
ইসরায়েল-লেবানন যুদ্ধবিরতি চুক্তি শিগগিরই হচ্ছে : লেবাননের প্রধানমন্ত্রী
সাবেক ছাত্রলীগ নেতার মুজেজায় সিলেটে (এক লাফে) অধ্যক্ষ হয়ে যান হাকিম মুহিব বুল্লাহ
আদর্শিক ছাত্র জনতার ভূমিকা রাখতে হবে -মাওলানা ইমতিয়াজ আলম
গাড়িতে অগ্নিসংযোগকারীরা পতিত সরকারের প্রেতাত্মা- মাওলানা ইউনুছ আহমাদ
জকিগঞ্জকে স্বধীন বাংলাদেশের প্রথম মুক্তাঞ্চল হিসেবে ঘোষণার দাবী
ফ্যাসিবাদ হাসিনা গত ১৫ বছরে দেশটাকে তার পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করেছিল -আমতলীতে ভিপি নুরুল হক নুর
সায়মা ওয়াজেদের সাথে কাজ করতে চায় না অন্তর্বর্তী সরকার
রেঞ্জ কর্মকর্তার (এসিএফ) বদলীর আদেশ প্রত্যাহারের দাবীতে শরণখোলায় সুন্দরবনের জেলে মৎস্যজীবিদের মানববন্ধন
তূণমূল নেতাকর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে এসেছে দেশের স্বাধীনতা : সিলেট মহানগর বিএনপি সেক্রেটারী ইমদাদ চৌধুরী
মাদকসেবীদের আড্ডাস্থল বাকৃবির রেলস্টেশন
মানব কল্যাণে চাই সকলের একত্রিত প্রচেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব দ্রুত সংস্কার ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন
সেন্টমার্টিনের অস্তিত্ব ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে হবে