হানিয়ের হত্যা গাজা যুদ্ধবিরতিতে কী প্রভাব ফেলতে পারে?
০৩ আগস্ট ২০২৪, ০৬:৫৭ পিএম | আপডেট: ০৩ আগস্ট ২০২৪, ০৬:৫৭ পিএম
সশস্ত্র ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়েকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে, তার উত্তর খোঁজা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্ত ইঙ্গিত করছে যে তেহরানের যে বাড়িতে তিনি ও তার দেহরক্ষী অবস্থান করছিলেন, সেখানে একটি রকেট আঘাত হানে।
এখন সমস্ত সন্দেহের তীর ইসরাইলের দিকে। কারণ গত বছরের সাতই অক্টোবর হামাস ইসরাইলের ভূখণ্ডে হামলা চালানোর পর ইসরাইল সকল হামাস নেতাকে খুঁজে বের করে শাস্তি দেয়ার শপথ নিয়েছিল। হামাসের ওই হামলার প্রায় ১,২০০ জন ইসরাইলি ও বিদেশি নিহত হন।
মনে করা হয় যে ইসরাইল ইরানের আকাশসীমার বাইরে থেকে লক্ষ্যবস্তুগুলোর দিকে রকেট ছুঁড়েছিল। এই হামলার বিবরণ ধীরে ধীরে প্রকাশিত হচ্ছে এবং রাজনৈতিক প্রভাবও ক্রমশই আলোচিত হচ্ছে। এই হত্যাকাণ্ডের প্রভাব গিয়ে পড়বে গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে চলমান আলোচনার ওপরেও।
ইসমাইল হানিয়ে হয়তো গাজার প্রতিদিনের ঘটনাগুলোতে ভূমিকা পালন করতে পারেননি। কিন্তু হামাসের নির্বাসিত নেতা হিসাবে তিনি কাতার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং মিশরের মধ্যস্থতায় গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনায় খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
গাজার প্রতিদিনের ঘটনাবলী পরিচালনার দায়িত্ব ছিল হামাসের সামরিক শাখার কমান্ডার ইয়াহিয়া সানওয়ারের ওপর। মার্কিন কর্মকার্তারা সম্প্রতি বলেছিলেন যে যুদ্ধবিরতির আলোচনা শীঘ্রই শেষ হতে পারে। যদিও গত সপ্তাহের শেষে রোমে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এর কোনও অগ্রগতি হয়নি। ইসমাইল হানিয়ের হত্যার পর এই আলোচনার কোনও অগ্রগতি হবে, এটি কল্পনা করা খুব কঠিন।
এখন কেন?
এই সব ইস্যুর কারণে কিছু প্রশ্ন উত্থাপিত হয়। যেমন, সকলের ধারণা অনুযায়ী এটা যদি ইসরাইলি আক্রমণ হয়, তবে এখন কেন এই হামলা চালানো হল? হামাসের সাথে সম্পৃক্ত কারো বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়ার ইচ্ছার বাইরে ইসরাইলের লক্ষ্য আর কী ছিল?
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই অঞ্চলের অনেক গোষ্ঠী এবং দেশের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া একত্র করেছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, "আবারও এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের শান্তি অর্জনের কোনও ইচ্ছা নেই।"
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সদর দপ্তর রামাল্লাহ-তে ইসমাইল হানিয়ে হত্যার খবর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। ক্ষমতাসীন ফাতাহ পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ডেপুটি সেক্রেটারি-জেনারেল সাবরি সায়েদাম বিবিসিকে বলেন, "এই ঘটনাটি নরকের দরজা খুলে দেবে।"
সায়েদাম বলেন যে তিনি একই সাথে বিস্মিত হচ্ছেন এবং ক্রোধ অনুভব করছেন। ‘ইসরাইল শুধু ইসমাইল হানিয়ের জীবনকেই নিশানা করেনি, তারা ইরানের বিভিন্ন চুক্তিকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শত্রুতার শেষ দেখার জন্য ইসরাইল সমস্ত আশা ও আকাঙ্ক্ষাকেও হত্যা করেছে।’
ফাতাস ও হামাস দীর্ঘকাল ধরে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু হামাস নেতার মৃত্যুতে ফাতাহ-র উপকৃত হওয়ার বক্তব্যকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন সায়েদাম। তিনি বলেন, “ফিলিস্তিনের রাজনীতিতে কখনও এমন বিশ্বাস ছিল না যে নেতৃত্বকে নির্মূল করা হল অগ্রগতির একমাত্র মাধ্যম।” “এর যদি কোনও প্রভাব থাকেই, তবে তা কেবল আরও বেশি উত্তেজনা ও অসন্তোষ।”
এদিকে রামাল্লাহ ও পশ্চিম তীরে ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সেখানে দোকানপাট সব বন্ধ এবং একটি প্রতিবাদ মিছিল চলছে। রামাল্লাহতে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের জন্য এটি একটি কঠিন সময় হতে পারে। সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে যে ইসমাইল হানিয়ে মাহমুদ আব্বাসের চেয়ে বেশি জনপ্রিয় ছিলেন।
হানিয়েকে যে সময়ে হত্যা করা হয়েছে, তা নির্দেশ করে যে এটি একটি বৃহত্তর ইসরাইলি প্রতিশোধের অংশ। কারণ শনিবার হেজবুল্লাহ-র রকেট হামলার জন্য ইসরাইল অধিকৃত গোলান মালভূমিতে ১২ জন শিশু ও কিশোর নিহত হয়েছে। এরপর মঙ্গলবার বৈরুতে হেজবুল্লাহ-র একজন সিনিয়র কমান্ডারকে হত্যা করা হয়েছে।
সে সময়ই ইসরাইল সতর্ক করেছিল যে তারা ওই হামলার কড়া জবাব দেবে। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা ক্রমাগত বলছেন যে ইরান হল মধ্যপ্রাচ্যের তথাকথিত ‘অ্যাক্সিস অব রেসিসট্যান্স’ এর সংযোগস্থল। এই তথাকথিত অক্ষশক্তির অংশগুলো হল লেবাননের হেজবুল্লাহ, গাজা ও পশ্চিম তীরের হামাস এবং ইয়েমেনের হুথিরা।
বৈরুতে হেজবুল্লাহকে আঘাত করার পর (এবং সম্প্রতি হোদেইদাহতে হুথিদের ওপর হামলার পর) ইরানে হামাস প্রধানের এই হত্যাকাণ্ড সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো ও ইরানি সমর্থকদের জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা। যা অনেকটা এরকম যে, ‘তুমি যেখানেই থাকো, ইসরাইল পারে এবং তোমার কাছে আসবে।’ সূত্র: বিবিসি।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ফুডি অ্যাপে ডোমিনোজের পিৎজা অর্ডার করলেই ৪০% ছাড়!
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে আজকের বৈঠকে যাচ্ছে না বিএনপি
ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় গ্রেপ্তার নিয়ে যা জানালেন দুই উপদেষ্টা
ভোরে মিলল রাস্তার পাশে শিশু সাফওয়ানের লাশ
রেস্তোরাঁ, ওষুধ ও আইএসপিতে ভ্যাট আরোপ থেকে পিছিয়ে আসতে পারে সরকার
লস অ্যাঞ্জেলেসে এবার ‘আগুন টর্নেডোর’ আশঙ্কা
দেশে এইচএমপিভিতে আক্রান্ত নারীর মৃত্যু
মোংলায় ভটভটি উল্টে ২ জন নিহত, আহত ২
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে ‘শিক্ষা নিয়ে গড়ব দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’ প্রকাশ
নাম ভাঙিয়ে তদবির-টেন্ডারবাজি: সতর্ক করলেন সারজিস
গুলশান থেকে ওবায়দুল কাদেরের ‘পালিত ছেলে’ গ্রেফতার
আখাউড়ায় মর্টার সেল উদ্ধার
বায়ুদূষণে আজ সবার শীর্ষে ঢাকা
শৈলকুপায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধ নিহত
বাবরের মুক্তির অপেক্ষায় কারাগারের সামনে নেতাকর্মীদের ভিড়
ব্যাংক খাত নিপুন কারিগরের মতো যেভাবে ধ্বংস করেন এসকে সুর
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আজকের বৈঠক বর্জন করবে লেবার পার্টি
দেশে ফিরতে চান মডেল তিন্নি হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া অভি
দুর্নীতির মাধ্যমে পুতুলের ডব্লিউএইচও'র পদ পাওয়ার অভিযোগ: দুদকের অনুসন্ধান শুরু
বাড়িতে ঢুকে সাইফ আলিকে ৬ বার ছুরিকাঘাত, হাসপাতালে ভর্তি