ইসরাইলের ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ কি বৈধ?
০৫ আগস্ট ২০২৪, ০৮:৩৩ এএম | আপডেট: ০৫ আগস্ট ২০২৪, ০৮:৩৩ এএম
ইসরাইল যাদেরকে দুশমন মনে করে তাদেরকে ‘টার্গেটেড কিলিং’ বা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার ইতিহাস রয়েছে। চলতি সপ্তাহে হামাসের রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়াও সম্ভবত এমন হত্যাকাণ্ডের শিকার। মানবাধিকার সংগঠনগুলো প্রায়ই যুক্তি দেয় যে, সব টার্গেটেড কিলিংই অবৈধ এবং এগুলো ক্রমশ স্বাভাবিক ব্যাপারে পরিণত হচ্ছে। অন্যদিকে, সরকারগুলো এই চর্চাকে এক কার্যকর উপায় হিসেবে বিবেচনা করে।
হামাসের রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়া, যিনি গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মিদের মুক্ত করার ক্ষেত্রে মুখ্য মধ্যস্থতাকারীদের একজন ছিলেন, বুধবার তেহরানে দূর-নিয়ন্ত্রিত বোমার বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন। তার মৃত্যুকে ‘টার্গেটেড কিলিং' বলা যেতে পারে, রেডক্রসের বিবেচনায় যার অর্থ হচ্ছে ‘‘একটি রাষ্ট্র বা সশস্ত্র গোষ্ঠী তাদের হেফাজতে নেই এমন কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যক্তির উপর ইচ্ছাকৃত-ভাবে এবং পূর্বপরিকল্পনার ভিত্তিতে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহার করে।''
যদিও এটা সত্যি যে এখনো কোন কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার দায় স্বীকার করেনি, তা সত্ত্বেও ধারণা করা হচ্ছে খুব সম্ভবত ইসরাইল সরকার এই হামলার পেছনে রয়েছে। ইসরাইল বর্তমানে গাজায় সামরিক অভিযানে সম্পৃক্ত রয়েছে। সেখানে তারা হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। দেশটির এরকম পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে এবং প্রায়ই তারা সেগুলোর দায়ও স্বীকার করে না।
গাজায় নিহতের সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ৪০ হাজার বলে ধারণা করা হচ্ছে। জার্মানি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যরা হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন মনে করে। ২০০৮ সালে আইনের অধ্যাপক নিলস মেলৎসারের লেখা ‘টার্গেটেড কিলিং ইন ইন্টারন্যাশনাল ল' অ্যাকাডেমিক বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে ইসরাইল সম্ভবত বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেটি ২০০০ সালে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের নীতিকে স্বীকৃতি দিয়েছিল।
সেই সময় ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলের দাবি অনুযায়ী সন্ত্রাসীদের উপর ইসরাইলি হেলিকপ্টার, গানশিপ এবং ‘বুবি ট্র্যাপ' ব্যবহার করা হতো। ২০০৭ সাল নাগাদ এরকম ২১০ জন ‘টার্গেটকে' হত্যা করা হয়। সেসব ঘটনায় আরো ১২৯ জন দর্শক প্রাণ হারান বলে জানিয়েছে ইসরাইলি মানবাধিকার সংগঠন বাৎসিলিম। তবে ইসরাইলই একমাত্র রাষ্ট্র নয় যেটি এ ধরনের কাজ করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, সুইজারল্যান্ড, জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যসহ আরো অনেক রাষ্ট্রও ‘টার্গেটেড কিলিং' ঘটিয়েছে। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার হার বাড়ছে।
‘টার্গেটেড কিলিং' নিয়ে প্রায়ই বিতর্ক হয়, কারণ, এ ধরনের হত্যাকাণ্ড, বিশেষ করে যেগুলো অন্য কোনো দেশের ভূখণ্ডে সংঘটিত হয়, সেসব দেশের সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত হিসেবে বিবেচিত হয়। কিন্তু এ ধরনের ঘটনা আইনবিরোধী কিনা তা নিয়ে অস্বচ্ছতা রয়ে গেছে।
আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, একটি ‘টার্গেটেড কিলিং' বৈধ, নাকি অবৈধ তা অনেকগুলো বিষয়ের উপর নির্ভর করে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে কোন আইনি কাঠামোর মধ্যে হত্যাকাণ্ডটির মূল্যায়ন করা হচ্ছে। একটি দেশের নিজস্ব আইন, যুদ্ধ পরিস্থিতির কোনো সুনির্দিষ্ট আইন, এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইন এ সবের মধ্যে রয়েছে।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
সমাজ কল্যান সংস্থার উদ্যোগে মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে সম্মাননা ক্রেস প্রদান
নাটোরে বিএনসিসি মহাস্থান রেজিমেন্টাল ক্যাম্প শুরু
নাটোরে জেলা পর্যায়ে প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্ট শুরু
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন ২০২৩ বাতিল
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে সর্বদলীয় বৈঠক শুরু
দাদা বাড়ি বেড়াতে এসে খুন হলো শিশু সাফওয়ান, আটক ২
সর্বদলীয় বৈঠকে যোগ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
হিরণ ও তার ড্রাইভারের লাশ ৫ মাস পর উত্তোলন
সর্বদলীয় বৈঠকে যোগ দিয়েছে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা
শুধু এইচএমপিভি নয়, সানজিদার মাল্টিঅর্গান ফেইল করেছিল
ফরিদপুরের আলোচিত ওবায়দুর হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্থায়ী শান্তির আশা তুরস্কের: এরদোগান
আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতা হত্যা মামলার ৪ আসামি গ্রেফতার
সকলে মিলেমিশে স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই: ডা. শফিকুর রহমান
মুগ্ধ হত্যা: ট্রাইব্যুনালে স্নিগ্ধের অভিযোগ
জাবেদ পাটোয়ারী ও বনজ কুমারের পাসপোর্ট বাতিল
কেন এসেছেন, কি করার আছে আপনাদের
ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে ভারত কোনোভাবেই স্থির হতে পারছে না: রিজভী
লক্ষ্মীপুরে ট্রাফিক পুলিশের উপর হামলায় ঘটনায় ৯০ জনের নামে মামলা, গ্রেপ্তার ১১
‘আল্লাহ সম্পদ দিয়েছে মানুষের মাঝে বন্টনের জন্য, লুটপাটের জন্য নয়’