যুদ্ধবিরতির জন্য নেতানিয়াহুকে চাপ দিতে ইসরাইলে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক

১৯ আগস্ট ২০২৪, ০১:১৯ পিএম | আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০২৪, ০১:২০ পিএম

ছবির ক্যাপশন,যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গাজায় এখন পর্যন্ত ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে

গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে জিম্মি-মুক্তি বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষর করানোর চেষ্টা চালাতে ইসরাইলে পৌঁছেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। গত বছরের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এ নিয়ে নবমবারের মতো ওই অঞ্চল সফরে গেলেন ব্লিঙ্কেন।

এই সফরের কিছুদিন আগেই ইসরাইল ও হামাসের মধ্যকার বৈরিতা ও ব্যবধান দীর্ঘমেয়াদী স্থায়ীভাবে দূর করার লক্ষ্যে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিছুটা পরিবর্তিত নমনীয় এক প্রস্তাব উপস্থাপন করেছিলেন। এর আগে, গত সপ্তাহে কাতারের রাজধানী দোহায় গাজাযুদ্ধ নিয়ে দু-পক্ষের মধ্যে আবারও আলোচনা শুরু হয়। মূলতঃ তারপর থেকেই যুদ্ধবিরতির বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি চুক্তির ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে আসছে।

যদিও যুদ্ধবিরতির বিষয়ে দৃশ্যমান তেমন কোনো অগ্রগতি নেই বলে জানিয়েছে হামাস। হামাস জোর দিয়ে বলেছে যে, গাজা উপত্যকা থেকে ইসরাইলি সৈন্যদের পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হবে কি-না, সেটি নিয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। সব মিলিয়ে যুদ্ধবিরতির যে চুক্তির কথা বলা হচ্ছে, সেটি একটি 'ভ্রম' বলে মন্তব্য করেছে হামাস। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, সোমবার ব্লিঙ্কেন ইসরাইলি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গাজায় এখন পর্যন্ত ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেছবির উৎস,EPA

বৈঠকে গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ইসরাইলের উপর আবারও চাপ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। সেদিক থেকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র আশা করছে যে, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই হয়ত যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কার্যকর একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হবে। যদিও ইসরাইল ও হামাস, কোনো পক্ষই তেমন কিছুরই আভাস দেয়নি। উল্টো, যুদ্ধবিরতি না হওয়ার কারণ হিসেবে এখনও তারা একে অপরকে দোষারোপ করে চলেছে। রোববার বিষয়টি হামাসের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। সেখানে তারা অভিযোগ করেছে যে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু “যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করার” লক্ষ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির পথে বাধা সৃষ্টি করছেন।

এক্ষেত্রে “নতুন নতুন শর্ত ও দাবি” তুলে ধরার মাধ্যমে নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতিতে “বাধা সৃষ্টি” করছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। কাজেই যুদ্ধবিরতির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ মধ্যস্থতাকারী যেসব পক্ষ প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন, সেটি নস্যাৎ করার জন্য জন্য ইসরাইলই “সম্পূর্ণরূপে দায়ী” বলে মন্তব্য করেছে হামাস। এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চলতি সপ্তাহের শুরুতে বলেছিলেন যে, গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। “আমরা আগের চেয়ে অনেক কাছাকাছি,” বলেছিলেন বাইডেন।

যদিও গত কয়েক মাস ধরেই যুদ্ধবিরতির বিষয়ে নানান আলোচনা শোনা গেছে। বেশ কয়েকবার এ নিয়ে আশার আলো দেখা গেছে বলা হলেও পরবর্তীতে তেমন কিছুই ঘটতে দেখা যায়নি। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু রোববার নিজ দেশের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে তিনি জানিয়েছেন যে, হামাসের হাতে জিম্মি নাগরিকদের মুক্ত করার জন্য আলোচনা চলছে। তবে ইসরাইলের নিরাপত্তার বিষয়ে তারা কোনো ছাড় দিবেন না বলেও জানিয়েছেন তিনি।

‘এমন কিছু বিষয় আছে, যেসব ব্যাপারে নমনীয় হওয়ার কোনো সুযোগ নেই এবং আমরা নমনীয় হতে পারি না,’ বলেন নেতানিয়াহু। তিনি আরও বলেছেন যে, ‘আমরা ওইসব বিষয়গুলোর উপর জোর দিয়ে যাবো। আমরা খুব ভালভাবেই জানি যে, কীভাবে দু’টির মধ্যে পার্থক্য করতে হয়।’ সূত্র: বিবিসি।

বিভাগ : আন্তর্জাতিক