গাজায় ইসরাইলি হামলা এবং গণহত্যার ‘উদ্দেশ্য স্পষ্ট’,দক্ষিণ আফ্রিকা
২৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:১৫ পিএম | আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:১৫ পিএম
অবরুদ্ধ গাজায় চলমান হামলা এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এই বিষয়টি আন্তর্জাতিক আদালতে (ICJ) তুলতে দেশটি পদক্ষেপ নিয়েছে এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার আইনজীবীরা বিভিন্ন তথ্য ও প্রমাণ সংগ্রহ করে আদালতে উপস্থাপন করেছেন, যা গাজায় ইসরাইলের বর্বর সামরিক হামলাকে "গণহত্যার ইচ্ছা" হিসাবে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে। এই উদ্যোগটির ফলে আন্তর্জাতিক মহলে একটি উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক ও আইনি প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য সোমবার (২৮ অক্টোবর) তারিখে দক্ষিণ আফ্রিকা আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনতে প্রমাণ জমা দিয়েছে। তারা দাবি করছে যে,ইসরাইলি বাহিনী গাজায় ফিলিস্তিনিদের উপর গণহত্যা চালানোর পরিকল্পনা করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার আইনজীবী এবং কূটনীতিকদের মতে, ইসরাইলি কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক মন্তব্য এবং গাজায় সংঘটিত হামলার ঘটনার ধারাবাহিকতায় ইসরাইলের গণহত্যার প্রমাণ দেয়। এর আগে, ইসরাইলি মন্ত্রীদের বিভিন্ন বক্তব্যে গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ এবং সেখানে ইসরাইলি পুনর্বাসনের কথা বলা হয়েছে, যা দক্ষিণ আফ্রিকা বিচার বিভাগীয় পর্যায়ে প্রশ্ন তুলেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার আইনজীবীরা গাজায় ইসরাইলের সামরিক পদক্ষেপকে গণহত্যা হিসেবে প্রমাণ হিসেবে সংগ্রহীত তথ্যাদির মধ্যে শত শত পৃষ্ঠা বিশদ বিবরণ, গাজার ছবি, ভিডিও ফুটেজ এবং ইসরাইলি কর্মকর্তাদের বক্তব্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার কূটনীতিকরা উল্লেখ করেছেন, গাজায় ইসরাইলের সামরিক কার্যক্রম এবং উচ্ছেদের কথা বলা স্পষ্টতই ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের গণহত্যার পরিকল্পনার অংশ বলে মনে করা হয়। গত বছর অক্টোবর থেকে চলমান এই বর্বর হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৩,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যা দক্ষিণ আফ্রিকার মতে "গণহত্যার ধারা"র পরিচয় বহন করে।
প্রমাণগুলোতে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োয়াভ গালান্টের মতো উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বক্তব্যও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, গালান্ট নভেম্বর ২০২৩-এ বলেছিলেন যে তিনি গাজার ফিলিস্তিনিদের সাদা পতাকা নিয়ে চলে যেতে দেখেছেন, যা তার উচ্ছেদের ইচ্ছাকে নির্দেশ করে। দক্ষিণ আফ্রিকার আইনজীবিরা এই বক্তব্যগুলোকে গাজায় সংঘটিত ধ্বংসযজ্ঞের পরিকল্পিত প্রক্রিয়ার প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করেছে।
এই মামলা ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ কারণ, এটি বর্তমানকালে সংঘটিত গণহত্যার অভিযোগের বিষয়ে একটি বিচারিক নজির স্থাপন করতে পারে। সাধারণত এই ধরনের মামলাগুলি অতীতে সংঘটিত গণহত্যার পর দায়ের করা হয়েছিল, যেমন স্রেব্রেনিকা ও রুয়ান্ডা গণহত্যার ক্ষেত্রে দেখা গেছে। এদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা তার দেশের পদক্ষেপকে আত্মবিশ্বাস হিসেবে প্রকাশ করেছেন এবং আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার পাবার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
ইসরাইলকে দোষী সাব্যস্ত করা হলে এর বাস্তবিক প্রভাব ইসরাইলের সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করবে না, তবে এটি অন্যান্য দেশগুলিকে তাদের সাথে সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করতে পারে। এই রায় একটি অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে এবং অন্য দেশগুলোকে সামরিক সহায়তা পুনর্বিবেচনা করতে উত্সাহিত করতে পারে। প্রেসিডেন্ট রামাফোসা এ প্রসঙ্গে বলেন, "আমরা আশা করি বিশ্ব নীরবে দাঁড়িয়ে থাকবে না এবং নিরীহ মানুষদের হত্যার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবে।"
দক্ষিণ আফ্রিকার এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা এবং শান্তির আশা করা যায়।গণহত্যা একটি মারাত্মক অপরাধ এবং এটি বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এগিয়ে আসা উচিৎ বলে তারা মনে করে।এই মামলার ফলাফল শুধু গাজা ও ইসরাইলের জন্য নয়, বরং সারা বিশ্বে সামরিক হামলার এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে আইনি বিচার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে বলে দক্ষিণ আফ্রিকা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
খুনিদের অবিলম্বে গ্রেফতার বিচারের দাবীতে মানিকগঞ্জে জামায়াতের সাবেশ অনুষ্ঠিত
চট্টগ্রামে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ
তৌহিদী জনতাসহ সকল মানুষকে সাথে নিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে - ছাগলনাইয়ায় পল্টন ট্রাজেডির জামায়াতের আলোচনা সভা
শহীদের রক্তের বিনিময়ে আর্দশ ইসলামী সমাজ গঠন করা হবে
ইসলাম অনুযায়ী চলতে হবেঃ তাহলে শান্তি পাওয়া যাবে - মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম (শায়েক চরমোনাই)
লগি-বৈঠার হত্যাযজ্ঞ ছিল ইতিহাসের জঘন্যতম আওয়ামী বর্বরতা : ডা. ইরান
দৌলতদিয়ার শীর্ষ মাদক স¤্রাট জাহাঙ্গীর হেরোইন সহ গ্রেপ্তার পালিয়েছে ২ মাদক ব্যবসায়ী
ভোলার তজুমুদ্দিনে পানিতে ডুবে ৩ শিশুর মৃত্যু
শেখ হাসিনাকে রাজনীতির জন্য নয়,ফাঁসির বিচারের জন্য দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে
বেরোবি শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা ও শিক্ষার্থী নিপীড়নের ঘটনায় ৮১ জন অভিযুক্ত
গণভবনকে দ্রুত জাদুঘরে রূপান্তরের নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা
১৬ বছরে জেল জুলুম নির্যাতনের পরও জামায়াতে ইসলামী পালায় নাই অথচ আওয়ামী লীগ পালায়ে গেছে
কে হচ্ছেন এবারের বর্ষসেরা
কালিয়াকৈরে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় নববধূ নিহত
নিত্যপণ্যের বাজারে ঊর্ধ্বগতি, স্বস্তিতে নেই জনগণ : বাংলাদেশ ন্যাপ
কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত হলেও, গ্রুপিং বিলুপ্ত হয়নি নেতারা শ্রেষ্ঠত্ব জাহিরে ব্যস্ত
ছাত্র-জনতার হত্যায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা এখনো বহাল
বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিচালক নেই একমাস
মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় ৩১ জন আটক
ইসরায়েলকে দুই দিনের যুদ্ধবিরতির আহ্বান মিশরের