ভারতে বিতর্কিত লেখক সালমান রুশদির বই নিষিদ্ধের ভবিষ্যৎ নিয়ে আইনি জটিলতা
০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৬ পিএম | আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৬ পিএম
সম্প্রতি দিল্লি হাইকোর্টে একটি ঘটনায় নজির সৃষ্টি হয়েছে যা নিয়ে আইনি মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে—ভারতে সালমান রুশদির বিতর্কিত বই দ্য স্যাটানিক ভার্সেস আমদানি করা কি এখনও নিষিদ্ধ? প্রায় ৩৫ বছর আগে এই বইটি ভারতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে এই নিষেধাজ্ঞার বিজ্ঞপ্তিটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, যা আইনি বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে।
১৯৮৮ সালে রুশদির দ্য স্যাটানিক ভার্সেস প্রকাশিত হওয়ার পর মুসলিম সম্প্রদায় বইটিকে ধর্মবিরোধী বলে এবং সমালোচনার ঝড় উঠে। বইটির প্রকাশের প্রতিবাদে ভারতেও বিক্ষোভ হয়, এবং পরবর্তীতে ভারত সরকার বইটির আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। পরের বছর, ১৯৮৯ সালে, ইরানের আয়াতুল্লাহ খোমেনি এই বইয়ের জন্য রুশদির বিরুদ্ধে গ্রেফতার ও মৃত্যুদন্ডের ফতোয়া জারি করেন, যা তাকে দীর্ঘদিন গোপনে থাকতে বাধ্য করে। এই ঘটনার পরে রুশদির জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে ওঠে, এবং ভারতে তার বইটি নিষিদ্ধই হয়ে যায়।
নিষেধাজ্ঞাটি নতুন আলোচনায় আসে যখন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা সন্দীপন খান বইটি কিনতে গিয়ে জানতে পারেন যে এটি ভারতে প্রকাশিত হয়নি এবং আমদানিও সম্ভব নয়। ২০১৭ সালে, তিনি তথ্য অধিকার (আরটিআই) আইনের আওতায় এই নিষেধাজ্ঞার নথিটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন, কিন্তু বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ঘুরেও তা খুঁজে পাননি। ২০১৯ সালে, সন্দীপন খান দিল্লি হাইকোর্টে এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন, যুক্তি দেখান যে এই নিষেধাজ্ঞা তার বই পড়ার অধিকারকে প্রভাবিত করছে।
গত পাঁচ বছরের আইনি প্রক্রিয়ায় সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ১৯৬৮ সাল থেকে সংরক্ষিত কিছু রেকর্ড উপস্থাপন করলেও ১৯৮৮ সালের নিষেধাজ্ঞার মূল নথি খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয়। অবশেষে, ৫ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে দিল্লি হাইকোর্ট ঘোষণা করে যে, এই বিজ্ঞপ্তির অনুপস্থিতিতে ধরে নিতে হবে যে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর নেই। আদালত কোনও প্রতিকারের নির্দেশ না দিলেও সন্দীপন খানকে এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেয়।
এ নিয়ে আইনজীবী উদ্যম মুখার্জি বলেছেন যে, বিজ্ঞপ্তি না থাকলে বইটি আমদানির ওপর আর কোনও আইনি বাধা থাকা উচিত নয়। তবে সিনিয়র আইনজীবী রাজু রামচন্দ্রন বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করে বলেছেন যে, আদালত এ বিষয়ে সরাসরি বই আমদানির অধিকার দেয়নি। অন্যদিকে, আইনজীবী সঞ্জয় হেগড়ে বলেন,’দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ ভারতে প্রকাশিত হতে পারত যদি কেউ সাহস করে তা প্রকাশ করত, কেননা আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল, কিন্তু প্রকাশনার ওপর নয়।
এই মামলা ভারতে বাকস্বাধীনতা ও সাহিত্যপ্রকাশের অধিকারের ওপর গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার দ্বার খুলে দিয়েছে বলে অনেকেই ধারনা করছে। তথ্যসূত্র : বিবিসি
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
সৈয়দপুরে ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে দুই দিনব্যাপী তারুণ্যের উৎসব অনুষ্ঠিত
সৈয়দপুরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা ও মামলা চলমান সত্বেও স্থাপনা নির্মাণ
ফুলপুরে তারুণ্যের উৎসব উদযাপনে ফুটবল প্রতিযোগিতায় ভাইটকান্দি ও ফুলপুর বিজয়ী
লালমোহন পৌরসভায় বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন ইউএনও শাহ আজিজ
নাঙ্গলকোটে দুর্ঘটনায় পৌর স্বাস্থ্য সহকারীর মৃত্যু
ঢাকাকে টানা পঞ্চম হারের স্বাদ দিল চট্টগ্রাম
লক্ষ্মীপুরে বিদেশী পিস্তলসহ নারী আটক
সিংগাইরে ভূয়া পুলিশ গ্রেফতার ১
ডিবির অভিযানে মলম পার্টির ৫ সদস্য আটক
সাভারের বাইতুল মকবুল জামে মসজিদের বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত
‘শেখ হাসিনা এই দেশে আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না’
সীমান্তে অপরাধ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে হবে: কর্ণেল সাইফুল ইসলাম
থানা থেকে পালালেন গ্রেফতার হওয়া সাবেক ওসি
সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনায় ৫শ’ হজ কোটা বহাল রাখার দাবি
রাজশাহীতে মদপানে ৪ জনের মৃত্যু, চিকিৎসাধীন চার
নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় ২ জন আটক
লেবাননের নতুন প্রেসিডেন্ট কে এই জোসেফ আউন?
ময়মনসিংহে বাইক রাইডার হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই
ঢাকায় যানজট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা
ঘুষের টাকা না পেয়ে মারপিটে আহত ৩ জনের অভিযোগে এসআই নুর ইসলামের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু