ভারতের শিশুদের বামনতার সংকট,জাতিভেদ এবং পুষ্টির অভাব
১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫০ এএম | আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫০ এএম
ভারতে শিশুদের অপুষ্টি ও শারীরিক বৃদ্ধির( স্থুলতা)অভাব একটি গুরুতর জাতীয় সমস্যা।বর্তমানে, ১৩৭ মিলিয়ন শিশুর মধ্যে ৩৫% শিশুর উচ্চতা তাদের বয়সের তুলনায় যথেষ্ট কম,যা বিশ্বে অন্যতম উচ্চতম হারের মধ্যে। এই সমস্যার পেছনে রয়েছে অনেক কারণ, যার মধ্যে রয়েছে জাতিভেদ প্রথার দীর্ঘকালীন প্রভাব।বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ভারতীয় শিশুদের মধ্যে স্টান্টিংয়ের (বামনতা) উচ্চ হার শুধুমাত্র পুষ্টির অভাবের কারণে নয়, বরং সামাজিক পরিচয়, বিশেষত জাতিভেদ, এই সমস্যাকে আরও তীব্র করেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ভারতের শিশুদের স্টান্টিংয়ের (বামনতা)হার ৩৫.৭%, যা সাব-সাহারান আফ্রিকার ৪৯টি দেশের গড় ৩৩.৬% থেকে কিছুটা বেশি।এই সমস্যা শুধু পুষ্টি ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অভাবে নয় বরং ভারতের গভীর জাতিভেদ ব্যবস্থা,বিশেষত প্রান্তিক জনগণের জন্য এটি একটি বৃহৎ সংকট তৈরি করেছে।বিশেষজ্ঞ আশ্বিনী দেশপান্ডে (আশোকা বিশ্ববিদ্যালয়) এবং রাজেশ রামাচন্দ্রণ (মনাশ বিশ্ববিদ্যালয়, মালয়েশিয়া) একটি গবেষণায় বলেছেন, শুধুমাত্র উচ্চতা গ্যাপের দিকে মনোযোগ দিলে এই সমস্যা পুরোপুরি বোঝা যাবে না। জাতিভেদ ব্যবস্থা ভারতীয় শিশুদের পুষ্টি সংকটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
গবেষণায় দেখা গেছে,ভারতের আদিবাসী (অদ্বিতীয় অঞ্চলবাসী) এবং দলিত (অন্ত্যজ) সম্প্রদায়ের শিশুরা সবচেয়ে বেশি পুষ্টিহীন।এই দুটি গোষ্ঠী একসাথে ভারতের পাঁচ বছরের নিচে থাকা শিশুদের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি।এ ছাড়া, উচ্চ স্তরের জাতিভুক্ত পরিবারগুলোর শিশুদের পুষ্টি ও স্বাস্থ্য সুবিধা সাধারণত ভালো, এবং তাদের মধ্যে স্টান্টিংয়ের হার ২৭%—যা সাব-সাহারান আফ্রিকার গড়ের থেকে কম।এই পার্থক্য সামাজিক, অর্থনৈতিক, এবং শিক্ষাগত অবস্থার ওপর ভিত্তি করে পর্যালোচনা করা হয়েছে, যেখানে নিম্নতর জাতিভুক্ত জনগণের শিশুরা প্রায় ২০% বেশি বামনতার শিকার হয়।
এছাড়া, বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের মতো, সাব-সাহারান আফ্রিকাতেও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলির মধ্যে স্টান্টিংয়ের হার অনেক বেশি, তবে আফ্রিকা ও ভারতের মধ্যে মূল পার্থক্য হল সামাজিক বৈষম্য ও জাতিভেদ প্রথার প্রভাব রয়েছে।তবে, ২০২২ সালের একটি পৃথক গবেষণায় জানানো হয় যে,স্বাস্থ্য ও পুষ্টি ব্যবস্থার উন্নতি,গৃহস্থালির শর্তাবলী এবং মাতৃত্বের স্বাস্থ্যজনিত বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে ভারতের কিছু রাজ্যে স্টান্টিংয়ের (বামনতা)হার কমেছে।
এটি স্পষ্ট যে, ভারতের শিশুদের মধ্যে স্টান্টিংয়ের সমস্যা শুধুমাত্র খাদ্য সংকট বা পুষ্টির অভাবের কারণে নয়, বরং এটি একটি গভীর সামাজিক এবং অর্থনৈতিক সমস্যা,যা জাতিভেদ প্রথার সাথে সম্পর্কিত।ভারতীয় শিশুদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি পরিস্থিতি উন্নত করতে হলে জাতিভেদ সমস্যার বিরুদ্ধে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে,যাতে প্রতিটি শিশু সমান সুযোগ পায় একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার জন্য। তথ্যসূত্র : বিবিসি
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রাশিয়া
রাজনীতি ও রাষ্ট্রাচার ব্যবসায়িক পণ্যে পরিণত হয়েছে : সেলিম উদ্দিন
ভারতে ঢুকে পড়েছে এইচএমপিভি
আন্তর্জাতিক আইকিউ টেস্টে দ্বিতীয় ইরান
গণঅধিকার পরিষদের ফারুকের ওপর হামলা : দুই আসামির জামিন
লেনদেন ও সূচকের উত্থান পুঁজিবাজারে চাঙাভাব
খালেদা জিয়ার নাইকো মামলায় ৩২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ
পাবনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী কাঙ্গাল বাবু গ্রেপ্তার
১৫ হাজার পিচ ইয়াবার মামলায় প্রবাসীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে : মাহমুদুর রহমান
বৃদ্ধাশ্রমের বাবা মায়ের পাশে জেলা প্রশাসন সব সময় আছে এবং থাকবে
তামিমের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের দিন প্রশ্নবিদ্ধ এনামুল
বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে চীনের সহযোগিতা চান পরিবেশ উপদেষ্টা
গাজীপুরে বিএনপির বিক্ষোভ
সোনারগাঁওয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি দখলের অভিযোগ
র্যাগিংমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার প্রতিশ্রুতি শেকৃবি ভিসির
অংশীজনদের সঙ্গে আজ বসছেন অর্থ উপদেষ্টা
কোম্পানীগঞ্জের ইউএনওর নাম্বার ক্লোন করে শিক্ষকের কাছে টাকা দাবি
সমস্যাগ্রস্ত ৬ ব্যাংকের নিরীক্ষায় ২ বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক
অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদারের সিদ্ধান্ত