ঢাকা   সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

রিহাব ফাওর চারবার পালিয়ে বেঁচেছিলেন,কিন্তু শেষবার হারালেন সব

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:২৭ পিএম | আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:২৭ পিএম

লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে শুরু করে বৈরুত পর্যন্ত, এক বছরের মধ্যে চারবার ইসরায়েলি বোমার হাত থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন রিহাব ফাওর নামে ৩৩ বছর বয়সী এক নারী।চারবার বোমার আঘাত থেকে পালানোর পরেও পঞ্চমবারে তার স্বামীসহ সন্তানদের হারান।

 

২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে হামাসের ইসরায়েল আক্রমণের পর, লেবাননের রাজনৈতিক ও সামরিক স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ইসরায়েলে রকেট নিক্ষেপ করে। এর প্রতিশোধ হিসেবে ইসরায়েল দক্ষিণ লেবাননে বোমাবর্ষণ শুরু করে। এর মধ্যে রিহাব ফাওরের পরিবার তাদের বাড়ি ছেড়ে বৈরুতে আশ্রয় নিয়েছিল।কিন্তু ইসরায়েলি হামলা ধীরে ধীরে বৈরুতের বিভিন্ন অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ে, বিশেষত যেখানে হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতারা অবস্থান করছিলেন বলে ধারণা করা হয়।

 

রিহাব ফাওরের স্বামী সাঈদ এবং তাদের দুই মেয়ে তিয়া (৮) ও নায়া (৬) দক্ষিণ লেবানন থেকে পালিয়ে প্রথমে রিহাবের বাবা-মায়ের বাড়ি, তারপর বৈরুতের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। বৈরুতের ধাহিয়েহ, জানাহ এবং বারবুর এলাকায় পালানোর পর অবশেষে তারা বাসতা নামক এলাকায় একটি ভাড়া করা অ্যাপার্টমেন্টে উঠেছিলেন। কিন্তু সেখানেও চলতি বছর ১০ অক্টোবর সন্ধ্যায় ইসরায়েলের একটি মার্কিন-জেডিএএম বোমা তিনতলা ভবনটিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেয়।

 

এই হামলায় সাঈদ, তিয়া এবং নায়া নিহত হন। ভবনটিতে কোনো সতর্কবার্তা ছাড়াই হামলা চালানো হয়, এবং এতে মোট ২২ জন নিহত হন। ইসরায়েলের লক্ষ্য ছিল হিজবুল্লাহর এক শীর্ষ নেতা, কিন্তু তিনি সেখানে ছিলেন না। রিহাব নিজে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন এবং পরবর্তীতে জানতে পারেন যে তার পরিবার আর বেঁচে নেই।

 

রিহাবের স্বামী ও সন্তানের ধাহিয়েহ সমাহিত করা হয়েছিল। তবে যুদ্ধের সময় ওই এলাকায় আরেকটি বিমান হামলা হওয়ায় কবরের অবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরবর্তীতে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা হলে লেবাননে কিছুটা স্থিতিশীলতা ফিরে আসে। কিন্তু রিহাবের জন্য, তার পরিবার হারানোর যন্ত্রণা এবং শারীরিক আঘাত তাকে ফিরে আসার আনন্দ থেকে বঞ্চিত করেছে।

 

এই হৃদয়বিদারক ঘটনা লেবাননে চলমান সংঘাতের মানুষের জীবনে কী ভয়ানক প্রভাব ফেলছে, তার একটি নির্মম উদাহরণ। যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও রিহাবের মতো অনেকেই এই সংঘাতের ক্ষত বহন করে চলেছেন। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা এখন সময়ের দাবি। তথ্যসূত্র : বিবিসি

 

 


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

স্বর্ণজয়ী শুটার সাদিয়া সুলতানা মারা গেছেন

স্বর্ণজয়ী শুটার সাদিয়া সুলতানা মারা গেছেন

সরকারি চাকরিতে প্রায় ৫ লাখ পদ শূন্য

সরকারি চাকরিতে প্রায় ৫ লাখ পদ শূন্য

ইউকেতে ইতালীয় টমেটো পিউরিতে চীনা বাধ্য শ্রমের ছাপ

ইউকেতে ইতালীয় টমেটো পিউরিতে চীনা বাধ্য শ্রমের ছাপ

ভিসি ড. শুচিতা শরমিনের পরে বিতর্কিত আবু হেনার ট্রেজার পদে নিয়োগ নিয়ে বরিশাল বিশ^বিদ্যালয় উত্তপ্ত

ভিসি ড. শুচিতা শরমিনের পরে বিতর্কিত আবু হেনার ট্রেজার পদে নিয়োগ নিয়ে বরিশাল বিশ^বিদ্যালয় উত্তপ্ত

কেন্দ্রের কাছে বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব মমতার

কেন্দ্রের কাছে বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব মমতার

জর্জিয়াতে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের পক্ষে বিক্ষোভ অব্যাহত

জর্জিয়াতে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের পক্ষে বিক্ষোভ অব্যাহত

নারায়ণগঞ্জের হাজিগঞ্জে বিদ্যুৎ অফিসে ডাকাতির অভিযোগ, গ্রেপ্তারে সহায়তা চাইলো পুলিশ

নারায়ণগঞ্জের হাজিগঞ্জে বিদ্যুৎ অফিসে ডাকাতির অভিযোগ, গ্রেপ্তারে সহায়তা চাইলো পুলিশ

সাত কলেজের স্থগিত পরীক্ষার নতুন সময়সূচি প্রকাশ

সাত কলেজের স্থগিত পরীক্ষার নতুন সময়সূচি প্রকাশ

আগরতলায় বাংলাদেশি দূতাবাসে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলা!

আগরতলায় বাংলাদেশি দূতাবাসে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলা!

পুলিশের আরও ৯ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর

পুলিশের আরও ৯ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর

বিসিএস পরীক্ষায় কমছে আবেদন ফি ও ভাইভা নম্বর

বিসিএস পরীক্ষায় কমছে আবেদন ফি ও ভাইভা নম্বর

তারেক রহমান এই জাতির আগামীর ভবিষ্যৎ: শামসুজ্জামান দুদু

তারেক রহমান এই জাতির আগামীর ভবিষ্যৎ: শামসুজ্জামান দুদু

থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় নতুন বন্যার শঙ্কা, সতর্কতা জারি

থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় নতুন বন্যার শঙ্কা, সতর্কতা জারি

ডেঙ্গুতে কর্মক্ষম মানুষের মৃত্যু বেশি

ডেঙ্গুতে কর্মক্ষম মানুষের মৃত্যু বেশি

সাতক্ষীরায় সাদপন্থীদের প্রধান উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর স্বারকলিপি প্রদান

সাতক্ষীরায় সাদপন্থীদের প্রধান উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর স্বারকলিপি প্রদান

ঐতিহাসিক পিলখানা হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তে স্বাধীন কমিশন গঠন

ঐতিহাসিক পিলখানা হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তে স্বাধীন কমিশন গঠন

সামুদ্রিক কচ্ছপের মাংস খেয়ে ৩ জনের মৃত্যু, হাস্পাতালে ভর্তি ৩২

সামুদ্রিক কচ্ছপের মাংস খেয়ে ৩ জনের মৃত্যু, হাস্পাতালে ভর্তি ৩২

পার্বত্য চুক্তি পুর্নমূল্যায়নের দাবি পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের

পার্বত্য চুক্তি পুর্নমূল্যায়নের দাবি পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের

গিনিতে ফুটবল ম্যাচে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, নিহত প্রায় শতাধিক

গিনিতে ফুটবল ম্যাচে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, নিহত প্রায় শতাধিক

আগামী বছর মার্চের পর বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হবে

আগামী বছর মার্চের পর বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হবে