তীব্র শীতে দুর্বিষহ জীবনযাপন,বেঁচে থাকার লড়াইয়ে অসহায় গাজাবাসী

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০৯ পিএম | আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:১০ পিএম

অব্যাহত ইসরায়েলি হামলায় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার পরিস্থিতি এখন অত্যন্ত সংকটপূর্ণ।যুদ্ধে বিধ্বস্ত এই অঞ্চলটির বাসিন্দারা ইতোমধ্যেই গৃহহীন হয়ে পড়েছে। এর ওপর শীতকাল তাদের জীবনে নতুন সংকটের সৃষ্টি করেছে। শরণার্থীরা এখন সমুদ্রপাড়ে, অস্থায়ী তাবুতে, অথবা খোলা আকাশের নিচে বাস করছে।

 

গতবছর অক্টোবর শুরু হওয়া ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত বর্বর হামলার কারণে গাজার অধিকাংশ মানুষের বাসস্থান ধ্বংস হয়ে গেছে, এবং শরণার্থী শিবিরে জায়গার অভাবে লাখো মানুষ এখন সমুদ্রের পাড়ে বসবাস করছে। শীতের প্রকোপ, বৃষ্টিপাত, এবং খাদ্য ও ওষুধের সংকট তাদের জীবনকে আরও দুর্বিষহ করে তুলেছে।

 

মুহাম্মদ আল-হালাবি, একজন গাজাবাসী, সমুদ্রপাড়ে একটি শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছেন। তিনি বিবিসি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, "তুফানের সময় তাবুর সবকিছু ভেসে গেছে।এমনকি, আমরা একটি দুই মাসের শিশুকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করেছি।"

 

জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজার ২.৩ মিলিয়ন জনসংখ্যার প্রায় সবাই বাস্তুচ্যুত, যার মধ্যে ৯০% শরণার্থী অস্থায়ী তাবুতে বসবাস করছে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। খান ইউনিসের শায়মা ইসা বলেন, "আমার সন্তানদের শরীর জমে যাচ্ছে। আমরা বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছি। আমাদের কোনো শুষ্ক আশ্রয় নেই।"

 

খাদ্যের সংকটও চরম আকার ধারণ করেছে। রুটি সংগ্রহের জন্য শত শত মানুষ প্রতিদিন বেকারির সামনে ভিড় জমাচ্ছে।দেইর আল-বালাহর হানান আল-শামালি বলেন, "আমার ডায়াবেটিস আছে, আমি ভিড় ঠেলে এগোতে পারি না। এত কষ্ট করেও প্রায়ই রুটি পাই না।"

 

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাহায্য সঠিকভাবে বিতরণ করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে, গাজায় আসা সাহায্য সামগ্রী প্রায়ই লুট হয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘের খাদ্য কর্মসূচির প্রধান এন্তোয়ান রেনার্ড বলেন, "গাজায় যে অবস্থা চলছে, তা অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় ভয়াবহ। মানুষ খাবার পাচ্ছে না।”

 

গাজার মানুষের জন্য শীতকাল যেন নতুন এক যুদ্ধের নাম।যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত এই অঞ্চলের শরণার্থীরা এখন বাঁচার জন্য প্রতিদিন সংগ্রাম করছে। তাদের দুর্দশা যেন মানবতার প্রতি এক কঠিন প্রশ্ন রেখে যাচ্ছে। তথ্যসূত্র : বিবিসি

 


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

রিয়ালকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে চ্যাম্পিয়ন বার্সা

রিয়ালকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে চ্যাম্পিয়ন বার্সা

গোলরক্ষক বীরত্বে ১০ জনের ইউনাইটেড হারাল আর্সেনালকে

গোলরক্ষক বীরত্বে ১০ জনের ইউনাইটেড হারাল আর্সেনালকে

৯ দফা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ কতদূর?

৯ দফা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ কতদূর?

মর্গের দুই লাশের দাবিদার দুই পরিবার,

মর্গের দুই লাশের দাবিদার দুই পরিবার,

আইনজীবীকে হত্যার হত্যাচেষ্টা: শেখ হাসিনা-জয়সহ ৯৩ জনের মামলা এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ

আইনজীবীকে হত্যার হত্যাচেষ্টা: শেখ হাসিনা-জয়সহ ৯৩ জনের মামলা এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ

তথ্য থাকলেও সন্দেহজনক লেনদেনে দেরিতে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিএফআইইউ!

তথ্য থাকলেও সন্দেহজনক লেনদেনে দেরিতে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিএফআইইউ!

সাবেক এমপি হেনরীর ৫৬ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ,

সাবেক এমপি হেনরীর ৫৬ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ,

গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগে উৎকণ্ঠায় নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীরা

গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগে উৎকণ্ঠায় নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীরা

দেশে এইচএমপি ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত

দেশে এইচএমপি ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত

শাহজালাল বিমানবন্দরে বিমান বাহিনীর সদস্যদের অপসারণে আইনি নোটিশ

শাহজালাল বিমানবন্দরে বিমান বাহিনীর সদস্যদের অপসারণে আইনি নোটিশ

চকরিয়ায় পুলিশ-সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলি: বসতবাতিতে আগুন, ওয়ার্ড মেম্বারসহ আহত ২

চকরিয়ায় পুলিশ-সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলি: বসতবাতিতে আগুন, ওয়ার্ড মেম্বারসহ আহত ২

স্বাধীন সামরিক বাহিনী সংস্কার কমিশন গঠনের প্রস্তাব

স্বাধীন সামরিক বাহিনী সংস্কার কমিশন গঠনের প্রস্তাব

শেখ হাসিনার চোখ ছিল শুধু ঢাকা থেকে টুঙ্গীপাড়া পর্যন্ত : সারজিস

শেখ হাসিনার চোখ ছিল শুধু ঢাকা থেকে টুঙ্গীপাড়া পর্যন্ত : সারজিস

শেখ হাসিনা ভারতের সাথে বৈষম্যমৃলক চূক্তি করেছিলেন-মৌলভীবাজারে সারজিস আলম

শেখ হাসিনা ভারতের সাথে বৈষম্যমৃলক চূক্তি করেছিলেন-মৌলভীবাজারে সারজিস আলম

ব্র্যাক ব্যাংকের টপ টেন রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড জয় ২০২৪ সালে ১.৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স সংগ্রহ

ব্র্যাক ব্যাংকের টপ টেন রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড জয় ২০২৪ সালে ১.৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স সংগ্রহ

ওসি মুহিবুল্লাহকে বাঁচাতে স্বজনদের মানববন্ধন

ওসি মুহিবুল্লাহকে বাঁচাতে স্বজনদের মানববন্ধন

পাটগ্রাম সীমান্তে বাংলাদেশিকে লক্ষ্য করে বিএসএফের গুলি, আহত ১

পাটগ্রাম সীমান্তে বাংলাদেশিকে লক্ষ্য করে বিএসএফের গুলি, আহত ১

ওয়ান টাইম প্লাস্টিক বন্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ৬ হাজার প্রতিষ্ঠান: বিপিজিএমইএ

ওয়ান টাইম প্লাস্টিক বন্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ৬ হাজার প্রতিষ্ঠান: বিপিজিএমইএ

চলমান সংস্কার গতিশীল করতে হবে, যাতে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে : মান্না

চলমান সংস্কার গতিশীল করতে হবে, যাতে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে : মান্না

ফরিদপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় তিন দিনে মোট ১১ জন নিহত, আহত ৩৫

ফরিদপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় তিন দিনে মোট ১১ জন নিহত, আহত ৩৫