ভারতে পণ আইন নিয়ে বিতর্ক, এক ব্যক্তির আত্মহত্যা ঘিরে আলোড়ন
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৩ এএম | আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৯ এএম
সম্প্রতি ভারতের বেঙ্গালুরু শহরে এক ব্যক্তির আত্মহত্যার ঘটনা দেশজুড়ে পণ(যৌতুক) আইন নিয়ে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। এ ঘটনার পর থেকে পণ আইনের অপব্যবহার, বিবাহ বিচ্ছেদ, ও পারিবারিক নির্যাতনের নানা দিক আলোচনায় উঠে এসেছে।
গত ৯ ডিসেম্বর রাতে বেঙ্গালুরুর ৩৪ বছর বয়সী সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার অতুল সুভাষ আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুর আগে তিনি একটি ২৪-পৃষ্ঠার সুইসাইড নোট এবং ৮১ মিনিটের ভিডিও রেকর্ড করেন। এই চিঠি ও ভিডিওতে তিনি তাঁর স্ত্রীর পরিবারকে হয়রানি ও নির্যাতনের জন্য দায়ী করেন। অতুল দাবি করেন, তাঁর স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়া এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা তাঁকে বারবার টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন।
অতুলের চিঠি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে, দেশজুড়ে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা দেখা দেয়। পুরুষ অধিকার আন্দোলনের কর্মীরা এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে কঠোর পদক্ষেপের দাবি তোলেন।
অতুল সুভাষ ও নিকিতা সিংহানিয়া ২০১৯ সালে বিয়ে করেছিলেন। তবে গত তিন বছর ধরে তাঁরা আলাদা থাকছিলেন। তাঁদের চার বছরের ছেলের সাথেও অতুলের দেখা করতে দেওয়া হচ্ছিল না বলে অভিযোগ। অতুলের দাবি, তাঁর স্ত্রী মিথ্যা মামলা দায়ের করে তাঁকে মানসিকভাবে অত্যাচার করছিলেন। নিকিতা এবং তাঁর পরিবার অতুলের বিরুদ্ধে পণ দাবি ও নির্যাতনের অভিযোগ আনলেও অতুল এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন।
অতুল তাঁর ভিডিওতে অভিযোগ করেন, নিকিতার পরিবার তাঁকে ৩ কোটি টাকার বিনিময়ে মামলা প্রত্যাহার এবং ছেলের সাথে দেখা করার অধিকার দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। পাশাপাশি, মাসিক খরচ ৪০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ টাকা দাবি করা হয়। আদালতের শুনানিতে দীর্ঘসময় এবং এক বিচারকের ঘুষ দাবি ও হয়রানির কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
ঘটনার পর বেঙ্গালুরু পুলিশ নিকিতা, তাঁর মা এবং ভাইকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে। তাঁরা এসব অভিযোগ অস্বীকার করলেও তদন্ত চলছে।
ভারতে ১৯৬১ সাল থেকে যৌতুক নিষিদ্ধ হলেও, অধিকাংশ বিয়েতে এখনও পণ প্রথা চালু রয়েছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে পণ নিয়ে ঝগড়ার জেরে ৩৫,৪৯৩ জন নারীর মৃত্যু হয়েছে। তবে পণ আইনের অপব্যবহার নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
পুরুষ অধিকার আন্দোলন কর্মীরা বলেন, আইনটি অনেক সময় পুরুষদের হয়রানি করতে ব্যবহৃত হয়। তাঁদের দাবি, আইনটি লিঙ্গ নিরপেক্ষ করা উচিত এবং অপব্যবহার প্রমাণ হলে কঠোর শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন।
যৌতুক আইন ভারতের নারীদের রক্ষার জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। তবে এর অপব্যবহারের অভিযোগ এবং অতুল সুভাষের আত্মহত্যার মতো ঘটনার পর আইনটির প্রয়োগ নিয়ে নতুন করে চিন্তা করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। নারীদের সুরক্ষার পাশাপাশি পুরুষদের জন্যও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা একান্ত জরুরি। তথ্যসূত্র : বিবিসি
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
হাসিনাকে ফেরত আনতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা তদন্তে কমিশন গঠন
আসাদের পতন, নিজের বেঁচে থাকার গল্প বললেন এক সিরিয়ান শরণার্থী
গভীর রাতে শীতার্ত মানুষের পাশে বিএনপি নেতা আমিনুল হক
বঙ্গতে আসছে 'ফ্যামিলি ফিউড বাংলাদেশ'
সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ সম্পন্ন
পানামা খাল দখলের হুমকি ট্রাম্পের, ভর্ৎসনা পানামার প্রেসিডেন্টের
কুমিল্লায় বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হেনস্তার ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা
পাবনা-৩ এলাকায় অ্যাডভোকেট রবিউলের গণসংযোগ ও কম্বল বিতরণ
পান্থকুঞ্জ ও আনোয়ারা পার্ক নিয়ে নতুন করে ভাবা হচ্ছে: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
নারী পুলিশের দিকে তাকিয়ে আসামির হাসি, নেটদুনিয়ায় তোলপাড়
জার্মানির ক্রিসমাস মার্কেটে হামলায় ৯ বছরের শিশুর মৃত্যুতে শোকের ছায়া
স্ত্রী-কন্যাসহ সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
গ্রেপ্তারের ভয়ে পোল্যান্ড সফর বাতিল করলেন নেতানিয়াহু
নাটোরে ৬ ট্রাকের সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২, আহত ৭
রাখাইনের অস্থিরতায় টেকনাফ স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি কমেছে ৯০ ভাগ
ক্রিসমাস মার্কেট হামলা, জার্মান কর্তৃপক্ষের কাছে গত বছরেই এসেছিল সতর্কবার্তা
উপদেষ্টা হাসান আরিফকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন
ডলার বাজারে অস্থিরতা, দাম বেড়ে ১২৯ টাকা
উত্তরার বিপ্লবী জনতাকে যে কঠিন মূল্য দিতে হয়েছিল