দ. কোরিয়ায় ইউন সুক ইয়োলের গ্রেপ্তার নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:০০ পিএম | আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:০২ পিএম

দক্ষিণ কোরিয়ার সাময়িক বরখাস্ত হওয়া রাষ্ট্রপতি ইউন সুক ইয়োলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করা নিয়ে দেশজুড়ে উত্তেজনা চলছে। সামরিক আইন প্রয়োগের ব্যর্থ চেষ্টার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা চলছে, এবং এই প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক জটিলতা আরও গভীর হয়েছে।

 

২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে ইউন সুক ইয়োলের বিরুদ্ধে সামরিক আইন প্রয়োগের চেষ্টা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তা বাহিনী তাকে রক্ষার জন্য বারবার তদন্তকারীদের বাধা দেয়, এমনকি গ্রেপ্তার ঠেকাতে তার বাসভবন ঘিরে কাঁটাতার ও বাসব্যারিকেড স্থাপন করা হয়। এদিকে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকরের শেষ সময়সীমা সোমবার শেষ হতে চলেছে।

 

ইউন সুক ইয়োল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং নিজের বাসভবনে 'প্রায় আটক অবস্থায়' থাকার দাবি করেছেন। তার নিরাপত্তা প্রধান পার্ক জং-জুন বলেছেন, চলমান আইনগত বিতর্কের মাঝে রাষ্ট্রপতির সুরক্ষা নিশ্চিত করা তাদের দায়িত্ব। তবে সমালোচকরা বলছেন, রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তা বাহিনী কার্যত তার 'ব্যক্তিগত মিলিশিয়া' হিসেবে কাজ করছে।

 

অন্যদিকে, ইউনের গ্রেপ্তারে প্রতিবন্ধকতার জন্য বিরোধী দল দায়ীদের শাস্তি দাবি করেছে। নতুন পরোয়ানার অনুমোদন চেয়ে তদন্তকারীরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে, যা অনুমোদিত হলে ইউনকে ২০ দিন পর্যন্ত আটক রাখা সম্ভব হবে।

 

এই পরিস্থিতিতে, রাষ্ট্রপতির সমর্থক ও বিরোধীদের হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমেছে। ঘন তুষারপাতের মধ্যেও তারা গ্রেপ্তারের পক্ষে ও বিপক্ষে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে।

 

ইউন সুক ইয়োলের সামরিক আইন ঘোষণার পরিকল্পনা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রকে আগে অবহিত করা হয়নি, যার ফলে ওয়াশিংটনও অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়ে। এর প্রভাব দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতায় বাধার সৃষ্টি করতে পারে।

 

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এই সংকটের মাঝে দক্ষিণ কোরিয়ায় সফরে রয়েছেন এবং কোরিয়ার গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করেছেন। তবে আগামী রাষ্ট্রপতি নির্বাচন এবং ট্রাম্প প্রশাসনের আগমনে দেশটির অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক নীতিতে পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।

 

দক্ষিণ কোরিয়ার এই সংকট দেশটির রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা পরীক্ষা করছে। একইসঙ্গে, এই পরিস্থিতি আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে পারে। দেশের জনগণ ও নেতৃত্ব কীভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়। তথ্যসূত্র : বিবিসি


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

গাজায় ফিলিস্তিনিদের ত্রাণ সহযোগিতা দিচ্ছে হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি
এক-পঞ্চমাংশ এইচ-১বি ভিসাই ভারতীয় সংস্থাগুলোর কাছে
গ্রীনল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন ট্রাম্প জুনিয়র
মক্কা-মদিনায় ভারী বৃষ্টিতে বন্যা
ভারতে চীনের পরিবর্তে বাড়ছে জাপানি বিনিয়োগ
আরও

আরও পড়ুন

জুলাই গণহত্যা: হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল

জুলাই গণহত্যা: হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল

শিগগিরই চালের দাম কমে আসবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

শিগগিরই চালের দাম কমে আসবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

গাজায় ফিলিস্তিনিদের ত্রাণ সহযোগিতা দিচ্ছে হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি

গাজায় ফিলিস্তিনিদের ত্রাণ সহযোগিতা দিচ্ছে হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি

ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতি যুদ্ধ নাকি বন্ধুত্বের পক্ষে

ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতি যুদ্ধ নাকি বন্ধুত্বের পক্ষে

মিথ্যা ন্যারেটিভ ভেঙ্গে দেয়া আমাদের ইতিহাসের দায়বদ্ধতার অংশ

মিথ্যা ন্যারেটিভ ভেঙ্গে দেয়া আমাদের ইতিহাসের দায়বদ্ধতার অংশ

বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

এক-পঞ্চমাংশ এইচ-১বি ভিসাই ভারতীয় সংস্থাগুলোর কাছে

এক-পঞ্চমাংশ এইচ-১বি ভিসাই ভারতীয় সংস্থাগুলোর কাছে

গ্রীনল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন ট্রাম্প জুনিয়র

গ্রীনল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন ট্রাম্প জুনিয়র

মক্কা-মদিনায় ভারী বৃষ্টিতে বন্যা

মক্কা-মদিনায় ভারী বৃষ্টিতে বন্যা

ভারতে চীনের পরিবর্তে বাড়ছে জাপানি বিনিয়োগ

ভারতে চীনের পরিবর্তে বাড়ছে জাপানি বিনিয়োগ

পশ্চিম তীরে ৩ ইসরাইলি নিহত

পশ্চিম তীরে ৩ ইসরাইলি নিহত

যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা একীভূত করার প্রস্তাব ট্রাম্পের

যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা একীভূত করার প্রস্তাব ট্রাম্পের

অস্ট্রিয়ায় সরকার গঠন করছেন অতি ডানপন্থি নেতা কিকল

অস্ট্রিয়ায় সরকার গঠন করছেন অতি ডানপন্থি নেতা কিকল

গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ-কুকুর

গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ-কুকুর

শত্রুদের যে বার্তা দিলেন কিম

শত্রুদের যে বার্তা দিলেন কিম

আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিকসের সদস্যপদ পেল ইন্দোনেশিয়া

আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিকসের সদস্যপদ পেল ইন্দোনেশিয়া

স্বামী ও ৬ সন্তান রেখে ভিক্ষুকের সঙ্গে পালালেন নারী

স্বামী ও ৬ সন্তান রেখে ভিক্ষুকের সঙ্গে পালালেন নারী

গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনড় এরদোগান

গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনড় এরদোগান

সন-টটেনহ্যাম চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি

সন-টটেনহ্যাম চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি

ইবি’র পাঠ্যসূচিতে জুলাই বিপ্লবের ইতিহাস

ইবি’র পাঠ্যসূচিতে জুলাই বিপ্লবের ইতিহাস