অন্যদিকে বাইডেন বললেন 'ইসরায়েল সফল'

গাজা চুক্তিকে যেকারণে ‘হামাসের জয়’ বলছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম

Daily Inqilab মমিনুল ইসলাম

২০ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:২৩ পিএম | আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:২৩ পিএম

 

ইসরায়েলি গণমাধ্যম গাজায় গণহত্যা বন্ধে সম্প্রতি গৃহীত যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময় চুক্তির সমালোচনা করে বলেছে, হামাসের গাজা শাসন করার মূল লক্ষ্য অব্যাহত থাকবে।

 

 

 

ইসরায়েলি গণমাধ্যম গত রাতের ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে ঘোষিত গাজা যুদ্ধবিরতিকে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের বিজয় হিসেবে বর্ণনা করেছে। এসব গণমাধ্যম বলছে, হামাসের মূল লক্ষ্য ‘‘গাজায় থাকা, নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা এবং গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলকে কোনও পা রাখতে না দেওয়া।’’

 

 

ইসরায়েলি গণমাধ্যম আল মায়াদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাস সফলভাবে তার লক্ষ্য অর্জন করেছে। অন্যদিকে, ‘ইসরায়েল’ ব্যর্থ হয়েছে।

 

 

এদিকে, ইসরায়েলি গণমাধ্যম গাজা চুক্তিকে ‘হামাসের জয়’ হিসেবে বর্ণনা করলেও ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) গত ১৫ মাসের ধরে চালানো ভয়াবহ অভিযানকে ‘অত্যন্ত সফল’ বলে উল্লেখ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এই অভিযানের জেরে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে ‘আমূল পরিবর্তন’ আসবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।

 

 

এপ্রসঙ্গে আইটোয়েন্টিফোরনিউজ-এর আরব বিষয়ক বিশ্লেষক জভি ইহেজকেলি বলেছেন, এই চুক্তির চ্যালেঞ্জ বন্দীদের মুক্তি করা নয়। বরং যুদ্ধবিরতি পরবর্তী পরিস্থিতিতে কীভাবে সামনে এগিয়ে যাওয়া যায় সেটাই মূল চ্যালেঞ্জ।

 

 

এই বিশ্লেষকের মতে, চুক্তির অর্থ হল ‘হামাস গাজায় এগিয়ে যাচ্ছে’। যার অর্থ দাঁড়ায়, ‘ইসরায়েল তার লক্ষ্য অর্জনে বা অঞ্চলের বাস্তবতা পরিবর্তন করতে ব্যর্থ হয়েছে।’

 

 

‘‘হামাস কেবল একটি জিনিস চায় এবং তারা তাদের লক্ষ্যে অবিচল... তারা গাজার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চায়’’, বলেন ইয়েহেজকেলি।

 

 

সদ্য কার্যকর হওয়া এই যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে ‘ইসরায়েলের করা সবচেয়ে খারাপ চুক্তিগুলির মধ্যে অন্যতম হিসাবে বর্ণনা করেছেন আরেকজন ইসরায়েলি ভাষ্যকার। ইসরায়েলি শিন বেট নিরাপত্তা সংস্থার প্রাক্তন কর্মকর্তা মিচা কোবির মতে, ‘‘ইসরায়েল যে চুক্তিতে সম্মত হয়েছে তা তার জন্য আদর্শ নয়; এটি তার ইতিহাসে করা সবচেয়ে খারাপ চুক্তিগুলির মধ্যে একটি।’’

 

 

কোবি জোর দিয়ে বলেন, এটিই ছিল ‘ইসরায়েল’-এর একমাত্র পছন্দ। দখলদার (ইসরায়েল) তার বসতি স্থাপনকারীদের অপহরণ থেকে রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে এবং বর্তমানে তাদের ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থতার জন্য মূল্য চোকাতে বাধ্য হচ্ছে।

 

 

চুক্তির একটি কঠিন দিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বন্দীদের ভাগ্য সম্পর্কে অনিশ্চয়তা।’

 

 

এরআগে ১৫ জানুয়ারি দ্য টাইমস অব ইসরায়েল-এ ‘‘প্রথমবারের মতো ইসরায়েল যুদ্ধে হেরেছে’’ শিরোনামে একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করে। ইসরায়েলি সংবাদপত্রটি হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠীর জন্য একটি স্পষ্ট জয় এবং ইসরায়েলের সম্পূর্ণ ব্যর্থতা হিসেবে বর্ণনা করে।

 

 

 

প্রবন্ধটিতে হামাসের কিছু অর্জনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হয়েছে। একই সাথে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের আগের তুলনায় ইসরায়েল এখন দুর্বল। এতে আরও বলা হয়েছে, হামাস ইতোমধ্যেই গাজায় ১২ হাজারের বেশি যোদ্ধা নিয়ে তার সামরিক সক্ষমতা পুনর্নির্মাণ করছে।

 

 

প্রবন্ধটিতে আরও দাবি করা হয়, ফিলিস্তিনিরা সফলভাবে বিশ্বের জনমত লাভ করেছে এবং দেখিয়েছে, ইসরায়েল বেশি দিতে এবং কম নিতে ইচ্ছুক।

 

 

এদিকে, গতকাল রোববার ছিল প্রেসিডেন্ট বাইডেনের শেষ পূর্ণ কার্যদিবস। এ দিন সাউথ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের নিউ চার্লসটন শহরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাইডেন বলেন, “সীমাহীন যন্ত্রণা, ধ্বংস ও প্রাণহানির পর আজ থেকে গাজায় কামান-বন্দুকের শব্দ বন্ধ হলো। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান অত্যন্ত সফল।কারণ এ অভিযানের জেরে হামাস একদিকে নিজের শীর্ষ নেতাদের হারিয়েছে, অন্যদিকে হামাসকে যারা অর্থ ও অস্ত্রসহায়তা দিয়ে টিকিয়ে রেখেছে, তাদেরও প্রায় কোমরভাঙা অবস্থা।হামাসের সবচেয়ে বড় সমর্থক ও সহায়তাকারী গোষ্ঠী ছিল হিজবুল্লাহ। এই যুদ্ধে হিজবুল্লাহ তার শীর্ষ নেতৃত্বকে হারিয়ে প্রায় তছনছ হয়ে গেছে। গোষ্ঠীটি আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে হামাসকে আর তারা সহায়তা করবে না।”

 

 

সূত্র: মেহর নিউজ

 


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

২০২৪ সালে বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ তিনগুণ বৃদ্ধি,অক্সফামের চাঞ্চল্যকর তথ্য
চীনে গাড়ি হামলা-হত্যার দায়ে দুই অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
জাতীয় প্রতিরক্ষা ইস্যুতে ইরানের দৃঢ় অবস্থান
গাজা পুনর্গঠনে কার হাতে থাকবে প্রশাসনিক দায়িত্ব ?
মুক্ত তিন ইসরাইলি জিম্মিকে যে ‘উপহারের ব্যাগ’ দিলো হামাস
আরও

আরও পড়ুন

রামু বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

রামু বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যা, তিন পুলিশ সদস্য কারাগারে

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যা, তিন পুলিশ সদস্য কারাগারে

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র

আন্দোলনে আহতের দেখতে ঢাকা পঙ্গু ও চক্ষু হাসপাতালে এমপি কায়কোবাদ

আন্দোলনে আহতের দেখতে ঢাকা পঙ্গু ও চক্ষু হাসপাতালে এমপি কায়কোবাদ

চাঁদপুর মেঘনায় মাটিবহনকারী দুটি বাল্কহেডসহ আটক ৯

চাঁদপুর মেঘনায় মাটিবহনকারী দুটি বাল্কহেডসহ আটক ৯

রামগঞ্জে নিখোঁজের চার দিন পর খাল থেকে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার

রামগঞ্জে নিখোঁজের চার দিন পর খাল থেকে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার

২০২৪ সালে বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ তিনগুণ বৃদ্ধি,অক্সফামের চাঞ্চল্যকর তথ্য

২০২৪ সালে বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ তিনগুণ বৃদ্ধি,অক্সফামের চাঞ্চল্যকর তথ্য

দিল্লি ফ্যাসিবাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় হয়ে উঠেছে: রিজভী

দিল্লি ফ্যাসিবাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় হয়ে উঠেছে: রিজভী

ভোটের অধিকার রক্ষায় জনপ্রতিরোধ গড়ে তোলতে হবে: সিইসি

ভোটের অধিকার রক্ষায় জনপ্রতিরোধ গড়ে তোলতে হবে: সিইসি

ব্র্যান্ড প্র্যাকটিশনার্স বাংলাদেশের আয়োজনে বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস মার্কেটিং ফেস্ট অনুষ্ঠিত

ব্র্যান্ড প্র্যাকটিশনার্স বাংলাদেশের আয়োজনে বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস মার্কেটিং ফেস্ট অনুষ্ঠিত

বিরলে জুলাই আগষ্ট অভুত্থানে নিহত

বিরলে জুলাই আগষ্ট অভুত্থানে নিহত

সিআইপির খাল সমূহ পুনঃখনন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সহ সাত দফা দাবি

সিআইপির খাল সমূহ পুনঃখনন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সহ সাত দফা দাবি

চীনে গাড়ি হামলা-হত্যার দায়ে দুই অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

চীনে গাড়ি হামলা-হত্যার দায়ে দুই অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

বিজিবির জন্য সাউন্ড গ্রেনেড-টিয়ারশেল কেনা হচ্ছে

বিজিবির জন্য সাউন্ড গ্রেনেড-টিয়ারশেল কেনা হচ্ছে

শহীদ আসাদের আত্মত্যাগেই আজকের বাংলাদেশ- খোকন

শহীদ আসাদের আত্মত্যাগেই আজকের বাংলাদেশ- খোকন

লিটনের ব্যাটে ঢাকার বড় সংগ্রহ

লিটনের ব্যাটে ঢাকার বড় সংগ্রহ

পীরগঞ্জের ৯ জন শিক্ষার্থী'র চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ

পীরগঞ্জের ৯ জন শিক্ষার্থী'র চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ

জাতীয় প্রতিরক্ষা ইস্যুতে ইরানের দৃঢ় অবস্থান

জাতীয় প্রতিরক্ষা ইস্যুতে ইরানের দৃঢ় অবস্থান

বঙ্গোপসাগরে নিষিদ্ধ পদ্ধতিতে মাছ আহরণ, ভেস্তে যাচ্ছে উৎপাদন

বঙ্গোপসাগরে নিষিদ্ধ পদ্ধতিতে মাছ আহরণ, ভেস্তে যাচ্ছে উৎপাদন

‘জুলাই বিপ্লবের’ মাধ্যমে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার সুযোগ এসেছে : সিইসি

‘জুলাই বিপ্লবের’ মাধ্যমে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার সুযোগ এসেছে : সিইসি