ছাড়া পেল ৩৬৯ ফিলিস্তিনি
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০২ এএম | আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০২ এএম

গাজার যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা শঙ্কার মধ্যেই তিনজন ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। ইসরাইলের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে তাদেরকে গাজার খান ইউনিস থেকে রেডক্রসের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ জানিয়েছে, শনিবার মুক্তি পাওয়া তিনজন বন্দি ইতোমধ্যে ইসরাইলে পৌঁছেছে। ওই তিনজন জিম্মি মুক্ত পাওয়ার পর তাদের বহনকারী রেডক্রসের গাড়ি গাজার খান ইউনিস ছেড়ে যায়।
প্রাথমিকভাবে ইসরাইলের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ওই তিনজনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তারা পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করতে পারবেন। গণমাধ্যমে প্রকাশ পাওয়া বেশ কিছু ছবিতে দেখা যায় জিম্মিদের মুক্তি দেয়ার আগে তাদেরকে ঘিরে রয়েছেন বন্দুকধারীরা। গাজা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তারা হামাসের হাতে বন্দি ছিলেন। মুক্তি পাওয়া বন্দিরা হলেন ইসরাইলি-রুশ নাগরিক আলেকজান্ডার ট্রুফানোভ, ইসরাইলি-আর্জেন্টাইন ইয়ায়ার হর্ন এবং ইসরাইলি-আমেরিকান সাগুই ডেকেল-হান। ফিলিস্তিনি প্রিজনার্স মিডিয়া অফিসের তথ্যমতে, ইসরাইলও ৩৬৯ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিচ্ছে। এর মধ্যে কিছু তাদের কিছু অংশ পশ্চিম তীরে পৌঁছেছে। বাকিরা পরে গাজায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
বাবা হওয়ায় স্বর্ণমুদ্রা উপহার হামাসের : ইসরাইলের সঙ্গে বন্দী বিনিময় চুক্তির ষষ্ঠ ধাপের অংশ হিসেবে ৩ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এ সময় এক বন্দিকে তার ছোট্ট মেয়ের জন্য সোনার মুদ্রা উপহার দিয়েছে হামাস। ইরানা নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ডেকেল হান নামক এক ইসরাইলিকে বন্দী করার চার মাস পর কন্যা সন্তানের বাবা হন তিনি। তাই তাকে মেয়ের জন্য উপহার হিসাবে এই সোনার মুদ্রা উপহার দেওয়া হয়েছে।
বিকল্প প্রস্তাব আনছে আরব দেশগুলো : সূত্র জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা থেকে ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের মুক্ত করার উচ্চাকাক্সক্ষার বিরুদ্ধে গাজার ভবিষ্যতের পরিকল্পনা তৈরির জন্য জরুরি আরব প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দিচ্ছে সউদী আরব। সউদী আরব, মিসর, জর্ডান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত দ্রুত বিকল্প উদ্যোগ গ্রহণের জন্য তৎপর হয়ে উঠেছে, বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে সউদী আরবের রাজধানী রিয়াদে এ মাসেই একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকে উপসাগরীয় দেশগুলোর নেতৃত্বে ফিলিস্তিন পুনর্গঠন তহবিল গঠনের পাশাপাশি হামাসকে বাদ দিয়ে নতুন চুক্তির দিকেও নজর দেয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী, গাজার ফিলিস্তিনিদের জর্ডান এবং মিসরে পুনর্বাসিত করা হবে। তবে কায়রো এবং আম্মান তা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, এ ধরনের পদক্ষেপ পুরো অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা বাড়াবে। রয়টার্সের সূত্র মতে, সউদী আরব এ প্রস্তাবে সবচেয়ে বেশি হতাশ। কারণ, গাজা দখলের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের শর্ত বাতিল হয়ে যাবে, যা ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সউদী প্রচেষ্টাকে দুর্বল করবে।
মিসর এ সংকট সমাধানে একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করেছে, যেখানে হামাসকে বাদ দিয়ে গাজার শাসন পরিচালনার জন্য একটি জাতীয় ফিলিস্তিনি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় গাজার পুনর্গঠন এবং দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রস্তাব রয়েছে। এই প্রস্তাব রিয়াদে সউদী আরব, মিসর, জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ফিলিস্তিনের প্রতিনিধিরা আলোচনা করবেন এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আরব সম্মেলনে এ পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হবে।
এ সংকটের সমাধানে সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। জর্ডানের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছি যে, আমরা বিকল্প পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি এবং সউদী যুবরাজ এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এদিকে, হোয়াইট হাউস ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি, তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, এই মুহূর্তে একমাত্র পরিকল্পনা ট্রাম্পের। তবে যদি তাদের আরও ভালো বিকল্প থাকে, এখনই তা উপস্থাপন করা উচিত। আরব দেশগুলোর মুখপাত্ররা এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেননি।
জর্ডান আর ফিলিস্তিনিদের নিতে পারবে না : আরব দেশগুলো এমন একটি পরিকল্পনা তৈরি করছে যা গাজার জনগণকে বাস্তুচ্যুত না করে পুনর্গঠন করবে, নিরাপত্তা ও শাসনব্যবস্থা নিশ্চিত করবে, জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শুক্রবার বলেছেন। তিনি আরও বলেন যে, তার দেশ আর ফিলিস্তিনিদের নিতে পারবে না। এই মাসের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের ‘উচ্ছেদ’ করে তাদের বেশিরভাগকে জর্ডান ও মিশরে পুনর্বাসনের পরিকল্পনা ঘোষণা করার পর আরব দেশগুলো হতাশ হয়ে পড়েছিল, এ ধারণাটি তাৎক্ষণিকভাবে কায়রো এবং আম্মান প্রত্যাখ্যান করেছে এবং বেশিরভাগ অঞ্চলের ক্ষেত্রে এটিকে গভীরভাবে অস্থিতিশীল বলে মনে করা হয়।
‘আপনাদেরকে স্পষ্টভাবে বলতে গেলে, আমাদের জনসংখ্যার ৩৫ শতাংশ শরণার্থী, আমরা আর কোনও খরচ বহন করতে পারছি না, আমরা ফিলিস্তিনিদের জর্ডানে আসতে দিতে পারি না। তারা জর্ডানে আসতে চায় না এবং আমরাও চাই না তারা জর্ডানে আসুক,’ মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে আয়মান সাফাদি বলেন। জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ ১১ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটনে ভ্রমণ করেন, যেখানে তিনি ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে তার দেশের ‘অটল অবস্থান’ পুনর্ব্যক্ত করেন। বৈঠক সম্পর্কে অবগত দুটি ইউরোপীয় কূটনৈতিক সূত্রের মতে, বাদশাহ ট্রাম্পকে বলেছিলেন যে আরব পরিকল্পনা ট্রাম্পের প্রস্তাবের চেয়ে ‘সস্তা এবং দ্রুত’ হবে, যা আমেরিকান নেতা গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন। ‘আমরা একটি আরব প্রস্তাবের উপর কাজ করছি যা দেখাবে যে আমরা গাজাকে তার জনগণকে বাস্তুচ্যুত না করে পুনর্গঠন করতে পারি, আমাদের এমন একটি পরিকল্পনা থাকতে পারে যা নিরাপত্তা এবং শাসন নিশ্চিত করবে,’ সাফাদি বলেন। তিনি আরও বলেন যে, ইসরাইলকে ১০ বা ২০ বছরের মধ্যে এ অঞ্চলটিকে কীভাবে দেখতে চায় তা নিয়েও ভাবতে হবে। সূত্র : রয়টার্স, ডন।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

চূড়ান্ত সফলতা অর্জন করা পর্যন্ত বিএনপির সকল নেতাকর্মীকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে-বাদল

নতুন পদ্ধতিতে রেলের টিকিটিং ব্যবস্থা, তবে কি এবার রোধ হবে কালোবাজারি?

রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে ঃ আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

সরকারকে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আহ্বান তারেক রহমানের

বাংলাদেশ বিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত হলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে ঃ মামুনুল হক

নাগরিকত্ব আইন বদলে ফেলতে এ বার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ ট্রাম্প

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কষ্ট আমরা বুঝি' - ড. ফায়েজ

সিদ্ধিরগঞ্জে জালকুড়ি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে ৮ দোকান পুড়ে ছাই

লাখো রোহিঙ্গাদের ইফতার স্থানে প্রবেশের হুড়োহুড়িতে নিহত ১ আহত ২

ভূরুঙ্গামারীতে নদ থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন

বাংলাদেশের ব্যবসায়িদের ফল-মিষ্টি দিলেন আগরতলা পৌরসভার মেয়র

পতিত স্বৈরাচারের দোসররা একেক সময় একেক নামে আবির্ভাব হচ্ছে: খায়ের ভূঁইয়া

আল হিকমাহ ইসলামিক অলিম্পিয়াড পুরুষ্কারে ভূষিত হলো নোয়াখালী মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা

মাগুরায় শিশু আছিয়ার নির্মম মৃত্যু: রাবি শিক্ষক ফোরামের বিচার দাবি

কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন মার্ক কার্নি

ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে, নইলে সংকট বাড়বে: শিপন

কয়েকজন ছাত্রনেতা মনে করে ৫ আগষ্টের আগে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রই ছিলো না: ইশরাক

ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত থাকলে কেউ ক্ষতি করতে পারবে না - আমিনুল হক

আল-আকসা মসজিদে ৮০ হাজার মুসল্লির জুমার নামাজ আদায়

থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ বাছাই শুরু মেয়েদের