মোদির তোষণ করেছে ইসকন সদস্য তুলসী
১৯ মার্চ ২০২৫, ০২:৪৮ পিএম | আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৫, ০২:৪৮ পিএম

ট্রাম্প প্রশাসন দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতা গ্রহণ করার পরে বিশেষভাবে আলোচনায় আসে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ডের নাম। ১৯৮১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামোয়ায় জন্মগ্রহণ করা তুলসীর বাবা মাইক গ্যাবার্ড, মা ক্যারল গ্যাবার্ড। গ্যাবার্ড দম্পতির পাঁচ সন্তানের একজন তুলসী। ১৯৮৩ সালে তুলসীর বয়স যখন দুই বছর, তখন গ্যাবার্ড পরিবার যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। হাওয়াইতে আসার পর তার মা ক্যারল সনাতন ধর্মে ধর্মান্তরিত হন। তার বাবা একজন রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টান ছিলেন। সনাতন ধর্মের প্রভাবের কারণে ক্যারল গ্যাবার্ড তার সন্তানদের হিন্দু নাম রেখেছিলেন।
সবসময় ক্ষমতার আশেপাশে অবস্থান করা তুলসী ছিলেন ডেমোক্র্যাট দলের একজন সক্রিয় রাজনীতিবিদ। এমনকি পরিচিত ছিলেন মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য হিসেবে। পরে দল বদল করে যোগ দেন রিপাবলিকান পার্টিতে। ট্রাম্প প্রশাসন দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসায় একপ্রকার ফুলে-ফেঁপে ওঠেন তুলসি। বর্তমান আমেরিকান প্রশাসন তাকে ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির ডিরেক্টর বানিয়েছেন।
এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের ১৭টি ইন্টেলিজেন্স ডিপার্টমেন্টের হেড হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন তিনি; যার মধ্যে সিআইএ, নেভী, আর্মির মতো সংস্থা রয়েছে। ৪৩ বছর বয়সি তুলসী গ্যাবার্ড ভারতীয় বংশোদ্ভূত কোনো হিন্দু নন। বরং তুলসীর মা সনাতন ধর্ম গ্রহণ করেন এবং নিজের সন্তানদের নাম হিন্দুদের মতো রাখেন।
জানা যায়,তুলসী গ্যাবার্ড সনাতন ধর্মের উগ্রবাদী সংগঠন ইসকনের একনিষ্ঠ সমর্থক ও আজীবন সদস্য। ভারতের বিজেপি সরকারের সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। এমনকি তথ্যমতে, ২০১৫ সালে তুলসী গ্যাবার্ডের বিয়েতে উগ্র হিন্দুপন্থি আরএসএসের মুখপাত্র রামমাধব নরেন্দ্র মোদির পার্সোনাল বার্তা পড়ে শোনান। গুজরাট দাঙ্গার কারণে নরেন্দ্র মোদিকে ভিসা না দেওয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনাও করেন তুলসী গ্যাবার্ড।
স্বৈরাচার হাসিনার পতনে যেন নিজেদের অস্তিত্ব খুঁজে পাচ্ছেন না কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদী মোদি প্রশাসন এবং তার তাবেদাররা। ড.মোহাম্মদ ইউনুস অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান হয়ে আসায় যেন নিজেদের সাম্রাজ্য গুঁড়িয়ে যাচ্ছে ইন্ডিয়ার। তাই বারংবার চেষ্টা করছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নিজেদের নোংরা নাক গলানোর। কিন্তু তা আর হচ্ছে কোথায়। সংখ্যালঘু কার্ড থেকে শুরু করে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরির মাধ্যমে বাংলাদেশকে অশান্ত করার পাঁয়তারায় কোনভাবেই সফলতা অর্জন করতে পারছে না কট্টর মোদি। তাই আওয়ামীলীগ এবং তাদের ফাদার সংগঠন বিজেপির বর্তমানে একটাই ট্রামকার্ড, সেটা হলো আমেরিকা তথা তুলসি গ্যাবার্ডের কাছে সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং ইসলামিক টেররিজমকে বাংলাদেশের উপর চাপিয়ে দেওয়া। তবুও যেন কোনভাবেই কুলিয়ে উঠতে পারছে না শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. ইউনুসের সাথে।
সম্প্রতি ভারত সফরে এসেছিলেন তুলসী। আর তাতেই যেন আওয়ামী প্রেতাত্মারা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। এদিকে ইসকন অনুসারী তুলসি যেন মোদির মোহে বিমোহিত হয়ে পড়েছেন। কোন রকম তথ্য প্রমাণ ছাড়াই মোদির প্রেসক্রিপশনে সম্প্রতি বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করেন তুলসি। অবশ্য তুলসীর এমন অযাচিত মন্তব্যের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ। আবার সেই প্রতিবাদকে সাদুবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশে অবস্থানরত ফ্রান্সের এম্বাসি।
অন্যদিকে গ্যাবার্ডের সঙ্গে বৈঠককালীন সময়ে তাকে উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজের (যেখানে মহাকুম্ভ অনুষ্ঠিত হয়েছিল) ‘গঙ্গারপানি’ উপহার দেন মোদি।
গত সোমবার নয়াদিল্লিতে ইসকন শিষ্যা তুলসী গ্যাবার্ডের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মোদী। এসময় তুলসীকে উপহার হিসেবে ঘটিতে করে গঙ্গার দেন এই বিজেপি নেতা। জানা গিয়েছে, মহাকুম্ভের সময় ওই পানি সংগ্রহ করা হয়েছিল। এসময় পাল্টা উপহার হিসেবে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে একটি রুদ্রাক্ষের মালা উপহার দেন তুলসী গ্যাবার্ড।
পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে মোদি লেখেন, ‘দিল্লি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে ব্যাপক বৈশ্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও জোরদার করার বিষয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত,আলোচনা চলাকালে মোদি তোষণে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তুলসী। কোনরকম বাছবিচার ছাড়াই বাংলাদেশ সম্পর্কে এমন মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর কারনে অনেকে তাকে মোদির অন্তরঙ্গ বলেও দাবি করেন। একচেটিয়াভাবে পাশ্ববর্তী দেশের কট্টরপন্থী হিন্দু সরকারের কথামতো যাচ্ছে তাই বলে যাওয়াকে আমেরিকার ইতিহাসকে বিকৃত করা হিসেবেও বিবেচনা করছেন কেউ কেউ। এমনকি বিশিষ্টজনদের দাবি, তুলসীর এমন কর্মকাণ্ড আমেরিকার জন্য ভয়াবহ হুমকির কারন হতে পারে।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

আনোয়ারায় বিএনপি'র মিছিলে হামলার মামলায় আটক ২

ভারতের পরিকল্পনায় ক্যান্টনমেন্ট থেকে আ'লীগকে ফেরানোর ষড়যন্ত্র: যে ভয়ঙ্কর তথ্য দিলেন হাসনাত

স্ত্রী-ছেলেসহ রনজিত ৭৯ বিঘা জমি জব্দ, ১৩৭ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত মার্কিন বিচারকরা

মাদক মামলায় নারীসহ একই পরিবারের ৩ পলাতক আসামি গ্রেফতার

এবার মার্কিন শিক্ষা বিভাগই তুলে দিতে যাচ্ছেন ট্রাম্প

সবচেয়ে সুখী দেশ ফিনল্যান্ড

যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নতুন নির্দেশনা জার্মানির

ঈদযাত্রায় রেলে বাড়বে কোচ

বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের শাস্তি সাত বছর কারাদণ্ড

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে ঢাকায় জামায়াতের বিক্ষোভ

ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হলে দেশ সঠিক পথে থাকবে : আমীর খসরু

শাহতলী পীর সাহেব মাওলানা আবুল বাশারের দাফন সম্পন্ন

ঐকমত্য কমিশনের ৪২ প্রস্তাবে একমত নয় এলডিপি

৯৬টি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন বাতিলে চূড়ান্ত অনুমোদন

পরিবেশগত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করবে বাংলাদেশ-নেপাল

সাবেক সেনা কর্মকর্তা-আমলাদের নিয়ে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ

সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের পক্ষে জামায়াতের মত

মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে প্রস্তুত হচ্ছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ

জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু